আমাদের চারপাশে অনেক বস্তু রয়েছে যার মধ্যে কিছু বস্তু স্থির এবং কিছু বস্তুগতিশীল। পদার্থবিজ্ঞানে যে শাখায় বস্তু স্থির এবং বস্তু গতিশীল নিয়ে আলোচনা করে তাকে বলবিদ্যা বলে। যখন কোন বস্তু সময়ের সাথে পারিপার্শ্বিকের নিজ অবস্থানে কোন পরিবর্তন করে না, তাহলে বস্তুটি স্থির এবং যদি বস্তুর অবস্থার পরিবর্তন ঘটে তাহলে বস্তুটি গতিশীল। আমরা এখানে গতির প্রকারভেদসহ গতিস সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও প্রশ্ন উত্তর দেখব ।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নঃ ০১. গতির সমীকরণ গুলো লেখ। ০২. তাৎক্ষণিক বেগ বলতে কী বুজায়? ০৩. ত্বরণ কাকে বলে? ০৪. মন্দন বলতে কী বুঝয়? ০৫. ত্বরণ একক ও মাত্রা সমীকরণ কী? ০৬. সমবেগ কাকে বলে? সংক্ষিপ্ত প্রশ্নঃ ০৭. প্রমান কর যে, v2 = u2 +2fs ( এখানে অক্ষরগুলো প্রচলিত অর্থ বহন করে)। ০৮. প্রমান কর যে, S = ut + ½ at2 ( এখানে অক্ষরগুলো প্রচলিত অর্থ বহন করে)। ০৯. বেগ ও ত্বরণের মধ্যে পার্থক্য লেখ। ১০. পড়ন্ত বস্তুর সূত্রগুলো লেখ ও ব্যাখ্যা কর। ১১. বেগ ও দ্রুতি বলতে কী বুঝ? রচনামূলক প্রশ্নঃ ১২. প্রমান কর যে, Sth= u + ½ f(2t-1)( এখানে অক্ষরগুলো প্রচলিত অর্থ বহন করে)। ১৩. গতি কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ বুজিয়ে দাও।
গতি ও গতির সমীকরণ অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তরঃ
০১. গতির সমীকরণ গুলো লেখ।
উত্তরঃ ১ম সূত্র ঃ v = u + ft; ২য়সূত্র : s = ut + ½ ft2; ৩য়সুত্রঃ v2 = u2 + 2fs ।
০২. তাৎক্ষণিক বেগ বলতে কী বুজায়?
উত্তরঃ কোনো বস্তু পরিবর্তনশীল এবং অসমবেগে চলতে থাকলে বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্ত গড়বেগের মান নিদির্ষ্ট থাকে না এক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট মুহূর্তে কণাটির বেগকে তাৎক্ষণিক বেগ বলে।
০৩. ত্বরণ কাকে বলে?
উত্তরঃ গতিশীল বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে ত্বরণ বলে। একে f দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
০৪. মন্দন বলতে কী বুঝয়?
উত্তরঃকোনো গতিশীল বস্তুর বেগ হ্রাসের হারকে মন্দন বলে। অর্থাৎ, মন্দন এক ধরনের ঋণাত্মক ত্বরণ।
০৫. ত্বরণ একক ও মাত্রা সমীকরণ কী?
উত্তরঃত্বরণের একক ms-2 এবং ,মাত্রা সমীকরণ [LT -2] ।
০৬. সমবেগ কাকে বলে?
উত্তরঃ গতিশীল বস্তুর সময়ের সাথে সরণের মানের পরিবর্তন না হলে তাকে সমবেগ বলে।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নউত্তরঃ
০৭. প্রমান কর যে, v2 = u2 + 2fs ( এখানে অক্ষরগুলো প্রচলিত অর্থ বহন করে)।
উত্তরঃ গতির ২য় সমীকরণ থেকে পাই,
V = u + ft
বা, v2 = (u + ft)2
বা, v2 = u2 + 2uft + f2t2 = u2 + 2f [ut + ½ ft2]
বা, v2 = u2 + 2fs [s=ut + ½ ft2]
০৮. প্রমানকরযে, S = ut + ½ at2 ( এখানেঅক্ষরগুলোপ্রচলিতঅর্থবহনকরে)।
উত্তরঃমনেকরি, কোনোবস্তু u আদিবেগনিয়ে f সুষমত্বরণে t সময়ে v শেষবেগপ্রাপ্তহয়।
তাহলেগড়বেগ, ᳒V = আদিবেগ + শেষবেগ / 2
᳒V = u + v / 2
t সময়েঅতিক্রমদূরত্ব,
s = ᳒V × t
s = (u+v/2) .t
s = (u+u+ft/2) t [؞ v=u+ft]
s = (2u+ft/2) t
s = (2u/2 + 1/2ft) t
؞s = (u + ½ ft) t
؞ s = ut + ½ft2 -----------------(i)
বিশেষক্ষেত্রঃযদিবস্তুরআদিবেগনাথাকেঅর্থাৎবস্তুটিস্থিরঅবস্থানথেকেযাত্রাশুরুকরেতবে u = 0.
