ডায়াবেটিকস রোগের জরুরি অবস্থা
সূচিপত্র : ডায়াবেটিকস রোগের জরুরি অবস্থা
- হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করা কমে যাওয়া
- হাইপোগ্লাইসেমিয়া প্রতিক্রিয়ার লক্ষণ
- হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে কি করা উচিত
- ডায়াবেটিকস রোগীর রক্তে গ্লুকোজ কখন বাড়ে
- ডায়াবেটিকস কোমা কী
- ডায়াবেটিকস কোমার লক্ষণ
- ডায়াবেটিকস রোগের জরুরি অবস্থা শেষ কথা
হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করা কমে যাওয়া
রক্তের সুগারের পরিমাণ বা গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে তাকে হাইপোগ্লাইসোমিয়া বলে।সংক্ষেপে হাইপো হিসেবে চিনে অনেকে।ডায়াবেটিসে আক্রান্ত যেসব রোগীকে ইনসুলিন নিতে হয় তাদের হাইপোগ্লাইসেমিয়া বেশি দেখা যায়। হাইপোগ্লাইসেমিয়া যেকোনো ধরনের ডায়াবেটিস রোগিদের হতে পারে।হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা বক্তে শর্করা কমে যাওয়া ফলে বুক ধরফড়, মাথা ঘোরা থেকে শুরু করে জ্ঞান হারানোর মতো বিপদজনক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই হইপো লক্ষণগুলো দূরত্ব শনাক্ত করতে হবে। বাড়িতে বসে নিজে নিজে চিকিৎসা করা সম্ভব এই রোগে। আপনার যদি অনেকবার সুগার কমে যায় তাহলে আপনি নিজেই লক্ষণগুলো খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন আপনার হাইপোগ্লিসমিয়া হচ্ছে কিনা। একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম লক্ষণ হতে পারে। ট্যাবলেট বা ইনসুলিন দেওয়া হয় রক্তের সরকারের পরিমাণ কমানোর জন্য। কিন্তু অতিরিক্ত ইনসুলিন নেওয়া বা ট্যাবলেট খাওয়া হয়ে যায় তাহলে রক্তের শর্করার পরিমাণ কমে তাহলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।ডায়াবেটিকস রোগের জরুরি অবস্থা মধ্যে হাইপোপ্লাসমিয়া বা রক্তের শর্করা কম থাকলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া প্রতিক্রিয়ার লক্ষণ
হাইপোগ্লাইসেমিয়া প্রতিক্রিয়ার লক্ষণ রয়েছে তা হলো-
- ক্লান্ত অনুভব করা
- অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া
- মাথা ঘুরা
- শরীলে কাঁপুনি হওয়া
- ক্ষুধা লাগ
- বুক ধরফর করা
হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তের শর্করা কমে গেলে সময়মতো চিকিৎসার না করলে আরো কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন-
- খিচুনি
- ঘুম ঘুম লাগা
- জ্ঞান হারিয়ে ফেলা
- বিভ্রান্তি
- দুর্বলতা
- কাজে মনোযোগ দিতে কষ্ট হয়
- বৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
- বেশি ব্যায়াম ও দৈহিক পরিশ্রম করলে
- ইনসুলিন নেওয়ার পর খুব দেরি করে খাবার খেলে
- প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হলে ঔষুধ খেলে
- বমি বা পাতলা পায়খানার জন্য শর্করা কমে যেতে পারে
- খাবার দেরি করে খাওয়াবা কোন বেলা খাবার বাদ দেওয়া
- অতিরিক্ত মদপান বা খালি পেটে মদপান করলে
ডায়াবেটিকস রোগের জরুরি অবস্থা মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়া প্রতিক্রিয়ার লক্ষণ গুলো দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে কি করা উচিত
আপনি যদি বুঝতে পারেন হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলো,তাহলে দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন।যদি এটা সম্ভব না হয় তাহলে ১০ থেকে ১৫ গ্রাম গ্লুকোজ খেয়ে নিন।আপনি এক গ্লাস পানিতে চিনি গুলিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। মিষ্টি, ক্যান্ডি, চকলেট,চিনি মেশানো জুস খেলেও হবে। পরীক্ষা কোন ১৫ মিনিট পর পর। তারপরও যদি কম দেখায় তাহলে আবার গ্রহণ করুন। রক্তের গ্লুকোজ ৬-৭ মিলি মোলের উপরে না ওঠা পর্যন্ত বারবার অ্যাড করতে হবে।
