ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই

একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ হলো ডায়াবেটিস। বর্তমান সময়ে আমাদের আশেপাশে অনেক পরিচিত নাম হয়ে উঠেছে ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস হলে শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে না। ডায়াবেটিসের চিকিৎসা না করলে জটিলতা সৃষ্টি হয়।আমরা অনেকেই আছি ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই।

আমাদের মধ্যে এখনো অনেক মানুষ আছে যারা ডায়াবেটিসের লক্ষণ সম্পর্কে বা ডায়াবেটিস হলে কি হয় কি সমস্যা হতে পারে ডায়াবেটিসের ঔষধ চিকিৎসা সম্পর্কে জানেনা। তাই ঐ সকল মানুষগুলো  ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই।

সূচিপত্র : ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই

যারা  ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই তাদের জন্য উপরের বিষয় গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ডায়াবেটিস এর ইংরেজি কি

ডায়াবেটিসে ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Diabetes। ডায়াবেটিসের অপর নাম বা বৈজ্ঞানিক নাম ডায়াবেটিস মেলিটাস।তবে সাধারণ ডায়াবেটিস নামে পরিচিত এটি।আমাদের শরীরে ইনসুলিন নামের একটি হরমোন আছে এই ইনসুলিন নামের হরমোন যখন পর্যাপ্ত পরিমাণের ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না তখন ডায়াবেটিস দেখা দেয়।

ডায়াবেটিস কী

শরীরে একটু গুরুত্বপূর্ণ অবস্থা হলো ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস শরীরের রক্তে চিনি বা গ্লুকোজ এর মাত্রা বৃদ্ধি করে। আমাদের শরীরে ইনসুলিন নামের হরমোন যখন ইনসুলিন  তৈরি করতে পারে না বাসে তৈরি হয় ইনসুলিন ভালোভাবে কাজ বাপব্যবহার করতে পারেনা তখন রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে যায়। শর্করা প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিন মানুষের শরীরের কোষগুলোতে।এর ফলে আমরা খাবার খেলে খাবার থেকে যে শর্করা চিনি পাওয়া যায় তা কোষ গুলোর মধ্যে প্রবেশ করতে পারে রক্তের মধ্য দিয়ে। 

অগ্ন্যাশয়ের আপনার কোষ থেকে তৈরি হওয়া হরমোন  আইলেটস থেকে ইনসুলিন তৈরি হয়। ইনসুলিনের গুরুত্ব বুঝতে হবে ডায়াবেটিস রোগ বোঝার আগে। এবং কার্বোহাইডেট নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরে গ্লুকোজ প্রবেশ করতে পারে না ইনসুলিন ছাড়া।সাধারণত রক্তে থাকা গ্লুকোজ যথাযথভাবে ব্যবহার করতে না পারলে ডায়াবেটিস রোগ হয়। কারণ আমাদের দেহের শক্তির  জন্য রক্তে থাকা গ্লুকোজ ব্যবহৃত হয়। ডায়াবেটিস কখনো সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না।যারা  ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই তাদেরকে ডায়াবেটিস কী তা জানতে হবে।

ডায়াবেটিস হয় কেন

আমাদের প্যানক্রিয়াস থেকে ইনসুলিন বের হয় আমরা যখন খাবার খাই। অতিরিক্ত গ্লুকোজ কমিয়ে দেয়া হচ্ছে ইনসুলিনের কাজ।এই গ্লুকোজ কাজ করে শরীরের জ্বালানি হিসেবে। যখন শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন কম হয় ইনসুলিন কাজ করতে পারে না শরীরে অতিরিক্ত গ্লুকোজ জমে যায়। এইরকম অবস্থা কি আমরা ডায়াবেটিস বলছি।ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ হচ্ছে শরীরে গ্লুকোজ বা চিনি  জমতে শুরু করলে ডায়াবেটিস দেখা দেয়।

ডায়াবেটিস এর স্বাভাবিক মাত্রা কত

ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই যারা তাদেরকে ডায়াবেটিস রেঞ্জ কি তা জানতে হবে।ডায়াবেটিস রেঞ্জ হলো ডায়াবেটিসের লেভেল বা মাত্রা।ডায়াবেটিস একটা নিদিষ্ট মাএা বা পরিমাপ আছে।ডায়াবেটিসের  রেঞ্জ কমে গেলে বা বেড়ে গেলে। খালি পেটে গ্লুকোমিটারে পরীক্ষা করলে ডায়াবেটিসের মাত্রা ৫.৫ পয়েন্ট এর আশেপাশে থাকা ভালো। প্রি  ডায়াবেটিস বলা হয় ডায়াবেটিসের মাত্রা যদি ৬.১-৬.৯ এর মধ্যে থাকে।প্রি-  ডায়াবেটিস হলে  টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে হৃদরোগ ও অন্যান্য রোগ ভর সম্ভব না অনেক বেড়ে যায়। এ অবস্থা  আপনারা সতর্কবার্তা হিসেবে ধরতে পারেন।