উত্তরঃপ্রথম সূত্রঃ "স্থির অবস্থান এবং একই উচ্চতা থেকে পড়ন্ত বস্তু সমান সময়ে সমান দূরত্ব অতিক্রম করবে। "অর্থাৎ বিভিন্ন আকারের, ভরের ও আয়তনের বস্তুকে যদি এই উচ্চতা থেকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং এরা বিনা বাধায় পড়তে থাকে তবে তারা সবাই একই সময়ে মাটিতে পৌঁছাবে ।
দ্বিতীয় সূত্রঃ "স্থির অবস্থান থেকে বিনা বাধায় পড়ন্ত বস্তুর নিদির্ষ্ট সময়ে প্রাপ্ত বেগ ঐ সময়ের সমানুপাতিক।"
তৃতীয় সূত্রঃ “স্থির অবস্থান থেকে বিনা বাধায় পড়ন্ত বস্তু নিরদিষ্ট সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তা ঐ সময়ের বর্গের সমানুপাতিক।“
অর্থাৎ, h ∞ t2
১১. বেগ ও দ্রুতি বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ কোনো গতিশীল বস্তু কোনো নির্দিষ্ট দিকে একক সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তাকে বেগ বলে। কোনো বস্তুর সরণের হারকে বেগ বলে।
দ্রুতি (speed): একক সময়ে বস্তু যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তাকে দ্রুতি বলে। এটি স্কেলার রাশি।
অর্থাৎ, দ্রুতি = দূরত্ব/সময়
এককঃ MKS পদ্ধতিতে একক ms-1 ।
রচনামূলক প্রশ্নউত্তরঃ
১২. প্রমানকরযে, Sth= u + ½ f (2t-1) ( এখানেঅক্ষরগুলোপ্রচলিতঅর্থবহনকরে)।
উত্তরঃ sth t সেকেন্ডেঅতিক্রমদূরত্ব - (t -1) সেকেন্ডেঅতিক্রমদূরত্ব
= (ut + ½ft2) - {u (t-1) + ½f (t-1)2 }
= ut + ½ft2 - { ut – u + ½f (t2 – 2t + 1) }
sth = ut + ½ft2 - { ut – u + ½ft2 – ½f. 2t + ½f }
sth = ut +½ft2 – ut + u – ½ft2 + ft + -½f
sth = u + f (t – ½)
sth = u + ½f (2t – 1)
১৩. গতি কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ বুজিয়ে দাও।
উত্তরঃ গতি পাঁচ প্রকারের হতে পারে, যথা-
চলন গতি (Translatory motion)
ঘূর্ণন গতি (Rotatory motion)
চলন-ঘূর্ণন গতি (Trans – Rotatroy motion)
পর্যায় গতি (Periodic motion)
দোলন গতি (Vibratory motion).
1.চলন গতি (Translatory motion): গতিশীল অবস্থায় বস্তুর কণাসমূহ যদি সমান সময়ে সমান দূরত্ব অতিক্রম করে, তাহলে সে গতিকে চলন গতি বলে।
চলন গতি দু প্রকার, যথা-
(ক) সরল চলন গতি (Rectilinear motion)
(খ) বক্র চলন গতি (Curvilinear motion)
2.ঘূর্ণন গতি (Rotatory motion): গতিশীল অবস্থায় বস্তুর কণাসমূহ যদি কোনো বিন্দু বা অক্ষ থাকে তাদের দূরত্ব অপরিবর্তিত রেখে উক্ত বিন্দু বা অক্ষকে কেন্দ্র করে গোরে তাহলে সেই গতিকে ঘূর্ণন গতি বলে। যেমন- বৈদ্যুতিক পাখার গতি, ঘড়ির কাঁটার গতি, যাঁতার গতি ইত্যাদি।
3.চলন-ঘূর্ণন গতি (Trans – Rotatory motion): যদি কোনো বস্তু একই সময়ের চলন ও ঘূর্ণন গতিতে চলতে থাকে তাহলে, সেই গতিকে চলন-ঘূর্ণন গতি বলে। যেমন- গাড়ির চাকার গতি , পৃথিবীর গতি, লাটিমের গতি ইত্যাদি। এ গতিকে জটিল বা মিশ্র গতিও বলে।
4.পর্যাবৃত্ত গতি (Periodic motion) : যদি কোনো বস্তু একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর একই পথ অতিক্রম করে একই দিকে চলতে থাকে তাহলে এ গতিকে পর্যাবৃত্ত গতি বলে। এ নির্দিষ্ট সময়কে পর্যায়কাল বলে। ঘড়ির কাঁটার গতি একটি পর্যাবৃত্ত গতি।
5.দোলন গতি (Vibratory motion): যদি কোনো বস্তুর গতি একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর নিপতীত্মুখী হয় বা বস্তুটি এদিক-ওদিক দোল খায় তবে এ ধরনের গতিকে দোলন গতি বলে। যেমন-সরল দোলকের ববের গতি।
অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url