কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয়
কোলন ক্যান্সার হলো একটি জটিল রোগ। সঠিকভাবে এই ক্যান্সারের চিকিৎসা না করলে স্বাভাবিক জীবন যাপন অনেক কঠিন হয়ে। কোলন ক্যান্সারের সংখ্যা বেড়েছে বর্তমান যুব সম্প্রদায়ের মাধ্যে।এগুলোকে বেশি আক্রান্ত হয় পুরুষেরা। এই রোগে আক্রান্ত ঝুঁকি বেড়ে যায় ৫০ পিড়লে। কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় গুলো জানা থাকলে ক্যান্সারের মোকাবেলা করা যেতে পারে।
কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় গুলো জানলে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব।এ ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অতিরিক্ত ছাগল, গরুর মাংস খাওয়া মদ্যপান ও ধূমপান এই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে তোলে। তাই আজকে আমরা জানব কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয়।
সূচিপত্র :কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয়
- কোলন ক্যান্সার কি
- কোলন ক্যান্সারের কারণ
- কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ
- কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে যে খাবার
- কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসা
- কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় শেষ কথা
তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় ।
কোলন ক্যান্সার কি
মিউকোসাল এপিথেলিয়ামের টিউমারটি ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের পরিণত হয় মলাশয়ে একটি বংশগত বা পরিবেশের প্রভাবে কারণে হয়ে থাকে এটিকে মলাশয়ে বা কোলন ক্যান্সার বলে। ম্যালিগন্যান্ট টিউমার থেকে ক্যান্সারের যুক্ত থাকা কোষের লসিকার ও রক্ত মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যেতে পারে।
এটি সাধারণত মলদ্বারে বা মলাশয়ের সংযোগস্থানে হয়। অস্বাভাবিক বা অনিয়ন্ত্রিত মলাশয়ে কোষ গুলো বৃদ্ধি হলে কলোন ক্যান্সার হয়। করলেন ক্যান্সার ৪৯ থেকে ৫০ বয়সী রোগীদের মাঝে বেশি দেখা যায়। শরীরে সুস্থ টিস্যু কে ধ্বংস করে দেয় ক্যান্সারে বৃদ্ধি হওয়া কোষ গুলো। মেটাস্টেসেস বলা হয় এই প্রক্রিয়াকে। ১৫% সম্ভাবনা রয়েছে ৪০ বছরের নিচে কোন ক্যান্সার হওয়ার।
কোলন ক্যান্সারের কারণ
কোলন ক্যান্সার হলে একটু জটিল রোগ। কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় গুলো জানা থাকলে ক্যান্সারের মোকাবেলা করা যায়।কি কি কারনে কোলন ক্যান্সার হয়ে থাকে কোলন ক্যান্সারের কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো :
- জিনগত ও পরিবেশের কারণে কোলন ক্যান্সার হতে পারে।
- গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে খাদ্যভ্যাস। কোলন ক্যান্সারের কারণ হলো খারাপ খাদ্যভাস।
- প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং বেশি মাংস খেলে ক্লোন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- দৈনিক খাদ্য তালিকায় আজ যুক্ত খাবারের অনুপস্থিত থাকলে কোন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- ক্যান্সারকে হাতছানি দেয় অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার। তাই এ সকল খাবার পরিহার করাই ভালো।
- ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় ধূমপান ও মদ্যপান।
- পেটের জন্য খুব ক্ষতিকর ময়দাযুক্ত জিনিস এই সকল খাবার না খাওয়াই ভালো।
- ভাজাপোড়া যেমন: কচুরি, সিঙ্গারা, বার্গার, পিজ্জা, ফাস্টফুড থেকে হতে পারে ক্যান্সার।
- ক্যান্সারের কারণ হয়ে উঠতে পারে বেশি স্টার্চযুক্ত খাবার।
- যারা শারীরিক কাজকর্ম বা ব্যায়াম করেন না তাদের কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
- কোলন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে যাদের ডায়বেটিস বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।
কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ
