তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

তুলসি পাতা সম্বন্ধে প্রায় সবাই আমরা জানি আবার অনেকেই জানি না। তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক রয়েছে যা আমাদের অজানা। তুলসি পাতা আমাদের সর্দি -কাশি দূর করতে অনেক উপকারি একটা পাতা। তুলসি পাতা ছোট বড় সকলের সর্দি - কাশি দূর করতে সাহায্য করে। তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত কারণ তুলসি পাতা একটি ঔষুধী ।

তুলসি পাতা মানসিক চাপমুক্ত করতে সাহায্য করে। তাই আমাদের তুলসি পাতা সম্পর্কে জানতে হবে। আজকের আর্টিকেলটি তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়লে আশা করি তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন । তো চলুন জেনে নেওয়া যাক তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। 

সূচিপত্র: তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

তুলসি পাতার বিভিন্ন গুণাগুণ 

তুলসি পাতার গুণাগুণ রয়াছে অনেক যা বলে হয়তো শেষ করা যাবে না। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, প্রতিদিন একটি করে তুলসি পাতা চিবিয়ে খেলে শরীর সুস্থ্য থাকে। শিশু থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের মানুষের সর্দি- কাশি দূর করতে এটি একটি মহাঔষধ হিসেবে কাজ করে। অনেক দেশে তুলসি পাতা মানসিক চাপমুক্ত করার মহাঔষধ নামে পরিচিত।

তুলসি তে রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি- ইনফ্লেমটরি ও বিভন্ন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এই উপাদান গুলা নার্ভ কে শান্ত করে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তুলসি পাতায় রয়েছে অসাধারন রোগ প্রতিরোধ করার সমস্যা। যেমন - ফুসফুসের সমস্যা, অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি রোগ দূর করতে তুলসি পাতা ভিষণ ভাবে সহায়তা করে। তুলসি পাতা ক্যান্সার রোগ দূর করতেও সাহায্য করে। 

তুলসি পাতায় রয়েছে রেডিওপ্রটেক্টিভ উপাদান, যা আমাদের দেহের টিওমারের কোষ গুলো ধ্বংশ করতে সাহায্য করে। তুলসি পাতায় থাকা ফাইটোকেমিক্যাল, যেমন- মাইরেটিনাল, লিউটিউলিন, রোসমারিনিক এবং এপিজেনিন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে অর্থাৎ ক্যান্সার নিরাময় করতে অনেক কার্যকারী। 

তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতা

দৈনিক তুলসি পাতা খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। তুলসি পাতার গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। এই পাতা ছোট বড় সকলের জন্য উপকারি। বিশেষজ্ঞদের মতে সুস্থ্য থাকতে প্রতিদিন ১/২ টা তুলসি পাতা খাওয়া উচিত। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক লোকদের সর্দি- কাশি  এর জন্য তুলসি পাতা মহাঔষুধী। 

ছোট বাচ্চার কাশি হলে হাফ চা চামচ মধুর সাথে তুলসির পাতার রস মিশিয়ে খাওয়ালে বাচ্চার কাশি কমে যায়। বুকে কফ বসে গেলে তুলসি পাতার রস, আদা, চা পাতা এক গ্লাস পানি দিয়ে ভালো ভাবে ফুটিয়ে তাতে লেবু ও মধু মিশিয়ে পান করলে অনেক আরাম পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন দেশে তুলসি পাতা কে মানসিক চাপ মুক্ত করার মহা ঔষুধী ধরা হয়। মাথা ব্যথা কমাতে তুলসি পাতার চা অনেক কার্যকারী। 

তুলসি পাতা খাওয়ার নিয়মাবলি

তুলসি পাতায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিবায়টিক গুনাগুণ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তুলসি পাতা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে হয় , ফলে বেশি কাজ করে। আপনি যদি প্রতিদিন তুলসি পাতা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন তবে আপনি অনেক উপকারিতা পাবে। তুলসি পাতা সর্দি- কাশি ছাড়াও অনেক রোগ প্রতিরোধ করে। যেমন- মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, এটি হজমের সমস্যা সমাধানেও অনেক কার্যকারি।  

তুলসি পাতা কি কি কাজে ব্যবহৃত হয়

তুলসি পাতা ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রে। তুলসি পাতা ছোট বড় সবার ক্ষেত্রেই অনেক প্রয়োজনীয়। তুলসি পাতা সর্দি-কাশি হলে শিশু কিংবা বয়স্ক সবার ক্ষেত্রেই কার্যকারী। তুলসি পাতা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।  তুলসি পাতা ক্যান্সার দূর করতে সহায়তা করে। তুলসি পাতায় থাকা অ্যান্টি- ইনফ্লেমটরি  চোখের চুলকানি, অঞ্জনি সমস্যা সমাধান করতে সহায়তা করে। দৃষ্টি শক্তি বাড়ায় তুলসি পাতা এবং চোখের ছানি দূর করতেও তুলসি পাতার ব্যবহার হয়। 

তুলসি পাতার অপকারিতা

যে কোনো জিনিসের উপকারিতা থাকলে অপকারিতা থাকবে। তুলসি পাতার ক্ষেত্রেও ভিন্ন নয়। তুলসি পাতা প্রয়োজন অনুযায়ী খেলে যেমন অনেক রোগ নিরাময় হয়। আবার প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেলে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। যেমন অতিরিক্ত মাত্রায় তুলসি পাতা খেলে শরীরের রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায় ফলে রক্ততের প্রয়োজনীয় জমাট বাধতে বাধা গ্রস্ত হয় । এই কারণে দেখা দিতে পারে প্রচুর পরিমাণে রক্তপাতের সমস্যা । যে কোনো ধরনের সার্জারি করার ২ সপ্তাহ আগে থেকে তুলসি পাতা খাওয়া বন্ধ করতে হবে, নয়তো সমস্যায় পরতে পারেন। 

কাশি নিরাময়ে তুলসি পাতার উপকার

ছোট থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের মানুষের ঠান্ডা, সর্দি- কাশি নিরাময় করতে সাহায্য করে এই তুলসি পাতা। বাচ্চার সর্দি- কাশির সমস্যা হলে হাফ চা চামচ মধুর সাথে তুলির রস মিশিয়ে খাওয়ালে সর্দি কাশি কমে যায়। বুকে কফ জমে গেলে সকাল বেলা তুলসি পাতা, আদা, চা পাতা ভালো করে ফুটিয়ে তাতে মধু মিশিয়ে খেলে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়। 

গর্ভবতী মহিলা কি তুলসি পাতা খেতে পারবে 

গর্ভবতী মহিলা দের তুলসি পাতা না খাওয়ায় ভালো। তুলসি পাতায় রয়েছে ইউজেনল নামক একটি উপাদান যা খেলে গর্ভবতী মায়ের পিরিয়োড দেখা দিতে পারে। যার ফলে গর্ভবতী মায়ের ডায়রিয়ার সমস্যাও হতে পারে। 

তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এর শেষ কথা

তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই আছে। তুলসি পাতা খেলে সর্দি-কাশি, ঠান্ডা ইত্যাদি ভালো হয়ে যায়। আবার তুলসি পাতা অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। প্রতিদিন একটি করে তুলসি পাতা খেলেই শরীর সুস্থ্য থাকবে। তাই অতিরিক্ত মাত্রায় না খেয়ে অল্প করেই খাওয়া উচিত। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আমাদের এই আর্টিকেলটি জেনে উপকৃত হলে বন্ধু- বান্ধব এবং পরিবারের সবাইকে শেয়ার করে তাদের জানার সুযোগ করে দিন , ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url