শিশুদের হার্টে ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি

 

বর্তমানে নবজাতক শিশুদের একটি সমস্যা খুব বেশি হয়ে থাকে। শিশুদের হার্টে ছিদ্র হওয়া এই সমস্যাটা প্রায় বেশিরভাগ শিশুরই দেখা যাচ্ছে। এটা একটা অনেক বড় ধরনের সমস্যা। জন্মগতভাবেই অনেক শিশুদের হার্টে ছিদ্র দেখা যায়। 
শিশুদের হার্টে ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি এসকল বিষয় নিয়ে আমাদের আজকের লেখা শিশুদের হার্টের ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি এই আর্টিকেলটি। শিশুদের হার্টে ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি এ সকল বিষয়ে নানা ধরনের তথ্য জানতে হলে ভিজিট করুন, আমাদের আজকের লেখা শিশুদের হার্টে ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি এই আর্টিকেল টি।

সূচিপত্রঃ শিশুদের হার্টে ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি

শিশুদের হার্টে ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি

প্রত্যেক মা,বাবা চান তাদের সন্তান যেন সুস্থভাবে জন্মগ্রহণ করে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই জন্ম নেওয়া শিশু অনেক ধরনের সমস্যা বা অসুস্থতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তেমনি একটি রোগ হল শিশুদের হার্টের ছিদ্র। এখন প্রায় ১০০০ জন সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্যে ৯ জন শিশুরই হার্টের ছিদ্র নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। এমন পরিস্থিতিতে জন্ম নেওয়া শিশুর পরিবারের লোকজন অনেকটাই হতাশার মধ্যে পড়ে যায়। শিশুর হাটে ছিদ্র এ সমস্যাটা ছোট কোনো সমস্যা নয়। 

এটা এক ধরনের ভয়াবহ সমস্যা। এ সমস্যা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায়, জানতে হলে ভিজিট করুন আমাদের আজকের লেখা শিশুদের হার্টে ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি এই আর্টিকেলটি। মানুষের হৃদপিন্ডে ছিদ্র থাকা মূলত একটি জন্মগত ত্রুটি। সাধারণত গর্ব অবস্থায় শিশুর হৃৎপিণ্ডের বিকাশ জনিত সমস্যার কারণে এই ছিদ্র দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের করা সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের প্রতি ১০০০ শিশুর মধ্যে ৮ থেকে ৯ জনের এই হৃদপিন্ডের ছিদ্রজনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন।

তবে প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি বলে ধারণা করেছেন বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের শিশু হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডাক্তার খলিফা মাহমুদ তারিক। যদি শুরুতেই সমস্যাটি ধরা পড়ে তাহলে দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে শিশুকে সম্পূর্ণ সুস্থ করা সম্ভব। তবে যদি দেরি হয়, জটিলতা তত বাড়ে। শিশুদের হার্টের চিকিৎসা কেমন হবে সেটা নির্ভর করে ছিদ্রটি হার্টের কোথায় আছে এবং ছিদ্রটি কত বড় সেটার উপর। তবে শিশুদের হার্টের ছিদ্র রয়েছে এমনটা বুঝতে পারার সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।যদি সেটা অপারেশন করতে হয় তবে দ্রুত অপারেশন করা উচিত।

শিশুদের জন্মগত হার্টের সমস্যা কেন হয়

মানুষের হৃদপিন্ডের চারটি প্রকোষ্ঠ থাকে ওপরের দুটি হল অলিন্দ বা এ্যাট্রিয়া ও নিচের দুটি নিলয় বা ভেন্ট্রিকল। উপরের দুটি এট্রিয়া ইন্টারএট্রায়াল সেপটাম নামক পর্দা দিয়ে আলাদা করা থাকে এবং নিচের দুটি ভেন্ট্রিকল আলাদা করে রাখে ইন্টারভেন্টরিকুলার সেপ্টাম নামে আরেকটি পর্দা দিয়ে।শিশুরা হার্টের বিভিন্ন অংশে ছিদ্র নিয়ে জন্মাতে পারে। অপরের প্রকোষ্টের পর্দায় কোন ছিদ্র থাকলে তাকে এন্ট্রিয়াল সেপটাল ডিফেক্ট বলা হয়। নিচের পর্দার কোন ছিদ্র থাকলে তাকে ভেনটিকুলার সেপ্টাল ডিপেন্ড বলে। 

