ভেক্টর (vector)

এই ভৌত জগতে যা কিছু পরিমাপ করা যায় তা হলো রাশি আর এই রাশিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-১. ভেক্টর বা দিক রাশি, ২. স্কেলার বা অদিক রাশি। যে সকল ভৌত রাশির মান ও দিক আছে তাদেরকে ভেক্টর বা দিক রাশি বলা হয় এবং যে সকল ভদ্র রাশির শুধুমাত্র মান রয়েছে কিন্তু কোন দিক নাই তাদেরকে স্কেলার বা অদিক রাশি বলা হয়।

সূচীপত্র: ভেক্টর

২য় অধ্যায়ঃ ভেক্টর 

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নঃ
০১. দিক রাশি বা ভেক্টর রাশি কাকে বলে?
০২. অদিক বা স্কেরার রাশি কাকে বলে?
০৩. বেগের সূত্র লেখ।
০৪. একক ভেক্টর কাকে বলে? কীভাবে একক ভেক্টর পাওয়া যায়?
০৫. ভেক্টর সামান্তরিকের সূত্রটি লেখ।
০৬. দুটি ভেক্টর রাশির লদ্ধির মান কখন সর্বনিম্ন হয়?
সংক্ষিপ্ত ও রচনামূলক প্রশ্নঃ
০৭. যদি A=Ax i+ Ay j + Az kএবং B =Bx i + By j + Bz k তবে দেখাও যে, A.B=AxBx+AyBy+AzBz
০৮. দেখাও যে, P = i + 2j + 3k এবং Q = 2i + 4j + 6k হলে ভেক্টর দুটি পরস্পর সমান্তরাল।
০৯. দেখাও যে, A = 2i + 4j + 7k এবং B = 3i - 5j + 2k হলে ভেক্টর দুটি পরস্পর সমকোণে অবস্থিত।
১০. দিক রাশি ও অদিক রাশি মধ্যে পাঁচটি পার্থক্য লেখ।
১১. ক্রস এবং ডট গুণন কী ব্যাখ্যা কর।
১২. ভেক্টর যোগের ত্রিভুজ সূত্রটি ব্যাখ্যা কর।
১৩. ভেক্টর যোগের সামান্তরিক সূত্রটি লেখ এবং লদ্ধির মান ও দিক প্রতিষ্ঠা কর।

২য় অধ্যায়ঃ ভেক্টর  এর প্রশ্নোত্তর

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তরঃ
০১. দিক রাশি বা ভেক্টর রাশি কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল ভৌত রাশিকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করতে তাদের মান ও দিক উভয়ই উল্লেখ করতে হয়, তাকে দিক রাশি বা ভেক্টর রাশি বলে।

০২. অদিক বা স্কেরার রাশি কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল ভৌত রাশিকে শুধু মান দ্বারা প্রকাশ করা যায়, কিন্তু দিক নির্দেশের কোনো প্রয়োজন হয় না, তাদেরকে অদিক বা স্কেরার রাশি বলে।

০৩. বেগের ত্রিভুজ সূত্র লেখ।
উত্তরঃ যদি কোনো ত্রিভুজের দুটি সন্নিহিত বাহু একই ক্রমে দিক রাশিকে নির্দেশ করে, তাহলে ত্রিভুজের তৃতীয় বাহুটি বিপরীতক্রমে দিক রাশিদ্বয়ের লদ্ধির মান ও দিক নির্দেশ করবে-একেই বেগের ত্রিভুজ সূত্র বলে।

০৪. একক ভেক্টর কাকে বলে? কীভাবে একক ভেক্টর পাওয়া যায়?
উত্তরঃ যে দিক রাশির মান এক, তাকে একক দিক রাশি বলে। অথবা, মান শূন্য নয় এরূপ একটি দিক রাশিকে এর মান দ্বারা ভাগ করলে যে রাশি পাওয়া যায়, তাকে একক দিক রাশি বলে। একে "â" দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন-  এর একক ভেক্টর হবে â = / [A]
যে ভেক্টরের একক ভেক্টর বের করতে হবে সে ভেক্টরকে সেই ভেক্টরের মান দ্বারা ভাগ করলে ঐ ভেক্টরের একক ভেক্টর পাওয়া যায়।

