হার্ট ভালো রাখতে যে ১৫ টি খাবার খাবেন

আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো যে হার্ট ভালো রাখতে যে ১৫ টি খাবার খাবেন। অনেকের হয়তো অজানা যে আমাদের চোখের সামনে যেই সব খাবার দেখি সেই গুলা আমাদের জন্য কতোটা উপকারী। তাই হার্ট ভালো রাখতে যে ১৫ টি খাবার খাবেন সেই খাবার সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ্‌ । আমাদের মধ্যে অনেকেরই হৃদরোগে ভুগছেন। তাই যারা এই রোগে ভুগছেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি। তো চলুন আর দেরি না করে দেখে নেওয়া যাক হার্ট ভালো রাখতে যে ১৫ টি খাবার খাবেন।
হার্ট ভালো রাখতে যে ১৫ টি খাবার খাবেন সেই গুলো হলো বাদাম, শিম, মিষ্টি আলু, টকদই, সয়াদুধ, কমলা, সামুদ্রিক মাছ, সবুজ চা, রসুন, সবুজ শাক সবজি, চর্বিযুক্ত মাছ ও মাছের তেল, জলপাই তেল, মটরশুটি, টমেটো, গাজর । হার্ট ভালো রাখতে যে ১৫ টি খাবার খাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

সূচিপত্র: হার্ট ভালো রাখতে যে ১৫ টি খাবার খাবেন

বাদাম

বাদাম সুস্বাস্থের বন্ধু কলা হয় কারণ বাদাম খেলে শরীর ভীষণ পরিমাণে সুস্থ থাকে। বাদামে খনিজ ও পুষ্টিগুলে ভরা। বাদাম অনেক প্রকার হয়ে থাকে যেমন, চিনা বাদাম,কাজু বাদাম,পাস্তা বাদাম,কাঠ বাদাম, আখরোট ইত্যাদি। তবে আপনারা যেই বাদাম খান না কেন বাদাম আপনার শরীকে ফিট রাখবে। কাজু বাদামে ওমেগা ৩ এবং ওমেগা ৬ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায় যা মানবদেহে ক্ষতিকর কোলেস্টের কমিয়ে দেয় এবং ভালো কোলোস্টের বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া কাজু বাদামে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যায় যা হাটের রোক থেকে বাঁচাতে সহায়তা করে। তাই হাট ভালো রাখতে বাদাম খান।

শিম

শিম শীতকালীন সবজি এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজি। হিসেবে কাজিম বিভিন্ন রোগের রোগের প্রতিশোধক হিসাবে কাজ করে। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম শিমে ৮৬.১ গ্রাম জলীয়,০.৯ গ্রাম খনিজ উপাদান, ১.৮ গ্রাম আঁশ, ১.৮ গ্রাম ক্যালরি, ৩.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৭ গ্রাম শর্করা, ২১০ মি. গ্রাম ক্যালসিয়াম, ১.৭ গ্রাম আয়রন পাওয়া যায়। যার শরীর সুস্থ রাখতে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। শিমে থাকা আঁশ রক্তে কোলেস্টরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে। যা হার্টকে ভালো রাখতে সহায়তা করে। তাই হার্টকে ভালো রাখতে প্রতিদিন খাবারের সাথে শিম রাখুন। 

মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম । পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। মিষ্টি আলু হার্টের রক্তনালীর ভিতরে স্বাভাবিকভাবে রক্ত চলালচল করতে সাহায্য করে। মিষ্টি আলুতে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ এবং ফাইবার হৃৎপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী।

সবুজ শাকসবজি

সবুজ শাকসবজি আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য এবং বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচার জন্য খুব উপকারী। শাকসবজি তে থাকা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই আমাদের দেহ ও হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় সবুজ শাকসবজি রাখা উচিত।

