কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায়
বর্তমান জীবনে একটি সাধারণ কিছু সমস্যার মতোই হলো কিডনিতে পাথর। আমাদের আশেপাশে কেউ না কেউ এই সমস্যাই আক্রান্ত। কিডনিতে পাথর এই সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিডনিতে মিনারেল জমে স্ফটিকের বা ক্রিস্টাল মতো পদার্থ তৈরি করে এটাকে আমরা কিডনিতে পাথর বলে জানি। অক্সালেট ও ক্যালসিয়ামের ডিপজিশন হলে এই রোগ তৈরি হয় ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে কিডনিকে। পাথর হলে ধীরে ধীরে কিডনির কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। কিডনিতে পাথর অবস্থান, ধরন, আকৃতির, ওপর কিডনির কার্যক্ষমতা নির্ভর করে।
সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে। অনেক সময় কিডনিতে পাথর এই রোগটি মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।অনেকে ঠিককভাবে পানি পান করে না।পর্যাপ্ত পরিমাণের পানি পান না করার কারণে শরীরে পানির কমে যায় ইতি কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়ার ভয় থাকে। এছাড়া আরো অনেক কিছু কারণেই কিডনিতে পাথর জমতে পারে। আমাদের দেহের রক্ত পরিশোধন করে এই কিডনি। শরীরে জমে থাকা দূষিত বজ্র পদার্থ বের করে দেয় এই কিডনি। তাই কিডনিতে পাথর হয়েছে কিনা বুঝার জন্য,ও সচেতন থাকার জন্য কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায় সম্পর্কে আজ আমরা জানবো।
সূচিপত্র : কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায়
কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায় এর শেষ কথা তাহলে আসুন জেনে না নাওয়া যাক। কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।
পেট ও পিঠ ব্যথা করা
রেনাল কলিকও বলা হয় কিডনি পাথরের ব্যথা কে। এই ব্যথা হঠাৎ করে শুরু হয়। কিডনি পাথরের ব্যথা উপর পেটে বা নিচে পিঠের ডানে বায়ে মৃদু ব্যথা।অনেক সময় নারীদের ক্ষেত্রে কিডনির পাথর সরু জরায়ুর পথ দিয়ে বের হতে গিয়ে আটকে যায় ফলে কিডনিতে চাপ বেড়ে যায় আর তখনই ব্যথা হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি তার পিঠেও পাঁজরের নিচের অংশে ও বুকের একপাশে ব্যথা অনুভব করে। আর পাথরটি বেশি বড় হলে পাথরটি আটকাবার সেই স্থানে ফুলে যেতে পারে। কিডনিতে পাথর যখন নড়াচড়া করে তখন ব্যাথার জায়গাটাও পাল্টে যায়। কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায় এর মধ্যে প্রীতি ও পিঠে ব্যথা অনুভব করলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া করা
প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া করা কিডনিতে পাথর হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া অনুভব হয় কিডনিতে পাথর থাকলে। প্রস্রব এর ব্যথা হয় যখন কিডনিতে তৈরি হওয়া পাথর মূত্রনালী ও মূত্রথলির সংযোগ স্থানে যাই। এ ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পাই মূত্রতন্ত্রের সংক্রমনের বেলায়। সকল কারণে প্রসবের ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হয়। ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন এর কারণে সময়ের জ্বালাপোড়া হতে পারে। তাই কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায়এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে বসে না থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ও রোগ নির্ণয় করুন।
প্রসাব লালচে বর্ণের হওয়া
প্রস্রাব লালচে বর্ণে হওয়া পাথর জমার আরো একটি লক্ষণ। প্রসাবের রং যদি গোলাপি, লাল কিংবা বাদামি হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বের হওয়া
কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায় এর মধ্যেপ্রাস্রাবের সাথে রক্ত বের হওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়। হিমাচুরিয়াও বলা হয় এই লক্ষণকে। এই রক্তের রং গোলাপি, বাদামি বা লাল ধরনের হতে পারে। কিডনিতে পাথর জমলে বা কিডনির সমস্যা হলে প্রাস্রাবের সাথে রক্তের কোষগুলো বের হয়। আলব্যামিন নামের একটি প্রোটিন থাকে যার কারনে প্রাস্রাবে রক্ত বের হয়। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দূরত্ব ডাক্তারের পরামর্শ নিন। রক্তবর্ণের প্রস্রাব হলে সাধারণত কিডনিতে ইনফেকশন না হলে কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে। কিডনি তে পাথর হলে ফিল্টার গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এর কারণে রক্তের কোষগুলো প্রসানের মাধ্যমে লিক হয়ে ।
প্রস্রাবের দুর্গন্ধ হওয়া