০৫. ভেক্টর সামান্তরিকের সূত্রটি লেখ।
উত্তরঃকোনো সামন্তরিকের একই কৌনিক বিন্দু হতে অঙ্কিত সন্নিহিত বাহু দুটি যদি কোনো কণার উপর একই সময়ে ক্রিয়ারত দুটি দিক রাশির মান ও দিক নির্দেশ করে, তাহলে ঐ বিন্দু হতে অঙ্কিত সামন্তরিকের কর্ণই এদের লব্ধির মান ও দিক নির্দেশ করে।

০৬. দুটি ভেক্টর রাশির লদ্ধির মান কখন সর্বনিম্ন হয়?
উত্তরঃভেক্টর রাশি দুটি যখন বিপরীত দিকে ক্রিয়া করে; অর্থাৎ θ = 180° হয়, তখন লব্ধির মান সর্বনিম্ন হয়।

সংক্ষিপ্ত ও রচনামূলক প্রশ্নউত্তরঃ
০৭যদি Ᾱ=Axi^+ AyĴ + AzK^ এবং B =Bxi^ + ByĴ+BzK^ তবে দেখাও যে, A.B=AxBx+AyBy+AzBz
উত্তরঃ (i) A . B = ( Axi^+ AyĴ + AzK)  . ( Bxi^ + ByĴ + BzK)

              =  AxBX (i^. i^) + AXBY (i^ . Ĵ) + AxBZ (i^. K^) + AyB(Ĵ. i^)  + AyBy(Ĵ . Ĵ) + Ay BZ (Ĵ . K^) + AZBX (K^ . i^) +  AZBY (K^ . Ĵ) + AZBZ (K^ . K^)

              = AXBX .1 + AXBY .0 + AXBZ .0 + AYBX .0 + AYBy .1 + AyBz .0 + AzBx.0 + AzBy.0+AzBz.1

যেহেতু সমজাতীয় একক ভেক্টরের ডট গুণন 1 এবং ভিন্ন জাতীয়দের ডট গুণ্ন শূন্য তাই,

A . B = AxBx + AyBy + AzBz.. ( দেখানো হলো )

০৮দেখাও যে, P = i^+ 2Ĵ + 3k^ এবং Q = 2 i^ + 4 Ĵ + 6 k^ হলে ভেক্টর দুটি পরস্পর সমান্তরাল। 
উত্তরঃ দেয়া আছেP = i^ + 2Ĵ + 3k^

                                  Q = 2i^ + 4Ĵ + 6k^

যদি P × Q = 0 হয়তাহলে ভেক্টর রাশি দুটি পরস্পর সমান্তরাল হবে।

؞ P ×Q =   i^    Ĵ   k^

                       1    2   3

                       2    4   6

                   = i^(12 – 12) – Ĵ(6-6) + k^(4-4)

                   = 0

সুতরাং,   ভেক্টরদ্বয় পরস্পর সমান্তরাল  ( দেখানো হলো )


০৯.দেখাও যে, A = 2i^ + 4Ĵ + 7k^ এবং B = 3i^ - 5 Ĵ + 2k^ হলে ভেক্টর দুটি পরস্পর সমকোণে অবস্থিত।

উত্তরঃ  A .B = 0 হলে  B  পরস্পর লম্ব হবে।  îĴ  ΩJ√    

এখনA . B = (2i^ + 4Ĵ + 7k^)  . (3i^ - 5 Ĵ + 2k^)

                          = 2.3 +4.(-5)+7.2

                          = 6-20+14

                          = 0

সুতরাংA . পরস্পর সমকোণে অবস্থিত (দেখানো হলো )


১০. দিক রাশি ও অদিক রাশি মধ্যে পাঁচটি পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃ দিক রাশি ও অদিক রাশির পার্থক্য নিম্নে দেয়া হলোঃ

দিক (ভেক্টররাশি

অদিক (স্কেলাররাশি

১. যে সকল ভৌত রাশিকে সম্পূর্ণ রূপে প্রকাশ করার জন্য মান ও দিক উভয়ের প্রয়োজন, তাদেরকে দিক (ভেক্টর) রাশি বলে। যেমন- সরণ,  বেগ, ত্বরণ, বল ইত্যাদি।

১.  যে সকল ভোত রাশিকে শুধু মান দ্বারা সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করা যায়দিক নির্দেশের প্রয়োজন হয় নাতাদেরকে অদিক (স্কেলাররাশি বলে। যেমন-দৈর্ঘ্যশক্তিকাজ ইত্যাদি।

