প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়
প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় আজকের লেখা আর্টিকেলে প্যারালাইসিস নিয়ে নানা ধরনের তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব। প্যারালাইসিস খুবই ভয়াবহ একটি রোগ। প্যারালাইসিস রোগ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে হলে আজকের লেখা প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এই আর্টিকেলটি পড়ুন।
প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়, কি করলে প্যারালাইসিস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এ সকল যাবতীয় তথ্য তুলে ধরবো আজকের লেখা প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এই আর্টিকেলে।
সূচিপত্রঃপ্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়
প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়
প্যারালাইসিস রোগ কেন হয় জানতে হলে আজকের লেখা প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এই আর্টিকেলটি পড়ুন। প্যারালাইসিস এর কারণ হলো মস্তিষ্কের স্ট্রোক।মস্তিষ্কের রক্তনালীর মধ্যকার রক্ত চলাচলে ব্যাঘাতের কারণে এ রোগ হয়। হঠাৎ করে মস্তিষ্কের কোন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে, একদিকের অঙ্গ গুলো কাজ করা বন্ধ করে দেয়।একেই বলে প্যারালাইসিস বা পক্ষঘাত।
প্যারালাইসিস একপ্রকার দৈহিক বিকাশ যাতে মাংসপেশী স্বাভাবিক কাজ করার বদলে দুর্বল বা শিথিল হয়ে থাকে। এতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অচল হয়ে পঙ্গুত্ব হতে পারে। একটি দুটি পেশিতে হতে পারে এক বা একাধিক অঙ্গে হতে পারে বা পুরো শরীরে হতে পারে। অনেক সময় অনুভূতির অভাব হতে পারে কিন্তু সব সময় নয়। প্যারালাইসিস স্বল্প স্থায়ী হতে পারে অথবা দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। প্যারালাইসিস অন্য রোগের উপসর্গ অথবা একাই একটি ভয়াবহ রোগ হিসেবে হতে পারে।
আবার প্যারালাইসিস খুব মৃদু এবং স্বল্প মেয়াদী হতে পারে। যা আমরা প্রায় টেরও না পেতে পারি। ৫০ জনের মধ্যে একজনের প্যারালাইসিস আছে কোন পেশি বা শরীরের কোন অংশ প্যারালাইসগ্রস্ত হয়েছে। পেশী কতটা দুর্বল হয়েছে এবং কতটা বা নানান অঙ্গ অংশ সময়ের সঙ্গে কি ক্রমান্বয়ে প্যারালাইসিস গ্রস্ত হয়েছে বা হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে। প্যারালাইসিসে নানা প্রকারের দেখা দিতে পারে।
প্যারালাইসিস অনেক প্রকারের হয়ে থাকে, মনোপলেজিয়া হলো- এক ধরনের সাধারণ প্যারালাইসিস যা শুধুমাত্র একটি অঙ্গকে প্রভাবিত করে। ডিপ্লেজিয়া উভয় দিকের একই অঞ্চলকে প্রভাবিত করে। যেমন উভয় বাহু উভয় পা বা আপনার মুখের উভয় পাশে। হেমিপ্লেজিয়া আপনার শরীরের শুধুমাত্র একদিকে প্রভাবিত করে এবং সাধারণত একটি স্ট্রোক দ্বারা সৃষ্ট হয় যা আপনার মস্তিষ্কের একদিকে ক্ষতি করে।
প্যারালাইসিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি
প্যারালাইসিস রোগটা স্ট্রোক থেকে হয়ে থাকে। আর স্ট্রোক মূলত আমাদের অতিরিক্ত টেনশন বা চিন্তা করার কারণে হয়ে থাকে। বলা যায় যে দুশ্চিন্তা থেকেই স্ট্রোক রোগটা হয়ে থাকে। স্ট্রোক রোগ টা হঠাৎ করেই হয়ে থাকে। তাই এমন কোন দুশ্চিন্তা আমরা করবো না যাতে আমাদের স্ট্রোক হয়ে যায়। প্যারালাইসিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি এ বিষয়ে জানতে হলে আজকের লেখা প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুুন।মূল উপসর্গ হলো শরীরের কিছু অঙ্গ বা শরীরের সমস্ত অঙ্গ নড়াচড়া করার অক্ষমতা।হয়তো আস্তে আস্তে বা হঠাৎ করে হয় উপসর্গগুলো হয়তো মাঝে মাঝে দেখা দিতে পারে। মুখ্যভাবে আক্রান্ত অঙ্গ গুলি হল-