স্বাস্থ্যকর ও জীবন যাপনের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। খাবার দুই ঘন্টা পরে বা ভরা পেটে ডায়াবেটিসের অনেকটা বেড়ে যায়। তবে একটু বেড়ে যাওয়া কে স্বাভাবিক ধরা হয়। ৭.৮ পয়েন্ট বেশি বেড়ে গেলে প্রি ডায়াবেটিস ধরা হয়। কিন্তু ডায়াবেটিসের মাত্রায় চলে আসে ১১.১ পয়েন্টের এর বেশি হলে। আপনার যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন ও চিকিৎসা শুরু করুন।

ডায়াবেটিস এর লক্ষণ

শরীরের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ও শর্কারা মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দেখা দিলে এই অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলা হয়।আমাদের শরীরের কোষ গুলোতে শর্করা প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ করে। একটি চাবি হিসেবে কাজ করেন ইনসুলিন। ইনসুলিন এর মাধ্যমে আমরা দের খাবার থেকে যে শর্করা বা চিনি পাওয়া যায় তা রক্তের মধ্য দিয়ে কোষগুলোতে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। সেই গ্লুকোজ ব্যবহার করা হয় শরীরের প্রয়োজনের শক্তির জন্য। ডায়াবেটিসের ধরন সাধারণত দুই ধরনের - টাইপ ১ ও টাইপ ২
এই দুই ধরনের ডায়াবেটিসের লক্ষণ দুই রকম। 

টাইপ ১ ডায়াবেটিসের লক্ষণ 
খুব দ্রুত সূএপাত ঘটে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের।হঠাৎ দেখা দিতে পারে নিম্নলিখিত  উপসর্গ গুলো - 
  • অতিরিক্ত প্রসাবের প্রবণতা 
  • তীব্র তৃষ্ণা 
  • প্রচন্ড ক্ষুধা 
  • দ্রুত ওজন হ্রাস 
  • ঝাপসা দৃষ্টি 
  • দুর্বলতা ও ক্লান্তি 
  • বমি বমি ভাব 
  • অস্বাভাবিক বিরক্তি 
  • ঝাপসা দৃষ্টি 
  • চুলকানি 
  • পেট ব্যথা 
  • অপ্রতিকর গন্ধের অনুভূতি 
টাইপ ২ ডায়াবেটিসের লক্ষণ : 
সবচেয়ে সাধারণ লোকটিকে টাইপ টু ডায়াবেটিস বলা হয়। যাদের ডায়াবেটিস হয়ে থাকে তাদের ভিতর প্রায়ই ৯০% লুকিয়ে টাইপ টু ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। টাইপ টু ডায়াবেটিস সাধারণত ৩৫ বছর বয়সের প্রকাশ পায়। টাইপ ২ লক্ষণগুলো হলো-
  • ক্ষতস্থান ধীর গতিতে নিরাময় 
  • অতিরিক্ত প্রসাবের প্রবণতা 
  • তীব্র তৃষ্ণা 
  • দ্রুত ওজন কমে যাওয়া 
  • হাতে বা পায়ে ঝিনঝিন 
  • চুলকানি 
  • ঝাপসা দৃষ্টি 
  • মূত্রনালীত সংক্রমণ 
  • মেজাজ পরিবর্তন 
  • অপ্রতিকর গন্ধের অনুভূতি
  • মাথা ঘোরা 
  • মাথা ব্যথা 
  • ঘাড়ে এবং বগলে কালচে ছাপ ইত্যাদি 
 ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই যারা তাদেরকে অবশ্যই ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো আগে জানতে হবে।