কমলা

কমলা আমাদের দেশের অনেক জনপ্রিয় একটি ফল । যা ছোট বড় সবাই খেতে পছন্দ করে। এই ফলটি তে রয়েছে ভিটামিন সি। এছাড়া এতে রয়েছে ফোলেট, পটাশিয়াম এবং উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ আরো পুষ্টি। কমলাতে এসব উপাদান থাকার জন্য কমলা শরীরের পক্ষে অনেক উপকারী। কমলা হার্টকে ভালো রাখার জন্য উপকারী ফল। এতে পেকটিন নামক ফাইবার এবং লিমিনয়েড থাকায় খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে হার্টকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।

সামুদ্রিক মাছ

প্রতিটি আমিষজাতীয় খাবারই শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তাই সামদ্রিক মাছ প্রত্যেকের জন্য অনেক প্রয়জনীয়। সামুদ্রিক মাছে রয়েছে প্রটিন, ওমেগা-৩ নামক ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি হৃদযন্ত্রের জন্য খুব উপকারি এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এটি খুব কম ক্যালরিযুক্ত খাবার। বেশির ভাগ সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন ডি ও ভিটামিন এ থাকে। যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সামুদ্রিক মাছের উপকারীতার শেষ নেই।

চর্বিযুক্ত মাছ ও মাছের তেল

চর্বিযুক্ত মাছ ও মাছের তেলে একাধিক গুন রয়েছে। আর কম বেশি সব বাঙ্গালিরাই মাছ খেতে পছন্দ করে। আর মাছে থাকা পুষ্টি আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অনেকেই মনে করেন মাছের তেল অংশে কোনো পুষ্টি নেই কিন্তু মাছের বাকি অংশের মতোই মাছের তেল অংশেও পুষ্টি তে ভরপুর থাকে। মাছের তেলে রয়েছে এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিডের ভান্ডার, প্রটিন, ওমেগা-৩, ভিটামিন, আয়োডিন ছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীরের পুষ্টি যোগাই। তাই মাছের তেল হার্টের জন্য একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যারা নিয়মিত মাছ খান তাদের হার্টের সমস্যা খুব কম হয়।

গাজর

গাজর পছন্দ করে না এমন কাওকে খুজে পাওয়া যাবে না । কারণ গাজর আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে অনেক বেশি কার্যকারি ভূমিকা রাখে। গাজর একটি পুষ্টি কর সবজি। গাজর শরীরের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গাজরের ক্যারোটিন সহ আরো কিছু উপাদান হার্টের সুরক্ষাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষত হলে দ্রুত শুকিয়ে ফেলে এই গাজর। বিশেষ করে হার্টের রোগীদের জন্য এই সবজিটি বেশ উপকারী কারণ গাজরের কিছু উপাদান রক্তচাপ কমাতে বা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে সহায়তা করে। কাছাড়া গাজর খেলে শরীরের কোনো ক্যালরিও যোগ হতে দেয় না শরীরে তাই সুস্থ থাকতে গাজর অত্যান্ত উপকারী একটি সবজি। আপনার হার্ট ভালো রাখতে নিয়মিত গাজর খান।

মটরশুটি

মরটরশুটি একটি পুষ্টিকর খাদ্য এই সবজিতে ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম, পাটাসিয়াম, আয়রন,ফলিক এসিড, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি পাওয়া যায়। শরীর সুস্থ রাখার জন্য মটরশুটি অত্যন্ত জরুরি। কারণ প্রতি ১০০ গ্রমি মটরশুটিতে ৮০-১০০ কিলো ক্যালরি, ১৪.৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট,০.৫ গ্রাম ফ্যাট এবং ৫.৪ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখুন। এছাড়া মটরশুটি রক্তের কোলেস্টের মাত্রা কমিয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করে । এই মটরশুঁটি শরীরের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাই আপনার হাতকে ভালো রাখতে প্রতিনিয়ত মটরশুটি খেতে পারেন। হার্ট ভালো রাখতে যে ১৫ টি খাবার খাবেন তার মধ্যে মটরশুটি রাখতে পারেন।