হাইপোগ্লায়সেমিয়া কারণে যদি রোগী অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে জোর করে চিনির পানি খাওয়ানো যাবে না। এমনটা হলে দূরত্ব হাসপাতালে নিয়ে যেয়ে দ্রুত গ্লুকোজ দিতে হবে। সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরে ভালোভাবে দেখতে হবে কেন এমনটা হলো।শৃঙ্খলা মধ্যে আনার চেষ্টা করুন ব্যায়াম ও খাদ্যভ্যাস।ভালো খাবার খেতে হবে সঠিক সময়।সারাদিনের ৬ বার খাবার খেতে হবে। ঘুমানোর আগে হালকা কিছু খাবার খাওয়া উচিত।চিকিৎসকের পরামর্শ নিন আপনার ইনসুলিন বা ওষুধের মাত্রা কমাতে হবে কিনা। বছরে একবার অন্তত কিডনি বা যকৃতের টেস্ট করা উচিত।
আপনি এমন খাবার গ্রহণ করুন যা ধীরে ধীরে শরীরে শর্করা তৈরি করবে। যেমন লাল একটা রুটি, সবজি ডাল দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি, লাল চালের ভাত, দই অথবা গরুর দুধ খেতে পারেন।শর্কারাযুক্ত নাস্তা খেতে হবে। নাস্তা হতে পারে এন প্লাস দুধ, এক পিস পাউরুটি, কয়েকটা বিস্কুট।ডায়াবেটিকস রোগের জরুরি অবস্থা হলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া এই সকল কাজগুলো করা উচিত।
ডায়াবেটিকস রোগীর রক্তে গ্লুকোজ কখন বাড়ে
- ব্যায়ম বা দৈনিক পরিশ্রম না করলে
- পরিমাণে কম ইনসুলিন নিলে
- বেশি খাবার খেলে
- ট্যাবলেট খেতে ভুলে গেলে বা ইনসুলিন না নিলে
- অন্য কোন রোগের চিকিৎসা করার সময় ডায়াবেটিসের চিকিৎসা বন্ধ রাখলে।
- কোন সংক্রমণ বা প্রদাহ জনিত রোগ হলে বা মানসিক বিপর্যস্ত দেখা দিলে
ডায়াবেটিকস কোমা কী
ডায়াবেটিকস কোমার লক্ষণ
শরীরে শর্করা অর্থাৎ গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গেলে রোগী ডায়াবেটিক কোমায় চলে যায়।মৃত্যু হতে পারে।রক্তে গ্লুকোজের ও শর্করা পরিমাণ ঠিক রাখা অতি গুরুত্বপূর্ণ।ডায়াবেটিস কোমার কিছু লক্ষণ গুলো জেনে নেওয়া যাক -
- অনেক বেশি পিপাসা লাগা
- ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া
- প্রস্রাবের শর্কারা পরিমান খুব বেশি বেড়ে যাওয়া।
- অনেক অসুস্থ বোধ করা
- দুর্বল বোধা করা
- বমি বমি ভাব হওয়া
- ঝিমানো
- দ্রুত শ্বাস নেওয়া
- শ্বাসকষ্ট হওয়া
- মাথা ধরা
- শ্বাসে অ্যাসিটোনের গন্ধ বের হওয়া
এই লক্ষণগুলো আপনার মাঝে দেখা দিলে তিন থেকে চার চামচ চিনি বা গ্লুকোজ পানিতে মিশিয়ে সাথে সাথে পান করুন। তাছাড়া এক চামচ মধু বা জেলি অথবা হাপ কাপ ফলের জুস বা পান করুন।১০ থেকে ১৫ মিনিট পর গ্লুকোজের পরিমাণ পরীক্ষা করুন। চার মিলিমোলের কম থাকলে ৫ থেকে ৮ চামচ গ্লুকোজ এক চামচ মধু ও জেলি পান করুন। এতে সমস্যা সমাধান না হলে দ্রুত হাসপাতালে যান। এই কারণে অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যায়। এই ক্ষেত্রে নিয়মিত গ্লুকোজ পরীক্ষা করুন। নিজের সাথে সব সময় শর্করা জাতীয় খাবার যেমন চকলেট রাখুন। ডায়াবেটিস কোমা ডায়াবেটিকস রোগের জরুরি অবস্থা।
ডায়াবেটিকস রোগের জরুরি অবস্থা শেষ কথা
আমরা সকলেই নিশ্চিত বুঝতে পেরেছি ডায়াবেটিকস রোগের জরুরি অবস্থা কি কি হতে পারে। আমরা জেনেছি হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তের শর্করা কমে যাওয়ার কারণ ও এর লক্ষণ এবং হাইপোগ্লিসেমিয়া হলে আমাদের কি করা উচিত। ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে গ্লুকোজ কখন বাড়ি বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস কোমা কি এর লক্ষণ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জেনেছি।এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনার জানা থাকলে ডায়াবেটিকস রোগের জরুরি অবস্থা এগুলোর মধ্যে কোন একটি আপনার মাঝে দেখা দিলে আপনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন ও দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারবেন।
অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url