গাঁদা ফুলের উপকারিতা

আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো গাঁদা ফুলের উপকারিতা নিয়ে। গাঁদা ফুল আমরা সবাই চিনি, কিন্তু গাঁদা ফুলের উপকারিতা সম্পর্কে হয়তো জানি না। তাই আপনাদের সাথে আজকে আলোচনা করবো গাঁদা ফুলের উপকারিতা সম্পর্কে। আমরা জানি যে গাঁদা ফুল একটি শীতকালীন ফুল। কিন্তু বর্তমানে দেখা যায় গাঁদা ফুল প্রায় সব মৌসুমেই পাওয়া যাচ্ছে।

গাঁদা ফুলের উপকারিতা সম্পর্কে জানলে হয়তো অবাক হবেন যে, গাঁদা ফুলেরও এতো গুন আছে। গাঁদা ফুল যেমন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয় তেমনি এটির রুপচর্চার ক্ষেত্রেও অনেক উপকারিতা রয়েছে। গাঁদা ফুলের রস কোনো ক্ষত অংশে দিলে তা তারাতারি সেরে যায়। তো চলুন আর দেরি না করে গাঁদা ফুলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

সূচীপত্র :গাঁদা ফুলের উপকারিতা

গাঁদা ফুলের উপকারিতা

গাঁদা ফুলের অনেক উপকারিতা রয়েছে। গাঁদা ফুলের মনোমুগ্ধকর সুগন্ধের জন্য গাঁদা ফুল দিয়ে সুগন্ধি তৈরি করা হয়। গাঁদা ফুলে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফ্যাভনয়েড, যা মানবদেহের ক্যন্সার কোষ এর বৃদ্ধিকে বাঁধা প্রদান করে। গাঁদা ফুলে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং টিউমার থেকে রক্ষা করে আমাদের শরীরকে। শরীরের কোনো কাঁটা অংশে গাঁদা ফুলের পাতা বেটে লাগালে আরাম পাওয়া যায়। আবার গাঁদা ফুলের চা পান করলে মুখের ব্রন দূর হয়, ত্বক মসৃণ হয়, হাড়ের ক্ষয় রোধ হয়, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। গাঁদা ফুল নিস্তেজ ও কুচকে যাওয়া ত্বককে সতেজ করতে সাহায্য করে। গাঁদা ফুল বেটে নাড়িকেল তেলের সাথে মিশিয়ে ১০-১৫ দিন মাথায় দিলে চুলের খুশকি দূর হয় এবং চুল কালো হয়।

গাঁদা ফুলের চাষ

শীতকালীন ফুলের মধ্যে গাঁদা ফুল অন্যতম। গাঁদা ফুল বিবাহ, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, গৃহসজ্জা, বিজয় দিবস, স্বধীনতা দিবস, ও শহীদ দিবস সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গাঁদা ফুলের রস বিভিন্ন কাঁটা স্থানের জন্য অনেক উপকারি।

গাঁদা ফুলের জাত

আফ্রিকান ও ফরাসি, রাজগাঁদা, চাইনিজ জাতের গাঁদা ফুল আমাদের দেশে বেশি উৎপাদন বা চাষ হয়। রঙ ভেদে গাঁদা ফুল বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। যেমন- রক্ত গাঁদা, হলুদ গাঁদা, কমলা গাঁদা ইত্যাদি।

মাটি নির্বাচন

যেকোনো ফুল চাষের জন্য এটেল বা দোআঁশ মাটি বেশি উপযোগী। ফুল চাষের জন্য যে মাটি নির্বাচন করবেন তা অবশ্যই উঁচু হতে হবে, যেন পানি জমে না যায় এবং জমিতে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

মাটি তৈরিকরণ

মাটি নির্বাচনের পর মাটি তে ৩/৪ টা চাষ দিয়ে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। মাটি কে ঝুর ঝুরে করে নিতে হবে। শেষ চাষের আগে জমিতে গোবর সার দিলে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। মাটির নিচে অনেক কেঁচো থাকে যা গাছের শিকরকে কেটে নষ্ট করে। তাই কেঁচো নাশক কিটনাশক ব্যবহার করতে হবে। সব শেষে মই দিয়ে সকল মাটি কে সমান করে নিতে হবে।