- মুখের অংশ
- পায়ের উপরের দিক
- একটা পায়ের উপরের বা নিচের দিক
- শরীরের একটা দিক
- দুটো পায়েরই নিচের দিক
- চার হাত-পা
শরীরের সমস্ত আক্রান্ত অঙ্গ কঠিন অথবা আলগা বোধ হতে পারে। সেখানে সংবেদনের অভাব দেখা দিতে পারে বা কখনো কখনো সেগুলি বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে। কোন মানুষ যদি হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যায় এবং ওপরে উল্লেখিত লক্ষণগুলো যদি তার শরীরের ভিতরে দেখা যায়। তাহলে ধরে নিবেন তিনি স্ট্রোক করেছেন এবং স্টোকের কারণে প্যারালাইসিস হয়ে গেছে। এগুলো লক্ষণ কোন রোগীর ভেতরে দেখতে পাইলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তা না হলে বড় আকার ধারণ করতে পারে। এ সমস্ত রোগের প্রতি কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়। সঠিকভাবে চিকিৎসা করলে প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়
প্যারালাইসিস একটি ভয়াবহ রোগ। কোন রোগীই আমাদের শরীরের জন্য কখনো ভালো হয় না। প্যারালাইসিস এমন একটি রোগ এ রোগের কারণে আমাদের শরীরের যে কোন একটি অঙ্গ অচল হয়ে যায়। প্যারালাইসিস প্রাথমিকভাবে উপসর্গ দেখে নির্ণয় করা হয়। শারীরিক পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে ডাক্তার কি ধরনের প্যারালাইসিস হয়েছে তার নির্ণয় করেন।
ইমেজিং পদ্ধতি যেমন এম.আর.আই এবং সিটি স্ক্যান হয়তো করানো হবে। মস্তিষ্কের এবং মেরুদন্ডের বিশদ চিত্র পাওয়ার জন্য এবং স্নায়ুর অবস্থা পরীক্ষা করে দেখা হয়।কোন নির্দিষ্ট ওষুধ দেওয়া হয় না।প্যারালাইসিসের চিকিৎসা সাধারণত নির্ভর করে অন্তর্নিহিত কারণ এর ওপর। ওষুধের ব্যবহার ছাড়া যে সকল পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় সেগুলো হলো-
- ফিজিওথেরাপি যাতে বেশি জোর বাড়ে এবং পেশীর ভর বাড়ে
- চলাচল করার জন্য সাহায্য হুইল চেয়ার এবং ব্রেসেস সাহায্য করে
রোগীকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে কাজের মাধ্যমে থেরাপি দৈনন্দিন কাজ গুলির দ্বারা সাহায্য প্যারালাইসিস এমন একটা অবস্থা যা জীবনের মান কমিয়ে দেয় এবং সে ব্যক্তির আত্মমর্যাদা ও আঘাতপ্রাপ্ত হয়।তাই এর জন্য চাই যথাযথ সমর্থন এবং যত্ন।
প্যারালাইসিস রোগীর খাবারের তালিকা
প্রত্যেক রোগেরই খাবারের কিছু বিধি-নিষেধ থেকে থাকে তেমনি প্যারালাইসিস রোগীর খাবারের কিছু নির্দিষ্ট তালিকা রয়েছে। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো রোগী খেতে পারবে। আবার কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো রোগী খেতে পারবে না বা যে খাবারগুলো খাওয়া যাবেনা। সে খাবারগুলো খেলে হয়তো রোগীর কোন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই প্যারালাইসিস রোগীর খাবারের তালিকা বা যে কোন রোগেরই খাবারের নিয়মটা মেনে চলতে হয়।
খাবারের মাধ্যমেই অনেক সময় রোগীর অনেক খারাপ অবস্থা হয়ে যায়। আজকের লেখা প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব প্যারালাইসিস রোগের খাবারের তালিকা কেমন হওয়া উচিত। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যা আমরা পেতে পারি রঙিন শাকসবজি ফলমূল থেকে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্ক কোষকে সুস্থ রাখতে।
