ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
ড্রাগন ফল আমাদের রক্ত শূন্যতা থেকে মুক্তি দেয়। ড্রাগন ফলটি ফাইবার সমৃদ্ধ। এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী । এর উপকারীতার শেষ নেই। ড্রাগন ফলের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। ড্রাগন ফলের উপকারিতার শেষ নেই। তো চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো ।
সূচিপত্র :ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
- ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
- ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়মাবলি
- রক্ত বৃদ্ধিতে ড্রাগন ফল
- ড্রাগন ফলের পুষ্টি
- সাদা ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
- লাল ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
- ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
- ড্রাগন ফলের অপকারিতা
- ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এর শেষ কথা
ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
ড্রাগন ফলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ড্রাগন ফল আমাদের দেশের সব জায়গা তেই চাষ হচ্ছে। ড্রাগন ফলে রয়েছে নানা রকম ভিটামিন যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি। ড্রাগন ফলের বিশেষ গুন রয়েছে। ড্রাগন ফল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি পুষ্টি গুনে ভরপুর। ড্রগন ফল খাওয়ার উওকারিতা গুলো হলোঃ
- এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহের সুস্থ্যতার জন্য অপরিহার্য।
- ড্রাগন ফল ফ্যাট ফ্রি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ।তাই এই ফল ডায়েট এর ক্ষেত্রেও রাখা যায়।
- এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- শরীরের জন্য ক্ষতিকর এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে ড্রাগন ফল।
- রক্ত শূন্যতা থেকে বাচার জন্য এই ফল খাওয়া অত্যন্ত প্রয়জনীয়। কারণ রঙিন ড্রাগন ফল আয়রন তৈরির উৎস ।
- ড্রাগন ফল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- ড্রাগন ফল রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
- রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে । ফলে ডায়াবেটিকসের ঝুঁকি কমে।
- ড্রাগন ফল নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে এবং ছানি পরার ঝুঁকি কমে।
- এই ফলটি হার্টের জন্যও অনেক উপকারী।
ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়মাবলি
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে ড্রাগন ফল খাওয়া উচিত। ড্রাগন ফল খাওয়ার বিশেষ কোনো নিয়ম নেই। তবে ড্রাগন ফল পেকে গেলে সেই ড্রাগন ফলটি খেতে অনেক সুস্বাদু হয়। ড্রাগন ফল ঠান্ডা হলে খেতে বেশ ভালো লাগে অর্থাৎ খাওয়ার আগে কয়েক ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে তারপর খেলে বেশ মজা পাওয়া যায়। এটি আপনার পছন্দ মতো শেপে কেটে নিতে পারেন। যেমন- কিউব আকারে কেটে নিতে পারেন অথবা কামর দিয়ে খেতে পারেন। এই ফল দিয়ে অনেক রেসিপিও তৈরি করা যায়। এটির খোসা খাওয়া যায় না।
রক্ত বৃদ্ধিতে ড্রাগন ফল
ড্রাগন ফলে অনেক ধরনের ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে, রক্তের সুগারের স্তরকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে এবং শরীরের ইনসুলিন বাড়াতে সাহায্য করে। ড্রাগন ফলে রয়েছে বিটা- ক্যারেটিন সমৃদ্ধ। ড্রাগন ফল ফাইবার যুক্ত হওয়ায় রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ড্রাগন ফল নিয়মিত খেলে রক্তের শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখে।
ড্রাগন ফলের পুষ্টি
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই আছে। তবে এইড্রাগন ফলটি অনেক পুষ্টি- গুনে ভরা। ড্রাগন ফলে রয়েছে অনেক পরিমাণে ভিটামিন সি। এই ফলে ক্যালরি কম রয়েছে বিধায় এই ফল খেয়ে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা নাই। ড্রাগন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম বিটা-ক্যারেটিন ও লাইকোপেন এর মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। আরো রয়েছে ফাইবার ও আয়রন, যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
