কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
কলমি শাক কম বেশি আমরা সবাই চিনি । কলমি শাক বাজারে খুব সহজেই পাওয়া যায়। প্রতিটি
জিনিসেরই উপকার থাকলে অপকার ও অবশ্যই থাকে সে ক্ষেত্রে কলমি শাকের উপকারিতা ও
অপকারিতা উভয়ই আছে। কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা গর্ভাবস্থায়
খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিটামিন। ভিটামিন সি রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক
রেখে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে। কলমি শাক ডায়াবেটিকস প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে
পাড়বেন।
কলমি এক প্রকারের অর্ধ জলজ উদ্ভিদ যা আমরা শাক হিসেবেই খেয়ে থাকি। এতে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আঁশ, হিমোগ্লোবিনসহ আরো বিভিন্ন উপাদান। তো চলুন কলমি
শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
সূচীপত্র : কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
কলমি শাকের ক্ষতিকর দিক
কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা দুইটাই আছে। কলমি শাকের ক্ষতিকর দিক গুলো হলো
যাদের কিডনিতে পাথর আছে তারা এই শাক খেলে পাথর আরো বৃদ্ধি পাবে। তাই যাদের ইউরিক
এসিডের সমস্যা কিডনির সমস্যা আছে তারা এই শাক খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
কলমি শাকের ঔষধি গুন
ফোড়া হলে কলমি পাতা একটু আদাসহ বেটে ফোড়ার চারপাশে লাগালে ফোড়া গলে যাবে। কোষ্ট
কাঠিন্য হলে কলমি শাকের সাথে আঁখের গুড় মিশিয়ে শরবত বানিয়ে এক সপ্তাহ প্রতিদিন
সকাল সন্ধ্যা খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। আমাশয় হলেও এই শাক অনেক কাজ করে।
গর্ভাবস্থায় মেয়েদের শরীরে পানি উৎপাদনে সাহায্য করে। কলমি শাকের উপকারিতা ও
অপকারিতা উভয়ই আছে। একজন গর্ভবতী মহিলার প্রথম তিনমাস অনুযায়ী দৈনিক শক্তির ১.০৬%
পূরণ করে থাকে, দ্বিতীয় তিনমাস অনুযায়ী ০.৮৬% পূরণ করে এবং শেষ তিনমাস অনুযায়ী
০.৭৬% পূরণ করে থাকে।
আরো পড়ুন: কিডনি রোগের কারণ,লক্ষণ ও প্রতিকার
কলমি শাক ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে । গর্ভাবস্থায় ভিটামিন সি খুবই
গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিটামিন। আমাদের দেশে গর্ভাবস্থায় প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ
রক্তশূন্যতায় ভুগেন। ভিটামিন সি রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রেখে
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে। আবার ভিটামিন সি গর্ভাবস্থায় প্রি- একলামশিয়ার মতো
জটিল রোগ থেকে রক্ষা করে। ১০০ গ্রাম কলমি শাকে ভিটামিন সি থাকে ৫৫ মিলিগ্রাম
রয়েছে।
আবার গর্ভাবস্থায় শিশুর যাবতীয় জন্মগত ত্রুটিসমূহ থেকে রক্ষা করে ফলিক এসিড।
প্রতি ১০০ গ্রাম কলমি শাকে ৫৭ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড রয়েছে। যা একজন গর্ভবতী
মহিলার দোইনিক চাহিদার ১৪.২৫% পূরণ করে। কলমি শাক রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য
করে। কলমি শাকে আয়রন রয়েছে ১.৬৯ মিলিগ্রাম। ১০০ গ্রাম কলমি শাকে জিংক এর পরিমাণ
০.১৮ মিলিগ্রাম । গর্ভকালিণ ক্লান্তি ও অবসন্নতা রোধ করতে সাহায্য করে জিংক ।
কলমি শাক খেলে কি হয়
কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা গর্ভাবস্থায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ
একটি ভিটামিন। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবেও কাজ করে এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ায়। এটি রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রেখে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ
করে। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকার কারণে এই শাক অ্যানিমিয়ার রোগীদের জন্য অনেক
উপকারী। এটি বসন্তের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে। কলমি শাক নিয়োমিত খেলে অনিদ্রা
দূর করা যায়।
পোকামাকোড় বা মৌমাছি কামড়ালে কলমি শাকের পাতা ডগাসহ রস করে লাগালে যন্ত্রণা কমে
যায়। আবার যদি শিশুদের মায়ের দুধ কম হয় তবে এই শাক খেলে মায়ের দুধ বৃদ্ধি পায়।
হাত - পা বা শরীরে জ্বালাপোড়া করলে কলমি শাকের রসের সাথে দুধ মিশিয়ে সকালে খালি
পেটে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
কলমি লতার উপকারিতা
কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা উভয়ই আছে। কলমি শাকে আছে অনেক পরিমাণে ভিটামিন
সি। অ্যান্টিওক্সিডেন্ট হিসেবেও এটি কাজ করে এবং এর মাঝে শরীরের বিভিন্ন রোগ
প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া এই শাকে অনেক বেশি পরিমাণে আয়রন থাকার কারণে এই
শাক অ্যানিমিয়ার রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। কলমি শাক বসন্তের প্রতিষেধক হিসেবেও
অনেক কাজ করে ।
আরো পড়ুন: কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা ব্যায়াম
কলমি শাকের বৈশিষ্ট্য
কলমি এক প্রকারের অর্ধ জলজ উদ্ভিদ যা আমরা শাক হিসেবেই খেয়ে থাকি। এতে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আঁশ, হিমোগ্লোবিনসহ আরো বিভিন্ন উপাদান। কলমি শাকের প্রতি
১০০ গ্রামে রয়েছে ১৯ কিলোক্যালরি শক্তি। যা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের দৈনিক
শক্তির ০.৭৬% অভাব পূরণ করে থাকে এবং একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলার দৈনিক শক্তির
০.৮৩% অভাব পূরণ করে থাকে। তাছাড়া কলমি শাকে রয়েছে শর্করা ৩.১ গ্রাম, খাদ্যআঁশ
২.১ গ্রাম, আমিষ ২.৬ গ্রাম, ফ্যাট ০.২ গ্রাম, সোডিয়াম ১১৩ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম
৭৭ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৩১২ মিলিগ্রাম, জিংক ০.১৮ মিলিগ্রাম।
কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা এর শেষকথা
কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। পোস্টি পড়ে
বুঝা যায় যে কলমি শাক আমাদের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এটি আমাদের দেহের
বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে। এতে আছে ভিটামিন সি, যা গর্ভাবস্থায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ
একটি ভিটামিন। সুতরাং বলা যায় যে কলমি শাক আমাদের রোগ প্রতিরোধ খমতা বাড়ায় এবং
শরীরকে সুস্থ রাখে।
অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url