চারা রোপণ

বাজারে গাঁদা ফুলের চারা খুব সহজেই পাওয়া যায়। চারা হাতে পাওয়ার পর পরই জমিতে শেষ চাষ দিতে হবে এবং বিকালে রোধ কমে আসলে চারা রোপণ করতে হবে। চারা রোপণ করার সময় রশি ধরে ধরে সারিবদ্ধভাবে চারা রোপণ করতে হবে। চারা রোপণ করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন সারি থেকে সারির দূরত্ব যেন ২ হাত হয় এবং চারা হতে চারার দূরত্ব যেন ৫/৬ ইঞ্চি হয়।

গাঁদা ফুলের পাতার উপকারিতা

গাঁদা ফুলের পাশাপাশি গাঁদা ফুলের পাতার উপকারিতাও রয়েছে। শরীরের কোনো জায়গা কেটে গেলে তা দ্রুত সারিয়ে তোলার জন্য গাঁদা ফুলের পাতা বেটে পাতার রস টুকু কাটা জায়গায় লাগিয়ে দিলে অনেকটা উপশম পাওয়া যায়।

ত্বকের যত্নে গাঁদা ফুল

গাঁদা ফুলের উপকারিতার মধ্যে এটি একটি। নিস্তেজ ত্বককে সতেজ করতে গাঁদা ফুল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গাঁদা ফুল দিয়ে বিভিন্ন ফেস প্যাক তৈরি করা যায়।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে গাঁদা ফুল

একটি ছোট জারে ৮০ এমএল আমান্ড তেল ও একটি গাঁদা নিয়ে এক টানা ১৫ দিনের মতো রেখে দিতে হবে। ১৫ দিন পর এর যে সুগন্ধি তৈরি হয় তা সারা রাত মুখের ত্বকে লাগিয়ে রেখে দিতে হবে। এবার সকালে উঠে তা স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলে দিতে হবে।

কালো দাগ দূর করতে গাঁদা ফুল

এক টেবিল চামচ গাঁদা ফুলের পাপরির পেস্ট, এক চা চামচ চালের গুড়া এবং হাফ চা চামচ লেবুর রস নিয়ে একসাথে সব গুলো উপকরণ মিশিয়ে একটি ফেস প্যাক তৈরি করতে হবে। ফেস প্যাকটি তৈরি হয়ে গেলে তা মুখের ত্বকে আলতো ভাবে লাগিয়ে নিতে হবে এবং শুকিয়ে গেলে তা আলতো ভাবে মাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলে দিতে হবে।

গাঁদা ফুলের ঔষুধি গুন

  1. গাঁদা ফুলে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফ্যাভনয়েড যা মানবদেহের ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে।
  2. গাঁদা ফুলে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে টিউমার হতে রক্ষা করে।
  3. শরীরের কোথাও কেটে গেলে গাঁদা ফুলের পাতা বেটে লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়।
  4. গাঁদা ফুল বেটে নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে মাথায় ১০//১৫ দিন লাগালে মাথার খুশকি দূর হয়।
  5. গাঁদা ফুলের চা নিয়মিত পান করলে মুখের ত্বকের ব্রণ দূর করে।

গাঁদা ফুলের উপকারিতা এর শেষ কথা

আজকের এই পোস্টে গাঁদা ফুলের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আজকের আলোচনা থেকে উপকৃত হয়েছেন। গাঁদা ফুলে রয়েছে অনেক ঔষুধি গুন যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে, আমাদের নিস্তেজ ত্বককে সতেজ করে তোলে, চুলের খুশকি দূর করতে সাহায্য করে, বিভিন্ন কাটা স্থান থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে, হাড়ের ক্ষয় রোধ করে ইত্যাদি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url