এছাড়া সার্বিকভাবে স্ট্রোকের রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য হচ্ছে বাদাম, সামুদ্রিক মাছ, হলুদ, ডিম, আঙ্গুর ও আঙ্গুর জাতীয় ফল,গ্রিন টি,মাছ,মাংস ইত্যাদি। ফল ও সবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যার রক্তনালিকে ক্ষয় হ্রাস করতে সাহায্য করে। এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণায় দেখা গেছে বেশি পরিমাণ পটাশিয়াম গ্রহণ করে স্ট্রোকের ঝুঁকি ২৪ শতাংশ কমানো সম্ভব।পটাশিয়ামযুক্ত খাবার হলো কলা, ডাবের পানি, আমড়া, আমলকি, বড়ই, লেবু, কমলালেবু, আম, জাম, আলুর, টমেটো, গাজর, ফুলকপি প্রভৃতি।
এছাড়া যে সকল খাবার এড়িয়ে চলবেন লবণ ও লবণাক্ত খাবার। অত্যাধিক লবণ রক্তচাপ বাড়ি স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এজন্য ব্রেকিং পাউডার, বোতলজাত খাবার, কোমল প্রাণীয়, ড্রিঙ্কস বর্জন করা উচিত। অতিরিক্ত চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার রক্তনালির ক্ষতি করতে পারে। যা স্ট্রোকের ঝুঁকির কারণ।আর মূলত প্যারালাইসিস রোগটি স্ট্রোকের কারণেই হয়ে থাকে। তাই এ সকল খাবার গ্রহণ না করাই ভালো । গবেষণায় দেখা গেছে যে লাল মাংস প্রতিদিন লাল মাংস খেলে .৪২ শতাংশ লোকের ঝুঁকি বাড়ায়। অ্যালকোহল ও ধূমপান রক্তকে ঘন করে তুলে এবং ধমনীতেও ব্ল্যাক তৈরির পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক হওয়ার ঝুকি বাড়িয়ে দেয়।
প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এর শেষ কথা
প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় আজকের এই আর্টিকেলের পরিশেষে বলা যায় যে, প্যারালাইসিস একটি ভয়াবহ রোগ। প্যারালাইসিস হলে আমাদের শরীরের যে কোন একটি অঙ্গ অচল হয়ে যায়। প্যারালাইসিস এমন একটা অবস্থা যা মানুষের জীবনের মান কমিয়ে দেয় এবং সে ব্যক্তির আত্মমর্যাদা ও আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তাই প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই খুব যত্নের সাহায্যে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে।
প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে এবং ডাক্তারের দেওয়া নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। কোন রোগকে কখনো অবহেলা করতে নেই। অবহেলা করলে সেই রোগটি একসময় ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে এবং কোন কোন সময় মৃত্যুর কারণে হতে পারে। তাই যেকোনো রোগ শুরুতেই চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়া তোলা উচিত। প্যারালাইসিস রোগটি মূলত স্ট্রোক থেকে হয়ে থাকে। কাজেই স্ট্রোক হয় এমন কোন কাজ বা এমন কোন নিয়ম মানা যাবে না।
যে নিয়মগুলো মানলে স্ট্রোকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।সেগুলো পালন করতে হবে।প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এই আর্টিকেলের মাধ্যমে প্যারালাইসিস সম্পর্কে অনেক ধরনের তথ্য তুলে ধরা হলো। এ সকল তথ্য সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হলে আমাদের আজকের লেখা প্যারালাইসিস রোগ কেন হয়-প্যারালাইসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে ভিজিট করতে হবে।
অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url