সাদা ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
ড্রাগন ফলে রয়েছে অনেক পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে এবং প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। যাদের হাড়ের কোনো সমস্যা আছে, তাদের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে ড্রাগন ফলের উপকারিতা অনেক। বাচ্চাদের ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারেটিন এর চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে।
লাল ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
লাল ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে রক্ত শূন্যতার সমস্যা দূর হয়। এটি রক্ত বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করে। এই লাল ড্রাগন ফলটি হার্ট ভালো রাখতে সহায়তা করে।
ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা
ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা সম্পর্কে না জানার কারণে আমরা ড্রাগন ফলের খোসা ফেলে দেই। কিন্তু এর উপকারিতা জেনে আপনি অবাক হবেন যে এটি আমাদের জন্য কতো উপকারী। ড্রাগন ফলের খোসার জুস বানিয়ে আমাদের শরীরের অনেক ধরনের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ড্রাগন ফলের খোসার জুস বানাতে হয়।
প্রথমে একটি বা দুইটি ড্রাগন ফলের খোসা ছাড়িয়ে নিবেন এবং সেই খোসা গুলো অনেক সুন্দর/ভালোভাবে পরিস্কার করে নিবেন। তারপর খোসা গুলোকে টুকরো টুকরো করে কেটে নিবেন। এবার একটা পাত্রে এক গ্লাস পানি নিয়ে নিবেন এবং পানিটুকু ফুটিয়ে নিবেন । পানি ফুটে গেলে ড্রাগন ফলের খোসা গুলো পাত্রের মধ্যে দিয়ে ৬-৭ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। পানি ফুটানোর পর দেখতে পাবেন পানি গুলো লাল বা গোলাপি বর্ণের গেছে।
তখন পানিটুকু নামিয়ে নিবেন। এখন স্বাদ বাড়ানোর জন্য হাল্কা লবন দিবেন। এবার এই জুসে অর্ধেক লেবু দিতে হবে। এই জুস এর উপকারিতা হলো এটি মেদ/ভুড়ি কমাতে সাহায্য করে। আবার ডায়াবেটিকস রোগী দের জন্য বেশ উপকারী। এটি হৃদ্ররোগের সমস্যার সমাধান করতেও এই জুস খেতে পারেন।
ড্রাগন ফলের অপকারিতা
যে কোনো জিনিসের উপকারিতা থাকলে অপকারিতাও থাকবে। ড্রাগন ফলের ক্ষেত্রেও আলাদা না ।ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই বিদ্যমান। ড্রাগন ফলের যেমন উপকারিতা আছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। ড্রাগন ফল বেশি খেলে সাইড ইফেক্ট দেকা দিতে পারে। ড্রাগন ফলে অনেক পুষ্টি এবং গুন রয়েছে । অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খেলে অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। অনেক বেশি ড্রাগন ফল খেলে ডায়রিয়া হতে পারে, এতে রয়েছে হাইপোটেনশ যা পরিমাণের থেকে বেশি খেলে নিম্ন রক্ত চাপ দেখা দিতে পারে।
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এর শেষ কথা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই রয়েছে। যে কোনো জিনিসের উপকারিতা অপকারিতা উভয়ই রয়েছে। ড্রাগন ফল আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটা ফল। এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য। ড্রাগন ফল ফ্যাট ফ্রি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। ড্রাগন ফলে থাকা ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ড্রাগন ফল ক্যান্সার রোগের ঝুঁকি কমায়। এই ফল রক্ত বৃদ্ধিতে অনেক কার্যকারী।
এই ড্রাগন ফল হার্টের জন্যও অনেক উপকারী। এর অপকারিতা হলো এটি পরিমাণ মতো খেতে হবে , পরিমাণের বেশি খেলে এর বিভিন্ন সাইড ইফেক্ট রয়েছে। যেমন- এই ড্রাগন ফল বেশি খেলে এলার্জি দেখা দিতে পারে, ডায়রিয়া হতে পারে ইত্যাদি। তাই ড্রাগন ফল পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত। যে কোনো খাবার পরিমাণ মতো খেলে শরীর যেমন সুস্থ্য থাকে তেমনি মন ও ফ্রেশ থাকে। তাই সব খাবারই পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত।
অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url