কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫ টি উপায়
আমাদের শরীরে কোমরে কোন ব্যথা
অনুভব করলে আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি, এটা কোমরের ব্যথা নাকি কিডনির ব্যথা না অন্য
কোন সমস্যা। মানব দেহের ডান পাশে, বাম পাশে কোমরের হাড়ের মাঝখানে কিডনি থাকে।এই
জায়গাতে ব্যথা অনুভব করলেই বুঝে নিতে হবে এটি কিডনির সমস্যা।এক্ষেত্রে আপনার
দ্রুত চিকিৎসক এর পরামর্শ নিন।
অবশ্যই একজন ভালো কিডনি বিশেষজ্ঞ কাছে থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। কিডনির ব্যথা হলে
আপনি কোন ব্যথার ওষুধ না খেয়ে কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫ টি উপায় ফলো করতে
পারেন। এবং অবশ্যই উপকার পাবেন।
সূচিপত্র :কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫ টি উপায়
চলুন কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫ টি উপায় সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জেনে নিই।
বেশি বেশি পানি খেতে হবে
পর্যাপ্ত পানি খাওয়া কিডনির ব্যথা কমানোর গুরুত্বপূর্ণ উপায়। প্রতিদিন দুই থেকে
তিন লিটার পানি খাওয়া উচিত একজন সুস্থ মানুষের। কিডনিতে পাথর থাকলে বেশি বেশি
পানি পান ফলে পাথর বের হয়ে যায় প্রসাবের সাথে। প্রস্রাব কম হলে প্রস্রাব জমা
হয়ে থাকে প্রস্রাবের থলিতে। এর ফলে ইনফেকশন হতে পারে প্রস্রাবে।এইজন্য পানি খেতে
হবে যেন প্রচুর প্রস্রাব হয়। এর ফলে ইনফেকশন হওয়ার ভয় থাকবে না।
আরো পড়ুন: কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
তাছাড়া পর্যাপ্ত পানি খাওয়ার ফলে শরীরের সব জীবাণু প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে
যায়।কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫ টি উপায় এর মধ্যে বেশি বেশি পানি খেতে
হবে।তবে আবার খেয়াল রাখতে হবে বেশি বেশি পানি খেলে ক্লান্তি, বমি বমি ভাব,ঘুম
ঘুম ভাব,অতিরিক্ত প্রসাদ ও মাথা ব্যথা হতে পারে, হার্টের ওপর অপ্রয়োজনে চাপ
পড়তে পারে, এবং কিডনির ছাঁকনির প্রক্রিয়ার ব্যথার ঘটায় অতিরিক্ত পানি,তাই
পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
ব্যথার স্থানে গরম সেঁক দিতে হবে
ব্যথা কমানোর জন্যই গরম সেঁক একটা গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি।হালকা গরম সেঁক ব্যথার
জায়গায় দিলে আরাম পাওয়া যায়। গরম সেঁক দেওয়ার ফলে রক্তনালীর প্রসারণ ঘটে,
রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায়। এর ফলে আরাম অনুভব করে। সাবধানে গরম সেঁক দিতে হবে যাতে
পুড়ে না যায়। কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫ টি উপায় এর মধ্যে ব্যথা স্থানে
গরম সেঁক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। আমাদের যদি এমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় যে, কিডনি
তে কোনো সমস্যা হচ্ছে কাহলে আমরা ব্যথার স্থানে গরম সেঁক দিবো।
বিশ্রাম করতে হবে
বিশ্রাম অনেক সময় অনেক উপকার করে কিডনির ব্যথা দূর করার জন্য। ব্যথা হলে বিশ্রাম