প্রথম অবস্থায় কেলন ক্যান্সার নির্ণয় অনেকটা কঠিন। কারণ প্রথমদিকে কোন ক্যান্সারের কোন লক্ষণ বা উপসর্গ সেভাবে বোঝা যায় না। কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় গুলো মধ্যে আপনার কোন ক্যান্সার হয়েছে কিনা বা কোন ক্যান্সার ভুগছেন কি না তা জানার জন্য আপনাকে সাহায্য করতে পারে তেমন কিছু লক্ষণ নিচে উল্লেখ করা হলো :
- কোলন ক্যান্সারের অন্যতম লক্ষণ হলো অন্ত্র অভ্যাস পরিবর্তন। ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য অভিজ্ঞতা হতে পারে কোন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর।
- পেটে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া ফোন ক্যান্সারের লক্ষণ।
- শরীরে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি দেখা দিলে কোন ক্যান্সার হতে পারে।
- দূরত্ব ওজন কমে যাওয়া।
- কোলন ক্যান্সারের রোগীর পেটের অস্বস্তি কখনো শেষ হবে না। গ্যাস ও পেটের ব্যথা এর সাথে অন্তর্ভুক্ত।
- দুর্বলতা ক্লান্ত অনুভব করা
- নিঃশ্বাসের দুর্বলতা
- সরু মল
সকল লক্ষণ ছাড়া আরও অন্যান্য লক্ষণ দেখা দিতে পারে। কোন লক্ষণ ছাড়াই বিকাশ করতে পারে কয়েক বছর কোলন ক্যান্সার।
কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে যে খাবার
ক্যান্সার এর নাম শুনলে মানুষ সীমাহীন আতঙ্কে ভোগে।ক্যান্সার একজন মানুষের জীবন ধ্বংস করে দিতে পারে।বিভিন্ন ক্যান্সারে মানুষ আক্রান্ত হয়ে থাকে। এর মধ্যে একটি হলো কোলন ক্যান্সার।পুরোপুরি ক্যান্সার ভালো করে দেওয়ার ওষুধ আবিষ্কার হয়নি এখনো। তোর জীবন যাপনের অভ্যাস এবং খাদ্যভাস পরিবর্তন আনলে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচতে পারে। কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া থেকে রেহাই পেতে নৈতিক খাদ্যের কথা জানবো আজ।নিচে নৈতিক খাদ্যের কথা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
- পেয়ারা ভিটামিন সি রয়েছে পেয়ারা তে।ভিটামিন সি সমৃদ্ধির খাবারটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিপাকীয় প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে তোলে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি ত্বক ও স্বাস্থ্য ভালো রাখে।ক্যান্সার জনক কোষের উৎপাদন প্রতিরোধ করে ভিটামিন সি।এর ফলে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
- জিরা: জিরা শুধু খাবারের স্বাদ বারায় না ঔষুধ তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। কামিন এলডিহাইড নামের উপাদান রয়েছে জিরাতে।যা প্রতিরোধ করে অন্ত্রের ভেতরের ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি থেকে।এর ফলে কোলন ক্যান্সার হয় না।
- কলা: প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে কলাতে। বিপাকীয় প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে তোলে ও অবসাদ দূর করে, শক্তি বাড়ায়।বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে মলাশয়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকে নিয়মিত কলা খেলে। কোলম ক্যান্সার এবং পাকস্থলীতে আলসার প্রতিরোধ করে কলা।
- সবুজ শাকসবজি : অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, খনিজ এবং আইরন রয়েছে সবুজ শাকসবজিতে। ক্যান্সারজনক কোষের উৎপাদন ও বৃদ্ধি ঠেকায় অনটিঅক্সিডেন্ট। প্রতিরোধ করে কোলন ক্যান্সারও।
- মাছ: ওমাগো-৩ ফ্যাটি এসিড ও ভিটামিন ই এর মত শক্তিশালী পুষ্টি উপাদান রয়েছে মাছে। যা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানো, ওজন কমানো, ইত্যাদিতে সাহায্য করে। এবং বিপাকীয় প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে তুলে। ওমাগো-৩ ফ্যাটি এসিড প্রতিরোধ করে স্তন, ক্রোন এবং দেহের আরো কিছু অংশে ক্যান্সার জনক কোষ।
- ঢেঁড়স : ঢেঁড়সের সেরা কার্যকরী সবজি কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য ইটের মতো পাকস্থলী সংশ্লিষ্ট সমস্যার সমাধানের জন্য কাজ করে। অন্ত্রের কোষ গুলো কারো শক্তিশালী করে তোলে ঢেঁড়সে থাকা এনজাইম। জন্ম নিতে পারে না ক্যান্সারের কোষ গুলো।