এই ছিদ্রের কারণে হাট ও ফুসফুসের মধ্যে রক্ত চলাচল অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে। মানবদেহের ফুসফুস রক্তে অক্সিজেনের যোগান দেয় আর সেই অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সারা শরীরে পরিবহনের কাজ করে হৃৎপিণ্ড। শরীরের দূষিত রক্ত মহাসিরার মাধ্যমে প্রথমে হৃৎপিণ্ডের ডান অলিন্দে প্রবেশ করে। তারপর ডান নিলয়ে প্রবেশ করে। এই নিলয় থেকে দূষিত রক্ত ফুসফুস ধমনীর মাধ্যমে ফুসফুসে পৌঁছায়।ফুসফুস ওই দূষিত রক্তে অক্সিজেনের যোগান দেয়। এরপর ফুসফুস থেকে বিশুদ্ধ রক্ত হৃৎপিণ্ডের বাম অলিন্দে প্রবেশ করে এরপর বাম নিলয়ে যায়। 

হৃদপিন্ডের বাম নিলয়ে য়াসা এই অক্সিজেন সমৃদ্ধ বিশুদ্ধ রক্ত মহাধমনির মাধ্যমে সারা শরীরে প্রবাহিত হয়। হার্টের ছিদ্র থাকলে অর্থাৎ এ এসডি বা ভিএসডি থাকলে ফুসফুসের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত রক্ত চলাচল অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে। কারণ ছিদ্রটি রক্তের স্বাভাবিক গতিপথে বাধা দেয়। বাম অলিন্দ থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ বিশুদ্ধ রক্ত বাম নিলয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এ এস ডি এর কারণে কিছু বিশুদ্ধ রক্ত ডান অলিন্দে চলে যায়। 

এতে বিশুদ্ধ রক্ত দূষিত রক্তের সাথে মিশে যায় এবং ফুসফুসের দিকে প্রবাহিত রক্তের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। আবার ভিএসডি থাকলে বাম নিলয়ের কিছু বিশুদ্ধ রক্ত ছিদ্র দিয়ে ডান নিলয়ে প্রবেশ করে। এতে বিশুদ্ধ ও দূষিত রক্ত একসাথে মিশে যায়। এই রক্তই আবার ফুসফুসে ফিরিয়ে আনে ছিদ্র বড় হলে বা দীর্ঘদিন ধরে থাকলে হাট এবং ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে। এতে ফুসফুসের ধমনীতে রক্তচাপ বেড়ে যায়।

হৃৎপিণ্ডকে তখন রক্ত পাম্প করার জন্য আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।এতে হার্টের ভাল্ভের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে ভাল্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া ফুসফুসের ধমনীতে উচ্চ রক্তচাপ বা পালমোনারি হাইপারটেনশন দেখা দিতে পারে। যা স্থায়ীভাবে ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে। এতে ফুসফুস অক্সিজেন সরবরাহে ব্যর্থ হয়।যা শিশুকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে।

শিশুদের হার্টের সমস্যার লক্ষণ

প্রত্যেক রোগেরই কিছু না কিছু লক্ষণ থাকে। সেই লক্ষণগুলো থেকেই আমরা বুঝতে পারি বা রোগটা নির্ণয় করতে পারি। তেমনি শিশুদের হার্ট এর ছিদ্রর কিছু লক্ষণ রয়েছে। শিশুদের হার্টের ছিদ্র সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে হলে ভিজিট করুন, আমাদের আজকের লেখা শিশুদের হার্টে ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি এই আর্টিকেলটি টি। শিশু বড় হতে থাকলে তাদের ছোটাছুটি বাড়ে। এতে হাটের ওপর চাপ বাড়ে। তখন লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে। হার্টের ছিদ্র ছোট বড় হওয়ার উপর নির্ভর করে লক্ষণ গুলো কেমন হবে-

  • যদি ছিদ্র ছোট হয় তাহলে শিশু জোরে জোরে শ্বাস নেয় ঘন ঘন কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয় এবং শ্বাসনালীতে ইনফেকশন বা নিউমোনিয়া হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
  • তার সমবয়সী অন্য শিশুদের মতো পরিশ্রম করতে পারে না।সামান্য খেলাধুলা বা ছোটাছুটি করলে ক্লান্ত হয়ে পড়ে শরীর দুর্বল লাগে ক্লান্তিতে ঝিমিয়ে পড়ে।
  • অনিয়মিত হৃদ স্পন্দন বা এরিথমিয়া ছিদ্র দিয়ে রক্ত প্রবাহের কারণে হাট থেকে মারমার জাতীয় শব্দ বের হয়।বুক ধক ধক করতে থাকে অনেক সময় খালি চোখে বুকের মাংসপেশির লাফানো দেখা যায়।
  • সব সময় জ্বর বা অসুস্থতা থাকে।
  • খেতে পারেনা খোদা ক্ষুধামন্দা।
  • খাওয়ার সময় ক্লান্ত হয়ে যায় কান্নাকাটি করে বা অল্পতেই ঘামতে থাকে।
  • কান্নার সময় দম আটকে যাওয়া।
  • শারীরিক বৃদ্ধি দেরিতে হওয়া বয়সের সাথে ওজন না বাড়া।
  • কাজে বা পড়ালেখায় মনোযোগ থাকে না।
  • পা পায়ের পাতা ও পেট ফুলে যায়।
যদি ছিদ্র বড় হয় তাহলে ওপরের সমস্যার পাশাপাশি শিশু উচ্চ রক্তচাপে ভোগে। ফুসফুসে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহের অভাবে অক্সিজেন স্বল্পতায় অনেক সময় শিশুর ঠোঁট জিব্বা নীল হয়ে ওঠে। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে।