ডায়াবেটিস এর ঔষধ

ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রথম মুখে খাওয়া ওষুধ দেওয়া হয়।ওষুধের শরীরে ইনসুলিন তৈরি হতে পারে। ওষুধগুলোর কাজ ও ওষুধগুলোর ব্যবহার নিচে দেওয়া হলো- 
১. বাইগুয়ানাইড: গ্লুকোজ শরীরে ভালোভাবে কোষের মধ্যে যেতে সাহায্য করে এই ধরনের ওষুধ গুলো খেলে রক্তের শর্করা কমায়।এই ওষুধটি অতিরিক্ত গ্লুকোজ তৈরি করা থেকে বাধা দেয়।
২. ডোপামাইন রিসেপ্টর অ্যাগেনিস্ট: এই ওষুধটি সাধারণত খাবার পরে খেতে হয়।রক্তের শর্করা  কমাতে সাহায্য করে। 
৩. সালফোনাইলিউটিয়াস:এই ওষুধ গুলো শরীরে বেশি বেশি ইনসুলিন তৈরি করতে সাহায্য করে। যেমন: টোলাজামাইজ,গ্লিমেপিরাইড।
৪.বাইল অ্যাসিড সিক্যুয়েস্ট্রানটস:যাদের রক্তে প্রবাহের সমস্যা ডায়াবেটিসের ওষুধ খেতে পারেন না তাদের কে এই ওষুধটি দেওয়া গ্রহন করতে বলা হয়। 
৫. মেগ্লিটিনাইডস: শরীরে বেশি ইনসুলিন তৈরি করতে সাহায্য করে এই ঔষধ গুলো।
৬.আলফা গ্লুকোসিডেজ ইনহিবিটস: এই ওষুধগুলো দেওয়া হয় সাধারণত পাস্তা পাউরুটি আলুর মতো খাবার গুলো শর্করা হজম করার জন্য
৭.মেটফরিন:  দেহের ইনসুলিন কে আরো ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে কি ওষুধ।  অন্যান্য ডায়াবেটিসের ওষুধ থেকে এই ওষুধটি কম দামি। রক্তের চিনির মাত্রা নিচে নামিয়ে দেয়। এবং ওজন বৃদ্ধ করে।
ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই তাদেরকে ডায়াবেটিস এর ওষুধ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে।

ডায়াবেটিস এর চিকিৎসা

সারা বিশ্বে ও আমাদের দেশে প্রতি সাত সেকেন্ডে একজন মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মোট ১০ কোটি মানুষ আমাদের দেশে ডায়াবেটিস রোগীর আক্রান্তের সংখ্যা। এদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন বয়সের মানুষ রয়েছে। বর্তমান ডায়াবেটিস চিকিৎসায় আধুনিক ইনসুলিন যুক্ত হয়েছে।এই ইনসুলিন দেওয়া হচ্ছে দুইভাবে। সিরিঞ্জ বা প্লাস্টিকের গ্লাস। বিশ্বের যতগুলো ডায়বেটিসের গাইডলাইন আছে এখানে বলে দেওয়া আছে ইনসুলিন কখন নিতে হবে আপনি আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন গ্রহণ করতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

মুখে খাওয়ার ওষুধ দিয়েও করেছেন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার তিন মাসের বেশি ওষুধ খেয়েও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। সাত দশমিক মানুষের উপরে থাকে ডায়াবেটিস মাত্র যদি তাহলে তাহলে বুঝে নিবেন কিসের সফল হয়নি আপনাকে ইন্সুলিন নিতে হবে। গর্ভকালীন সময় ডায়াবেটিস ধরা পড়লে ইনসুলিন একমাত্র ভরসা। ডায়াবেটিস হওয়ার সাধারণ শরীরে ইনসুলিন  কম উৎপন্ন হলে।  ইনসুলিন হলো এ রোগের বাচ্চার সহজ উপায়। ইনসুলিন নিতে হবে শরীরে ইনসুলিনের  ঘাটতি থাকলে।ডায়াবিটিস এর প্রধান চিকিৎসা হলো ইনসুলিন।

ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই তাদেরকে ডায়াবেটিকস চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে হবে।

ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই  এর শেষ কথা

ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই এমন অনেকেই আছে। ভালোভাবে জানেনা ডায়াবেটিস সম্পর্কে । যারা  ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই তারা আশা করি বিষয়গুলো পড়ে ভালোভাবে জানতে পেরেছে। কেন জানতে পেরেছে ডায়াবেটিসের ইংরেজি কি, ডায়াবেটিস কি, ডায়াবেটিসের লক্ষণ, ডায়াবেটিস কেন হয়, ডায়াবেটিসের ওষুধ চিকিৎসা আরো অনেক কিছু। গুরুত্ব বিষয় গুলোর মধ্যে আপনার মধ্যে এমন লক্ষণ বা পরিবর্তন দেখা দিলে পরামর্শ। আপনার মত যারা  ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে চাই তাদেরকে ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে সাহায্য করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url