টমেটো

টমেটো মূলত শীতকালীন সবজি তবে এখন সারা বছর এ সবজি পাওয়া যায়। টমেটোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন কে এবং ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এছাড়াও টমেটোতে ভিটামিন এ ভিটামিন বি পটাশিয়াম ইত্যাদি রয়েছে । যা আপনার রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রাখে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীরকে সুস্থ রাখে । সোহেলকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন দুই একটা টমেটো খাওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে হার্ট ভালো রাখতে টমেটো খাওয়া উচিত। এছাড়া টমেটো খেলে শরীরের রক্তশূন্যতা দূর হয়, রক্ত পরিষ্কার হয়, হজমের সমস্যা থাকে না। ভালো রাখতে খাবারটি খাওয়া প্রয়োজন।

জলপাই তেল

আমাদের শরীরে কোলেস্টরের পরিমাণ বেড়ে গেলে যেকোনো সময় হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই হার্টের সমস্যা যাতে আমাদের না হয় সেজন্য সচেতন থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। আমরা যদি অলওয়েল যুক্ত খাবার খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের কোলেস্টের সম্ভাবনা থাকে না। তবে জলপাইয়ের তেলটা অলিভ অয়েল হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর। জলপাইয়ের তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ভিটামিন এ পাওয়া যায় যা আপনার ত্বক ও চুলকে ভালো রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া জলপাইয়ের প্রাকৃতিক এন্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। যা আপনার হার্ট এবং ক্যান্সার জীবনকে ধ্বংস করতে পারে এবং শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। তাই হার্ট ভালো রাখতে জলপাই তেল যুক্ত খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরী।

সবুজ চা

সবুজ চা হার্টের সমস্যায় এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। সবুজ চা বা গ্রিন টি যেমন খারাপ কোরেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে তেমনি ভালো কোরেস্টেরল বাড়াতেও সহায়তা করে। এটি নিয়মিত খেলে রক্তচাপ কমায় এবং হার্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

রসুন

রসুনে অ্যালসিন নামক এক পদার্থ থাকে যা খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে হার্টকে ভালো রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত অসুন খেলে দেহে রক্ত জমাটের প্রবণতা কমিয়ে দেই। উচ্চ রক্তচাপ হার্টের অনেক ক্ষতি করে। রসুন উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে।

সয়াদুধ

দুধের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি, ফ্যাট, প্রয়োজনীয় খনিজ ভিটামিন থাকে। ফুল ফ্যাটযুক্ত দুধ কখনই খাওয়া উচিত না। কারণ এই দুধের মধ্যে থাকে সেচুরেটেড ফ্যাট। এই সেচুরেটেড ফ্যাট শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে ফুল ফ্যাট দুধের পরিবর্তে সয়াদুধ খাওয়া ভালো। হার্ট, কোলেস্টেরলের সমস্যা হলে সয়াদুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সয়ামিল্ক সাস্থের জন্য খুবই উপকারী। আর এই দুধে স্যাচুরেটেড ফ্যাট খুব কম থাকে। তাই হার্টের সমস্যা এড়াতে সয়ামিল্ক একটি উপযোগী খাবার।

টকদই

টকদই এ প্রবায়েটিক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া থাকে। টকদই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হার্টের সুরক্ষা করে এবং হজম শক্তির উন্নতি ঘটায়।

হার্ট ভালো রাখতে যে ১৫ টি খাবার খাবেন এর শেষ কথা

হার্ট ভালো রাখতে যে ১৫ টি খাবার খাবেন এর শেষ কথা এই যে, হার্ট ভালো রাখার জন্য অবশ্যই আমাদের সচেতন হতে হবে। এবং আমাদের ভিটামিন, মিনারেল যুক্ত খাবার খেতে হবে। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে যে ১৫ টি খাবারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা নিয়মিত খেলে অবশ্যই হার্টের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url