শিশুদের হার্টের সমস্যা চিকিৎসা খরচ

সাধারনত টেস্ট এক্স-রে, ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম, ইকোকার্ডিওগ্রাম, কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশন ইত্যাদি ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে এই ছিদ্র আছে কিনা তা সনাক্ত করা হয়। হাটের জন্মগত এসব ছিদ্রের চিকিৎসা নির্ভর করে ছিদ্রের আকার অবস্থানের ওপর।ছোট আকারের ছিদ্র কয়েক মাস পর নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। হার্টের এই ছিদ্র বড় নাকি ছোট সেটা নির্ভর করে রোগীর বয়সের ওপর। এ বিষয়ে ডঃ তারিক বলেন, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য চার থেকে পাঁচ মিলিমিটার ছিদ্র অনেক ছোট কিন্তু এই ছিদ্র শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক বড়।

হাটের ছিদ্রের কারণে যেহেতু দূষিত ও বিশুদ্ধ রক্ত মিশে যায়। ছিদ্র ছোট হলে কম রক্ত মিশ্রিত হয়। ছিদ্র বড় হলে বেশি রক্ত মিশ্রিত হয়। সেক্ষেত্রে ছোট ছিদ্রগুলো বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ প্রয়োগ করে ফুসফুসের বাড়তি রক্তের চাপ কমিয়ে রাখা হয়। তবে মাঝারি বা বড় আকারে ছিদ্র হলে জটিলতা প্রতিরোধ করার জন্য শিশুদের জীবনের প্রথম দিকে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।আবার রক্তনালীর ভালভের খুব কাছের ছিদ্র থাকলে অস্ত্রোপচার ছাড়া উপায় নেই। 

প্রথম কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসের মধ্যে করা হয় সবচেয়ে ভালো স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে অস্ত্র প্রচার সেরে নিলে। সার্জন সরাসরি বুকের দেয়ালে একটি ছেদ তৈরি করে অস্ত্র প্রচার করে থাকেন। এভাবে অস্ত্রোপচার করলে ছয় মাসের মধ্যে টিসুটি সম্পূর্ণ ছিদ্রটিকে ঢেকে দেয়। তবে ছিদ্র অনেক বড় হলে বা ছিদ্রটির জটিল জায়গায় হলে ওপেন হার্ট সার্জারি ছাড়া উপায় নেই। শিশুর জন্মের দুই মাস বয়সের পর থেকেই অস্ত্র প্রচার করা সম্ভব।

শিশুদের হার্টে ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি এটা নিয়ে শেষ কথা

পরিশেষে বলা যায় যেশিশুদের হার্টে ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি এটা নিয়ে আজকের লেখা আর্টিকেলে নানা ধরনের তথ্য শেয়ার করা হলো। এসব তথ্য জানতে হলে ভিজিট করুন, আমাদের আজকের লেখা শিশুদের হার্টে ছিদ্র কেন হয়-এর চিকিৎসা কি এই আর্টিকেলটি টি। শিশুদের হার্টে ছিদ্র এই রোগটি খুবই জটিল একটি রোগ। 

তাই যখনই শিশুর হার্টে ছিদ্র দেখা দেয় বা চিকিৎসার মাধ্যমে বোঝা যায় তখনই এর চিকিৎসা করা উচিত।চিকিৎসার মাধ্যমে হার্টের ছিদ্র ভালো হয়ে যায়। কাজেই দেরি না করে তাড়াতাড়ি এর চিকিৎসা করাই ভালো। এ ধরনের রোগকে অবহেলা করে ফেলে রাখা ঠিক নয়।এ রোগটি ধরা পড়ার সাথে সাথে সঠিকভাবে চিকিৎসা করা উচিত।যত সময় বাড়বে তত এই রোগটি বেড়ে যাবে এবং অবশেষে আক্রান্ত শিশুটি মৃত্যুর মুখে চলে যাবে। কাজেই শিশুকে সুস্থ সবল করতে হলে অবশ্যই এর চিকিৎসা করা উচিত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url