২. শুধু মান বা শুধু দিক বা মান ও দিক উভয়ই পরিবর্তন হলে ভেক্টর রাশির পরিবর্তন হয়।

২. শুধু মানের পরিবর্তন হলে স্কেলার রাশির পরিবর্তন হয়।

৩. দিক (ভেক্টর) রাশির যোগ, বিয়োগ, গুণ ইত্যাদি সাধারণ গাণিতিক নিয়মে হয় না। ভেক্টর বীজগণিতের নিয়মানুসারে হয়।

৩. অদিক (স্কেলার) রাশির যোগ, বিয়োগ, গুণ ইত্যাদি সাধারণ গাণিতিক নিয়মে হয়।



১১. ভেক্টর গুণন এবং ক্রস গুণন কী ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ভেক্টর গুণন বা ক্রস গুণন (Vector or cross Products) ঃ
দুটি ভেক্টর রাশির গুণফল যদি একটি ভেক্টর রাশি হয় তবে তাকে ভেক্টর গুণন বা ক্রস গুণন বলে। ভেক্টর বা ক্রস গুণফলের মান রাশি দুটির মান এবং তাদের মধ্যবর্তী কোণের sine-এর গুণফলের সমান। দুটি ভেক্টরের ক্রস গুণের ক্ষেত্রে তাদের মাঝে ক্রস (X) চিহ্ন দিতে হয় বলে এই গুণের নাম ক্রস গুণন। ভেক্টর বা ক্রস গুণফলের দিক হচ্ছে দুটি ভেক্টরের সমতলের উপর লম্বভাবে একটি ডানহাতি স্ক্র-কে প্রথম ভেক্টর হতে ক্ষুদ্রতম কোণে দ্বিতীয় ভেক্টরের দিকে ঘুরালে স্ক্রটি যেদিকে অগ্রসর হয়। P এবং Q দুটি ভেক্টর রাশি হলে এদের ভেক্টর বা ক্রস গুণক  P×Q , পড়ি  P ক্রস  Q। দুটি ভেক্টর রাশির ভেক্টর বা ক্রস গুণনের সময় মাঝখানে (X) ক্রস চিহ্ন দেওয়া হয়, যার ফলে ভেক্টর গুণনের অপর নাম ক্রস গুণন।
ব্যাখ্যাঃ মনে করি,  Pও Q দুটি ভেক্টর রাশি, এদের মধ্যবর্তী কোণ ἀ । ভেক্টর গুণনের সংজ্ঞানুসারে-
 P ×  Q= n^AB sinἀ ----------(i)
এবং  Q× P = n^BA sinἀ ----------(i)
এখানে, n^ একটি একক ভেক্টর, যা P  ×Q এবং Q ×P  এর দিক নির্দেশ করে।

১২. ভেক্টর যোগের ত্রিভুজ সূত্রটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ভেক্টর যোগের ত্রিভুজ সূত্র (Definition of laws of triangle of a vector) ঃ ''একটি ত্রিভুজের দুটি সন্নিহিত বাহু যদি একই ক্রমে দুটি ভেক্টরকে নির্দেশ করে, তাহলে ত্রিভুজটির তৃতীয় বাহু বিপরীতক্রমে উক্ত ভেক্টরদ্বয়ের লব্ধি নির্দেশ করে।''
ব্যাখ্যাঃ মনে করি, ABC একটি ত্রিভুজ। এর AB এবং BC বাহু যথাক্রমে P ও Q কে নির্দেশ করে।
সূত্রানুসারে, AC বাহু ভেক্টরদ্বয়ের লব্ধি R নির্দেশ করে। অর্থাৎ-
AC = AB + BC ........................... (1)
বা, R = P + Q ………………………………….(2)
সমীকরণ (1) নং হতে,
AB + BC = AC
AB + BC - AC = 0
ABBC + CA = 0
অতএব, ত্রিভুজের তিনটি বাহু যদি একই ক্রমে তিনটি ভেক্টরকে নির্দেশ করে, তাহলে ভেক্টরদ্বয়ের লব্ধি শূন্য হবে। এ সূত্রকে “ভেক্টরের যোগের সাধারণ নিয়ম “- ও বলা হয়।

১৩. ভেক্টর যোগের সামান্তরিক সূত্রটি লেখ এবং লদ্ধির মান ও দিক প্রতিষ্ঠা কর।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url