অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা

আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। অ্যালোভেরার নাম শুনেনি এমন মানুষ জন খুব কমই আছে। কম বেশি সবার বাসাতেই অ্যালোভেরার গাছ টবে বা মাটিতে লাগানো থাকে। অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে কারোই অজানা নয়। তবুও যারা অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি।

অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই রয়েছে। তবে অ্যালোভেরার উপকারিতা অনেক বেষি যা আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়লে বুঝতে পারবেন। তো চলুন আর দেরি না করে আপনাদের সাথে শেয়ার করি অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা। 

সূচিপত্র: অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা  

চুলের জন্য অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরা জেল চুল এবং ত্বকের জন্য অনেক উপকারি। অ্যালোভেরা জেল ঘরোয়া উপায়ে তৈরি করা অনেক সহজ তাই দোকানে না কিনে বাড়িতেই অ্যালোভেরা জেল তৈরি করা ভালো। বাংলায় অ্যালোভেরা কে ঘৃতকুমারী বলা হয়। চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে  এবং চুল পড়া বন্ধ করার জন্য অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে হয়। চুল কে ঝলমলে দেখাতে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরার সাথে বিভিন্ন উপাদান মিশিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করা হয়। চলুন কয়েকটা হেয়ার প্যাক তৈরি শিখে নিই। 

অ্যালোভেরা জেল, মধু ও নারিকেল তেল

রুক্ষ চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে অ্যালোভেরা জেল, মধু  এবং  নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। শুষ্ক চুলের আদ্রতা ফেরাতে এই উপাদান গুলো অনেক কার্যকারী।

২ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল, ১ চা চামচ মধু এবং ২ চা চামচ নারিকেল তেল দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিতে হবে। গোসলের ৩০ মিনিট আগে চুলে এই প্যাকটি লাগিয়ে নিন । ৩০ মিনিট পরে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিন। তারপর চুল শুকানোর পর দেখবেন চুলের আগের থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে। 

অ্যালোভেরা ও লেবু 

অ্যালোভেরা জেল এবং লেবুর রস এবং আমলার রস দিয়ে একটি জেল তৈরি করতে পারেন । এটি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।  

ডিম এবং অ্যালোভেরা 

২ চা চামচ অ্যালোভেরা এবং একটি ডিমের কুসুম এবং সাথে অলিভ অয়েল ১ চা চামচ দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।  এবার এই মিশ্রণটিকে চুলে লাগান । এবার ৩০ মিনিট পরে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এতে করে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাড়বে। 

অ্যালোভেরার উপকারিতা

অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই আছে। অ্যালোভেরার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। অ্যালোভেরা যেমন চুলের, ত্বকের যত্নে উপকারিতা দেয়, তেমনি এটি বিভিন্ন ঔষুধি হিসেবে কাজে ব্যবহৃত হয়। অ্যালোভেরা চুলের শুষ্কতা দূর করে, চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, চুলকে ঝলমলে করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের কালো দাগ, ময়লা, বয়সের ছাপ, ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরার ঔষুধি গুণ রয়েছে অনেক। সেই গুলো হলো- অ্যালোভেরা দেহের জন্য ক্ষতিকারক পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে, চাপ ও রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে, খাবার হজম করতে সহায়তা করে ইত্যাদি। আসলে অ্যালোভেরার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না।  

অ্যালোভেরার অপকারিতা

চিকিৎসকদের মতে অ্যালোভেরা নিরাপদ যখন এটি ঔষুধ বা জেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু যখন প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালোভেরার ভেতরের রসালো অংশ বের করা হয় তখন অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে অ্যালো-লেটেক্স বের হতে পারে, যা শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। এই পদার্থটি অ্যালোভেরার পাতার মধ্যেই থাকে এবং এর রঙ হলদে। এই হলদে রস টা খেলে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়। 

এই অ্যালো-ল্যাটেক্সের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এর ফলে ডায়রিয়া, কিডনির সমস্যা, পেশী দুর্বলতা, কম পটাশিয়াম, ওজন হ্রাস এবং হৃদয় ব্যঘাত ক্লেইন ল্যাটেক্সের উচ্চমাত্রা এমনকি কিডনির সমস্যাও হতে পারে। অ্যালো ল্যাটেক্সের ব্যবহারের ফলে গর্ভের সন্তানও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অ্যালো ল্যাটেক্স কোনো ভাবে কোনো বাচ্চা খেয়ে ফেললে বাচ্চার পেট ব্যথা বা ডায়রিয়া হতে পারে। 

ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা 

অ্যালোভেরাতে রয়েছে ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারি। অ্যালোভেরা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং মুখের বিভিন্ন দাগ কমাতে সাহায্য করে। মুখের রুক্ষতা ভাব ও শুষ্কতা ভাব দূর করে। অ্যালোভেরা জেল এবং বরফ টুকরো একসাথে নিয়ে ত্বকে মাসাজ করলে মুখের জ্বালাপোড়া ভাব কমে যায় অনেক সহজেই।

যেকোনো মৌসুমে ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ত্বকের জন্য ন্যাচারাল ময়শ্চরাইজ হিসেবে অ্যালোভেরা ব্যবহৃত হয়। অ্যালোভেরা জেল গরম কালে ত্বককে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। 

অ্যালোভেরা খাওয়ার উপকারিতা

অ্যালোভেরার উপকারিতা রয়েছে অনেক। অ্যালোভেরা খেয়ে আমাদের বিভিন্ন রোগ নিরাময় করা যায়। হয়তো অনেকেই জানি অ্যালোভেরার রস খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। অ্যালোভেরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি যা আমাদের শরীরকে তাজা রাখতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরাতে রয়েছে  ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট । অ্যালোভেরা বিভিন্ন ধরণের ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে এবং হজম শক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে।  

হজম শক্তিকে উন্নত করে এই অ্যালোভেরা। আপনার জদি কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা থাকে তবে অ্যালোভেরার শরবতটি আপনার জন্য। অ্যালোভেরাতে রয়েছে এনজাইম যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে।

অ্যালোভেরায় রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে পানি। সকাল বেলা খালি পেটে অ্যালোভেরার শরবত খেলে শরীর হাইড্রেট হয় সেই সাথে শরীরের টক্সিন  গুলাও বের হয়ে যায়। অ্যালোভেরা শরীর পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে। 

অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা এর শেষ কথা 

অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। এটি একটি অনেক উপকারি উপাদান যা আমাদের চুল , শরীর এবং ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা হয়। এমনকি অ্যালোভেরার শরবত খেয়ে অনেকেই অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাচ্ছে। এটি একটি ঔষুধী হিসেবেও কাজ করে। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকলে আপনার পরিচিত দের সাথে শেয়ার করে তাদেরও জানার সুযোগ তৈরি করে দেন, ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url