নেওয়া প্রয়োজন। কিডনি সমস্যা কিডনি পাথর থাকলে বেশি কাজকর্ম, বেশি এক্সারসাইজ,
একটু হাঁটাচলা করলে ব্লিডিং হতে পারে। যেভাবে শুয়ে থাকলে আরাম লাগবে ব্যথা কম
হয়, তেমনভাবেই শুয়ে থাকা ভালো। কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫ টি উপায় এর মধ্যে
বিশ্রাম অন্যতম। তাছাড়া আমাদের এমতেই বিশ্রামের প্রয়োজন কেননা শরীরের জোর দিয়ে
কাজ করলে বা মাত্রা অতিরক্ত প্ররিশ্রম করতে যে কোনো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই
আমার যদি পযন্ত বিশ্রাম করি তাহলে শরীর সুস্থ থাকবে।
ভিটামিন সি কম খেতে হবে
আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি। শরীরের শতভাগা শুকাতে, হার
গঠনের জন্য ভিটামিন সি খুবই উপকারী। বেশি পরিমানের ভিটামিন সি খেলে কিডনির ব্যথার
ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। কিডনিতে অক্সালেটে পরিণত হয় ভিটামিন সি খেলে, ফলে এই
অক্সালেট ইভনিং পাথরে পরিণত। তাই কিডনি কিডনির সমস্যা থাকলে ভিটামিন সি পরিমাণ
মতো খাওয়ায় উত্তম।
ব্যাথার সঠিক কারণ বের করতে হবে
আমাদের শরীরের কোনো স্থানে ব্যথা হলে সেটা কি কারণে ব্যথা হচ্ছে তা আমাদের বের
করা খুবই জরুরি। কারণ শরীর কী কারণে ব্যথা হচ্ছে সেটা যদি আমরা বুঝতে না পারি
তাহলে চিতিৎসা সঠিক ভাবে করা যাবে না । আমরা যদি সঠিক ভাবে বুঝতেও না পারি তাহলে
অবশ্যই কোনো ডাক্তরের কাছে গিয়ে পরমর্শ নিতে হবে। তারপরে সেই অনুপাতে আমাদের
চিতিৎসা শুরু করতে হবে। নিচে কিছু লক্ষণ দেওয়া হয়েছে । সেই লক্ষণ গুলো দেখা দিলেও
বুঝা যাবে ব্যথার সঠিক কারণ। তাহলে চলুন দেখা যাক কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫
টি উপায় মধ্যে ব্যথার সঠিক কারণ গুলোর লক্ষণ চিনা যায় কিভাবে।
আরো পড়ুন: কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা ব্যায়াম
কিডনিকে পাথর হবার লক্ষণ : আমাদের শরীরের কিছু উপাদান আছে
সেগুলোর পরিমাণ অনেক বেড়ে গেলে কিডনিতে পাথর হয়। পেটের নিচে পিঠের ডানে বা
বাঁয়ে মাঝে মৃদ ব্যথা হলে বুঝতে হবে এটি কিডনির পাথরের জন্য ব্যথা হচ্ছে।
প্রাস্রাব হালকা রক্ত বা লাল প্রসাব হয় কিডনি পাথরের আরো একটি লক্ষণ। কিডনি
ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫ টি উপায় কিডনিকে পাথর হবার লক্ষণ মধ্যে পিঠের কুচকির
দিকে প্রচণ্ড ব্যথা হলে বুঝতে হবে প্রাস্রাব এর নালি পাথর নেমে এসেছে। এর সঙ্গে
জ্বর, বমি ইত্যাদি হয়ে থাকতে পারে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিডনিতে পাথর এর কোন
লক্ষণ না ও থাকতে পারে। কডনি তে পাথর যদি মূত্রনালীতে আটকে যায় তাহলে কিডনি ফুলের
যাওয়া সম্ভবনা থাকে। এই সকল লক্ষণ গুলো দেখা দিলে দ্রুত ইউরোলজিস্টের নিতে হবে
এবং পাত্র গুলো বের করতে হবে।
কিডনিতে ইনফেকশান হবার লক্ষণ : কিডনিতে ইনফেকশন হওয়া বড় রোগের আভাস
দেয়। কিডনি তে ইনফেকশন থাকলে কিডনি অকেজো হয়ে যায়। পুরো শরীর অকেজো যেতে পারে
কিডনি অকেজো হয়ে গেলে। কিডনিতে ইনফেকশন হয়ে থাকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমের কারণে।