- চীনাবাদম: কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ হয় বাদাম বা চর্বিযুক্ত বাদামের মাখন নিয়মিত খেলে।ম্যাগনেসিয়াম ও ওমাগো-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে বাদাম। ক্যান্সার জনক কোষের বৃদ্ধি উৎপাদন প্রতিরোধ করে চিনা বাদামে থাকাই দুইটি উপাদান।এবং প্রতিরোধ করে কোলন ক্যান্সার ।
- দই: অসংখ্য উপকারিতা পাবেন নিয়মিত এক কাপ দই খেলে। অন্ত্রের জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায় দই। আপনার কোলনের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অনেক জরুরী। আপনার কোন ভালো থাকলে কোন ক্যান্সার হওয়ার ছবিটা অনেকটা কমে আসবে।
- পূর্ণ শস্য :নিয়মিত খাবারের তালিকায় ব্রাউন রাইস,ভুট্টা, বার্লি, ওটমিল,ইত্যাদি শস্যজাত খাবার খেলে আপনার কোলন এর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। এর ফলে আপনি ক্লোন ক্যান্সার আক্রান্ত হবেন না।
কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় গুলো মধ্যে উপরের খাবার গুলো খেলে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে।
কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসা
কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসা সম্পর্কে জানা। কোলনন ক্যান্সারে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক পদ্ধতি পাওয়া যায় কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য। কোলন ক্যান্সারের কিছু সাধারন উপাই নিচে উল্লেখ করা হলো:
১.অস্ত্রোপাচার : অস্ত্রপাচার এই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে সাধারণত স্ত্রুিনিং সাহায্যে ডাক্তার যখন আগের পর্যায়ে লোন ক্যান্সারের লক্ষণ সনাক্ত করতে পারে। ডাক্তাররা সাধারণত অস্ত্র পাচারের সাহায্যে পলিপলগুলো অপারেশন করে থাকে। এই ফলিকলগুলো ভবিষ্যতে ক্যান্সারের কোষে পরিণত হতে পারে।প্রতিরোধ করতে পারে যেকোনো ধরনের ক্যান্সার। অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে মলদ্বারের একটি অংশ।
কেমোথেরাপি : কেমোথেরাপি সাধারণত ক্লোন ক্যান্সার চিকিৎসার একটি সাধারণ উপায়। ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে ক্যান্সারের কোষ গুলোকে মেরে ফেলার জন্য। অস্ত্র পাচারের পর এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করতে পারে অবশিষ্ট ক্যান্সারের কোষগুলোকে মেরে ফেলার জন্য। ক্যান্সারের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা যায় কেমোথেরাপি সাহায্যে। কেমোথেরাপি পদ্ধতিটি নেওয়ার জন্য আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। কেমোথেরাপি দেওয়ার পরে অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
বিকিরণ : বিকিরণ একটি খুব বিখ্যাত ক্লোন ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য। শক্তিশালী রশ্মি এবং এক্সরে সাহায্যে ক্যান্সারের কোষগুলো ধ্বংস করতে ব্যবহার করা হয়।কেমোথেরাপির পাশাপাশি বা অস্ত্র পাচারের আগে বা পরে বাকি কোষগুলোকে মেরে ফেলার জন্য রেডিয়েশন করতে পারে।
কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় শেষ কথা
কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় সম্পর্কে আমরা উপরোক্ত আলোচনায় জেনেছি। ক্যান্সার একটি কঠিন রোগ কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যে এর উপযুক্ত চিকিৎসা রয়েছে। ক্যান্সার রোগীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সচেতনতা। প্রথমদিকে ক্যান্সার ধরা পড়লে এর চিকিৎসা করা সম্ভব। তাই কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় এগুলো সম্পর্কে আমরা জানব। এবং কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ ও করণীয় গুলো সম্পর্ক অপরকে জানতে সাহায্য করবো।
অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url