বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি - বেগম রোকেয়ার জীবনী

বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি? এই বিষয় সর্ম্পকে আমরা অনেকেই অনেক কিছু জানি না। তাই আমরা বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি? এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। আমরা হয়তো কেউ বেশি জানি ,কেউবা একটু কম জানি , আবার অনেকেই ভুল জানে, আসলে সঠিক কোনটি আমাদের এই পোস্টটি পরলে আপনি হয়তো সঠিকটি জানতে পারবেন । 

বেগম রোকিয়া মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত।বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি? এই সম্পর্কে আমরা আজকে জানব। বেগম রোকেয়া ছিলেন নারী জাগরণের অগ্রদূত । তিনি অনেক গ্রন্থ সাহিত্য, ও কাব্য রচনা করেছেন। তাই আমরা আজকে জানবো বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি? সেই সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা  হলো।

সূচিপত্রঃ  বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি - বেগম রোকেয়ার জীবনী 

বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রচিত গ্রন্থ- মতিচুর, অবরোধবাসিনী, পদ্মরাগ ইত্যাদি ছাড়াও তিনি অনেক কাব্য রচনা করেছেন। এরমধ্যে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রচিত প্রথম গ্রন্থ মতিচুর। আর বেগম রোকিয়া শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি? বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ অবরোধবাসিনী।

 আরো পড়ুনঃ রোকেয়া দিবস কবে - বেগম রোকেয়া দিবস কবে

বেগম রোকেয়ার জীবনী

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন একজন চিন্তাবিদ সাহিত্যিক নারীবাদী। তিনি মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত। তিনি নারীদের ঘরের কোণে বসে না থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছ। সেই সময়ে নারীদের ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। কোরআন শিক্ষা ও ঘরের কাজ ছাড়া নারীদের পড়াশোনা করার কোনো সুযোগ ছিল না। তাই বেগম রোকেয়া মনে করেন নারীদের ঘরকন্নার কাজ সহ বাহিরে ও পড়াশোনা করে শিক্ষিত হতে হবে। নারীরা শিক্ষিত না হলে সমাজ কখনো এগিয়ে যেতে পারবেনা। তাই তিনি নারী শিক্ষার প্রতি মনোনিবেশ করেন। বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি? এর জন্য কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়েছে তা আমরা জানবো।

বেগম রোকেয়ার জন্ম

বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯  ডিসেম্বর পায়রাবন্দ গ্রামে মিঠাপুকু্‌র উপজেলার রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জহির উদদীন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার ছিলেন একজন শিক্ষিত জমিদার। তার মাতা রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী। বেগম রোকিয়া দুই বোন তিন ভাই। বেগম রোকেয়ার পিতা আবু আলী হায়দার আরবি উর্দু ফারসি বাংলা হিন্দি এবং ইংরেজী ভাষায় পারদর্শী। কিন্তু এত শিক্ষিত হবার পরও তিনি মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে ছিলেন রক্ষণশীল বেগম রোকেয়ার বড় ভাই মোহাম্মদ ইব্রাহিম আবুল আসাদ ও খলিলুর রহমান আবু সাবের ছিলেন বিদ্যানুরাগী। বেগম রোকেয়ার বড় বোন তিনিও ও সাহিত্য অনুরাগী ছিলেন।

বেগম রোকেয়ার শিক্ষা

বেগম রোকেয়ার শিক্ষা সাহিত্য চর্চা এবং সামগ্রিক মূল্যবোধ গঠনে ভূমিকা পালন করে তার দুই ভাই ও বোন করিমুন্নেসা। তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থায় মেয়েদের ঘরের ভেতরে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের কোনো সুযোগ ছিল না। পাঁচ বছর বয়সে বেগম রোকিয়া মায়ের সঙ্গে কলকাতায় বসবাস করেন এবং সেই সময় একজন শিক্ষকের নিকট তিনি কিছুদিন লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সমাজের কারণে তাও বন্ধ করতে হয়েছে ।

বেগম রোকেয়া তার বড় ভাই ও বোনের সহায়তায় তিনি বাংলা ,ইংরেজী, উর্দু ,ফারসি এবং আরবি আয়ত্ব করেন । বেগম রোকেয়ার জ্ঞানপিপাসা ছিল অসীম। গভীর রাতে চুপি চুপি বালিকা মোমবাতির আলো তে ইংরেজি ও বাংলা পাঠ গ্রহণ করতেন। বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি কিভাবে এটি শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে তা আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবো।

বেগম রোকেয়ার সাহিত্য চর্চার সূচনা

১৯০২ সালে সাহিত্যিক হিসেবে বেগম রোকেয়ার আত্মপ্রকাশ ঘটে। বিভি তার রচনা সবার পছন্দ হয়ন্ন সময় তার রচনা নানান পত্রিকায় ছাপা হতো। বেগম রোকেয়ার রচিত লেখা পিপাসা প্রথম প্রকাশিত হয় কলকাতায় নভপ্রভা নামক পত্রিকায় । ১৯০৫ সালে প্রথম ইংরেজি রচনা সুলতানার ড্রিম বা সুলতানার স্বপ্ন মাদ্রাজ থেকে প্রকাশিত হয়। এটি একটি পত্রিকায় ছাপা হয়। তার রচনা সবাই পছন্দ কর। তিনি এভাবেই সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি তা আমরা জানতে পারব সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে। বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি? শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ অবরোধবাসিনী এছাড়াও তিনি একের পর এক প্রবন্ধ কাব্য লেখেন।