কিডনি ব্যথা দূর কর ৫ টি উপায় এর মধ্যে কিডনি ইনফেকশন হবার লক্ষণগুলো হলো-
- বারবার প্রস্রাব হওয়া।
- হাত পা বা পিঠের পেশিতে ঘন ঘন খিচুনি টান লাগা।
- পায়ের পাতা বা পায়ের গোড়ালি ফুলে যাওয়া।
- মুখ বা চোখের কোল হঠাৎ ভুলে যাওয়া।
- ত্বক সব সময়ে জন্য শুষ্ক হয়ে থাকা।
এই সকল লক্ষণ গুলো দেখা দিলে দূরত্ব ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে।
কিডনি ফেইলিওর হবার লক্ষণ: যখন কিডনির তার কাজ করতে ব্যর্থ হয়
অর্থাৎ রক্ত পরিশোধন করতে পারেনা। এতে রক্ত দূষিত বজ্র পদার্থ জমা হতে থাকে।
কিডনির স্বভাব না করতে পারাকে কিডনির ফেইলিউ বলা হয়।কিডনির রক্ত পরিশোধন করতে
ব্যর্থ হয় যখন কিডনির ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ অকেজো হয়ে পড়ে। রক্তে এই দূষিত বজ্র
পদার্থ জমা হয়ে রক্তের ভারসাম্য নষ্ট করে। কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫ টি
উপায় মধ্যে কিডনি ফেইলিওর হওয়ার কিছু লক্ষণগুলো হলো -
- প্রাস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
- প্রাস্রাবে বেশি ফেনা হওয়া
- প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া
- ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়
- চোখের পাশে ফুলে যায়
- বমি বমি ভাব হয়
- পায়ের গোড়ালি ও পায়ের পাতা ফুলে যাওয়ায়
- ঘুমের সমস্যা হয়
- এনার্জি কম হয় ক্লান্তি অনুভব হয়
- খিঁচুনি হয়
- রাতের বেলায় ঘন ঘন প্রস্তাব হওয়া
- ব্যথা অনুভাব করা
এই সবগুলো কিডনি ফেইলিওর হবার লক্ষণ।
কমর ব্যাথা আছে কিনা: আমরা মনে করি কোমরের ব্যথা হলেই যে কিডনির
সমস্যা হয়েছে। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই কোমরের ব্যথা মানেই কিডনি সমস্যা
নয়।বেশিরভাগ রোগীর এক কোমর ব্যথা হলে মনে করেন তাদের কিডনির সমস্যা হয়েছে।
কিন্তু সত্যি কথা হল কিডনিতে খারাপ কোন ধরনের সংক্রমণ, ইনফেকশন, নিতে পাথর না হলে
ব্যথা হওয়ার কথা না।কোমর ব্যথার নানা কারণ রয়েছে।এটি নির্দিষ্ট অংশ জুড়ে ব্যথা
সৃষ্টি হয়। যেমন ওঠাবসা, মেরুদন্ড নড়াচড়া, ঝোকা, হাঁটা দাঁড়ানো, অনেকক্ষণ ধরে
কাজ করা এই সকল ব্যথা বাড়ে ও কমে।বিশেষ করে কিচ্ছু নেই কোমরের দিকের ব্যথা বা
পায়ের দিকে ব্যথা। কোমরের ব্যথা বিভিন্ন আকার জনিত কারণে হতে পারে। তবে কিডনিতে
ইনফেকশন, পাথর কিডনি জনিত রোগের ক্ষেত্রে কোমরে ব্যথা হতে পারে। জনিত সমস্যা হলে
ফিজিওথেরাপিস্ট দেখিয়ে ব্যথার ভালো করে চিকিৎসা করতে হবে।
কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫ টি উপায় এর শেষ কথা
উপরের আলোচনা থেকে আশা করি এতোটুকু বুঝতে পেরেছেন যে কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া
৫ টি উপায় সম্পর্কে আপনাদের জানা থাকলে আপনার বাসায় বসে থেকে এই উপায়গুলো
অবলম্বন করতে পারব। আপনারা অবশ্যই উপকৃত হবেন।এই সকল উপায় ও লক্ষণগুলো আপনার
জানা থাকলে কোন প্রকারের ব্যথার ওষুধ সেবন না করে ঘরে বসে কিডনির ব্যথা দূর করতে
পারবেন কিডনি ব্যথা দূর করার ঘরোয়া ৫ টি উপায় এর মাধ্যমে।
অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url