মূত্রতন্তের সংক্রমণ লক্ষণ প্রস্রাবে দুর্গন্ধ। কিডনিতে পাথর থাকার কারণে অনেক সময় প্রস্রাবে অনেক বেশি গন্ধ হয়। প্রস্রাবের গন্ধ ও খুব তীব্র হয়ে ওঠে কিডনি দুর্বল হয়ে পড়লে। কিডনিতে পাথর বা কিডনির সমস্যা হলে কিডনি শরীরের বিষাক্ত পদার্থ থাদূর করতে ব্যর্থ হয় ফলে এ ধরনের দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। শরীরের অনেক বেশি বজ্র বিষাক্ত পদার্থ প্রস্রাবের মধ্যে থাকলে এরকম গন্ধ তৈরি হয়। এরকম গন্ধ এক থেকে দুই দিন থাকলে চিন্তার কোন কারণ নেই। তবে দীর্ঘদিন ধরে এইরকম গন্ধ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শরীরে কাপুনি জ্বর আসা
কিডনির কোন সংক্রমণ বা কিডনিতে পাথর হলে জ্বর আসতে পারে । কাঁপুনি দিয়ে সাধারণত জ্বর আসা সাধারণত কোন ভাইরাসের লক্ষণ। কিন্তু কাপুনি দিয়ে জ্বর বিভিন্ন কারণে হতে পারে।ইউরেটার বা মূত্রথলিতে সংক্রমণ হলে পত্রথলিতে পাথর হলে বা ইনফেকশন হলে রাতে রাতে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর হয় এবং কোমরে প্রচন্ড ব্যথা হয় তখন বুঝে নিতে হবে আপনার মূত্রথলিতে রয়েছে বা আপনার কিডনিতে পাথর রয়েছে। তখন তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিন জানুন আপনার এই আপনি দিয়ে জ্বরটি কেন হচ্ছে।
শরীরে পানির স্বল্পতা হলে
কিডনি সমস্যা হলে বা কিডনিতে পাথর হলে প্রসাবের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে টক্সিন বের হতে থাকে। এক্ষেত্রে শরীরের পানির স্বল্পতা হতে পারে। পাথর হলে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রোটিন বের হয়ে যায় ফলে পানির সর্বোতা ও দুর্বলতা দেখা দেয়। কিডনি পাথরে শরীরের পানির স্বল্পতা হলে প্রস্রাবের রং গাড়ো হলুদ হলে বুঝতে হবে শরীরের পানির স্বল্পতা রয়েছে। তাই কিডনিতে পাথর হলে পর্যাপ্ত পরিমাণের পানি পান করতে হবে।
অতিমাত্রায় শরীর ঘামলে
শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঘাম বিশেষ করে মুখে বেশি ঘেমে গেলে আমরা খুব একটা পাত্তা দিই না। কিন্তু এইসব কিডনি রোগের লক্ষণ বহন করে। আমরা অনেকেই জানিনা কেউ অতিরিক্ত ঘাম কিডনি পাথরের লক্ষণ।শরীরের দৃষ্ট অংশে অতিরিক্ত ঘাম কিডনি পাথরের লক্ষ হতে পারে। এইগুলো ছোটখাটো লক্ষণ এর উপরে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায় এর মধ্যে অতিরিক্ত শরীরের ঘাম একটু ছোট্ট উপায় আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ঘাম হলে আমরা এরিয়ে যাই কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা অতিরিক্ত ঘাম কিডনি পাথরের লক্ষণ। তাই এমনটা হলে চিকিৎসক পরামর্শ নিন।
অধিকমাত্রায় দুধ পান করলে
কিডনির সমস্যা হলে বা কিডনিতে পাথর হলে অতিরিক্ত দুধ পান করলে তা অনেক ক্ষতি করে। কারণ দুধ তরল জিনিস আর কিডনি সমস্যা বা কিডনিতে পাথর হলে কিডনি সঠিকভাবে কাজ করতে পারেন ফলে প্রসাবের মাধ্যমে সে তরল পদার্থ বের করতে পারেনা।ফলে শরীরের মধ্যেই থেকে যায় যা পরবর্তীতে অনেক ক্ষতি করে। যাদের কিডনিতে পাথর রয়েছে তাদের অতিরিক্ত মাত্রায় দুধ না খাওয়াই উত্তম।দুধের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। কিডনিতে পাথর রোগীদের জন্য দুধ কম খাওয়া ও রাতে দুধ না খাওয়াই উচিত। কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায় এর মধ্যে অধিক মাত্রায় দুধ পান কিডনিতে পাথর রোগীদের জন্য ক্ষতিকর তাই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
সব সময় বমি বমি ভাব হওয়া
কিডনিতে পাথর জমার লক্ষণ হতে পারে বমি বমি ভাব। কিডনিতে পাথর হওয়ার ফলে কিডনি সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা। শরীরের মারাত্মক বজ্র দূষিত পদার্থগুলো জমা হয়ে থাকে কারণে বমি বমি ভাব হয়। কারণ আমাদের শরীর দূষিত বজ্র পদার্থ গুলো শরীর থেকে বের করে দেওয়ার প্রয়োজন মনে করে তাই বমি বমি ভাব হয়। কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায় এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ গুলোর মধ্যে বমি বমি ভাব হয়।
শেষ কথা: কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায়
অনেকে আছেন কিডনিতে পাথর হলে ওষুধ চান যা খেলে পাথর গোলে বের হয়ে যাবে। কিন্তু সত্যি কথা হলো এমন কোন ওষুধ নাই। কিডনিতে পাথর হলে পাথর ছোট থাকলে নিজে বের হয়ে যেতে পারে, তাছাড়া অপারেশনের মাধ্যমে পাথর বেরকরতে হবে।কিডনির মধ্যে পাথর থাকলে অনেক ক্ষতি হতে পারে।কিডনিতে যেন পাথর না হয় সে ব্যবস্থা নিতে হবে। উপরে কিডনিতে পাথর হলে বোঝার ১০টি উপায় সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জেনেছি। এই দশটি উপায় বা লক্ষণের মধ্যে আপনার মাঝে একটিও দেখা দিলে আপনি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন নিজে সচেতন হতে হবে।একজন ভালো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিতে হবে। তাই বলে কোন সমস্যাতেই আপনি কবিরাজ বা হাতুড়িপরামর্শ নিবেন এরকম ভুলভাল চিকিৎসা করে নিজের ক্ষতি ডেকে আনবেন না। সময় থাকতে নিজেকে সচেতন করুন,এবং নিজে সুস্থ থাকুন।
অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url