আরো পড়ুনঃ বিশ্ব শিশু দিবস কবে - বিশ্ব শিশু দিবস ২০২২

বেগম রোকেয়ার জীবন সংগ্রাম

১৮৯৮ সালে বেগম রোকেয়ার বিয়ে হয়। বিহারের ভাগলপুর নিবাসী উর্দুভাষী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে। সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, তদুপরি সমাজসচেতন কুসংস্কার মুক্ত এবং প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন । স্বামীর উৎসাহের কারণে বেগম রোকিয়া দেশী-বিদেশী লেখকদের সঙ্গে নিবিড় ভাবে পরিচিত হবার সুযোগ পান । এবং তিনি ক্রমশ ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। তার সাহিত্য চর্চার সূত্রপাত ঘটে স্বামীর অনুপ্রেরণা.১৯০২ সালে পিপাসা নামে একটি বাংলা গল্প লিখে সাহিত্য জগতে তার অবদান রাখা শুরু হয়। তারপর থেকে শুরু হয় তার একের পর এক লেখা মতিচুর প্রবন্ধ গুলো এবং সুলতানার স্বপ্ন এর মত নারীবাদী প্রবন্ধ তিনি লিখে ফেলেন।

বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি? বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ অবরোধবাসিনী। বেগুম রকেয়া স্কুল পরিচালনা ও সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিজেকে সাংগঠনিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ততা রাখেন।

বেগম রোকেয়ার সাংগঠনিক কর্মকান্ড

বেগম রোকেয়ার স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি নারীশিক্ষা বিস্তার ও সমাজ সেবায় আত্মনিয়োগ করেন.১৯০৯ সালের ১ অক্টোবর স্বামীর অর্থে পাঁচটি ছাত্রী নিয়ে তিনি সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল স্থাপন করেন। কিন্তু পারিবারিক কারণে তিনি ভগলপুর ছেড়ে কলকাতায় বসবাস শুরু করতে বাধ্য হন।১৯১৬ সালের মধ্যে তার ছাত্রী সংখ্যা ১০০ বেরিয়ে যায়.১৯১৬ সালে তিনি মুসলিম বাঙালি নারীদের সংগঠন আঞ্জুমান এর  খাওয়াতিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন।১৯২৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলায় নারী শিক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে তিনি সভাপতিত্ব করেন।১৯৩০ সালে বঙ্গীয় মুসলিম সম্মেলনে বেগম রকেয়া বাংলা ভাষার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন। সেই যুগে এটি ছিল দুঃসাহসিক কাজ।

বেগম রোকেয়ার সাহিত্য রচনা

বেগম রোকেয়ার সাহিত্য রচনা সম্পর্কে আমরা জানবো। বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি? এবং কিভাবে তিনি একের পর এক সাহিত্য প্রবন্ধ রচনা করেন। বেগম রোকিয়া নারীবাদী চিন্তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন মতিচুর প্রবন্ধের মাধ্যমে। বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি এই  প্রবন্ধগুলোর মাধ্যমে তা প্রকাশ পায়। মতিচুর , সুলতানার স্বপ্ন , পদ্মরাগ , অবরোধবাসিনী ইত্যাদি তার সৃজনশীল রচনা। বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি তার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ অবরোধবাসিনী। বেগম রোকেয়ার লেখা গুলোতে নারী জাগরণ নারী শিক্ষার অগ্রসর , নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন। ধর্মের নামে নারীর প্রতি অবিচার রোধ করতে চেয়েছেন। নারীরা শিক্ষিত না হলে নারী মুক্তি আসবে না তা তিনি বলেছ। বেগুম রকেয়া নারীদের অলংকার ত্যাগ করে আত্মসম্মানবোধ উজ্জীবিত হয়ে শিক্ষা অর্জনে সচেষ্ট হতে আহ্বান জানিয়েছেন।

বেগম রোকেয়ার মৃত্যু 

শিক্ষার ক্ষেত্রে বেগম রোকেয়ার অবদান ছিল অনেক যা বলে শেষ করা যাবেনা। বেগম রোকেয়া ছিলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি নারীদের সমাজের শিক্ষিত হয়ে শিক্ষার পথে অগ্রসর হতে বলেছেন। নারী শিক্ষার প্রতি তিনি জোর দিয়েছ। নারীদেরকে ঘরে না বসে ঘরের কাজ কর্মের পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত হতে বলেছে। বেগম রোকেয়া নারী শিক্ষায় পূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি এই পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে নারীরা এত দূরে এগোতে পারত না।

মৃত্যুঃ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন  ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর ৫২ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

আরো পড়ুনঃ প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর উপায় - লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়

শেষ কথাঃ বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি - বেগম রোকেয়ার জীবনী 

বেগম রোকিয়া শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি, তার জীবনী শিক্ষাব্যবস্থা, জীবন সংগ্রাম ,সাহিত্যচর্চা ,জন্ম-মৃত্যু ইত্যাদি ছাড়াও অনেক কিছু আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারলাম । বেগুম রকেয়া সারা জীবন নারী শিক্ষার প্রতি অগ্রসর হয়েছেন। সমাজে নারীদের মূল্য কতটা তা তিনি বুঝাতে চেয়েছেন নারীরা শিক্ষিত না হলে সমাজ শিক্ষিত হবে না। তিনি সমাজের কুসংস্কার ধ্যান ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে নারী শিক্ষায় শিক্ষিত হতে বলেছে। বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি তার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ সম্পর্কে আমরা জানলাম তার প্রত্যেকটা গ্রন্থে নারী শিক্ষা সম্পর্কে বলা হয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url