প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা

মানুষের শরীরে অনেক ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। কোনো না কোনো অসুস্থতা মানুষের শরীরে বাসা বেধে থাকে। বর্তমানে সুস্থ মানুষ দেখাই যায় না। বর্তমানে একটা অসুখ মানুষের খুবই হচ্ছে আর সেটা হলো প্রসাবে জ্বালাপোড়া। নারী, পুরুষ উভয়েরই এই অসুখ টা বর্তমানে খুবই দেখা দিচ্ছে।

আজ এই আর্টিকেল টি প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে লেখা হলো। আজকের এই আর্টিকেল টি ভালোভাবে পড়লে প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে অনেক কিছু শেখা যাবে।

সূচিপত্রঃপ্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা

প্রসাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেনো হয়

প্রসাবে জ্বালাপোড়া এই রোগ টা এখন বেশিরভাগ মানুষেরই হয়ে থাকে। এই রোগ টা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। এক এক জনের ভিন্ন ভিন্ন  কারণে এই রোগ টা হয়ে থাকে। তবে প্রধান কারণ হলো পানি কম পান করা। অনেকে আছে একেবারেই পানি কম পান করেন। পানি কম পান করার জন্য প্রসাবে জ্বালাপোড়া এই রোগ টা হতে পারে। মেয়েদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া হওয়ার আরও একটি বিশেষ কারণ রয়েছে। মেয়েদের যে প্রতিমাসে ঋতুস্রাব হয়ে থাকে তার জন্য মেয়েরা ন্যাপকিন বা কাপড় ব্যবহার করে থাকে। এই কাপড় বা ন্যাপকিনের সাথে জীবানু বা ব্যাকটেরিয়া মুত্রনালিতে প্রবেশ করে এবং সংক্রমের সৃষ্টি করে থাকে। 

আবার অনেক সময় শারিরিক মেলামেশার কারণেও প্রসাবে জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে। তাই এ সকল বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। মেয়েদের এই ধরণের সমস্যা হওয়ার কারণগুলো আরও বেশি। মেয়েদের মুত্রনালি এবং পায়ুপথ খুব কাছকাছি হওয়ার কারণে পায়ুপথের মাধ্যমে অনেক ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস মুত্রনালিতে প্রবেশ করে, ফলে প্রসাবের জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হয়। প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে। আজকে এই আর্টিকেল টি ফলো করলে প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাবে।

প্রসাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করনীয়

কম বেশি সকল শ্রেণীর মানুষের এই সমস্যা টা হয়ে থাকে। প্রসাবে জ্বালাপোড়া হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন-পানি কম পান করা, বেশি সময় ধরে রোদে থাকলে শরীর দিয়ে ঘাম বের হয়ে যায়, ফলে শরীর পানি শূণ্য হয়ে যায়। তখন প্রসাবে জ্বালাপোড়া হতে পারে। মেয়েদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবের সময় ন্যাপকিন বা কাপড় ব্যবহারের জন্যও প্রসাবে জ্বালাপোড়া হতে পারে। প্রসাবে জ্বালাপোড়া  ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে।
এ সময় বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। স্যালাইন, লেবু পানি বা তরল খাবার ক্ষেতে হবে। ঠান্ডা জাতীয় খাবার খেলে তাড়াতাড়ি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। প্রসাবে জ্বালাপোড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা সমস্যা।এটা থেকে অনেক সময় ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ ও হয়ে যেতে পারে। তাই এই ধরণের রোগ যাতে না হয়,সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

পুরুষের প্রসাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয়

প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে। পুরুষের প্রসাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। মুত্রথলি বা ব্লাডারে প্রসাব জমে থাকলে তাতে জীবাণু বেড়ে উঠার সম্ভাবনা থাকে এবং তখন প্রসাবে জ্বালাপোড়া হয়। পুরুষ মানুষের বয়স বেশি হলে তাদের প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে যায়, যার ফলে প্রসাব করার পরে মুত্রথলিতে বেশ খানিকটা প্রসাব রয়েই যায়। যেখান থেকে জীবাণু সৃষ্টি হয় এবং প্রসাবে জ্বালাপোড়া শুরু হয়।

আবার অনেক সময় দেখা যে, পুরুষদের মুত্রনালির নিচের দিকে পাথর বা টিউমার হওয়ার কারণেও প্রসাব জমে থাকে এবং সেখান থেকে জীবানু দেখা দেয়। অনেক সময় প্রসাবের জন্য নল বা ক্যাথেটার পড়ানো হয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে ও সংক্রমণের ঝুকি বেড়ে যায়। প্রসাবে জ্বালাপোড়া হলে অনেক সমস্যার স্মমুখীন হতে হয়। যেমন,তলপেটে ব্যাথা হয়, প্রসাব করতে কষ্ট বা যন্ত্রণা হয়, ঘন ঘন প্রসাব হয় কিন্তু সামান্য পরিমাণ প্রসাব হয় এবং জ্বালাপোড়া হয় অনেক বেশি। প্রসাবের অনেক দুর্গন্ধ হয় এবং ঘোলাটে হয়। এছাড়াও জ্বর,বমি,বমি ভাব হতে পারে। প্রসাবের সাথে রক্তও বের হয়ে আসে। 

এসব লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে এবং যেগুলো পরামর্শ দেয়, সেগুলো মেনে চলতে হবে। তা না হলে এই রোগ থেকে বড় ধরণের রোগের দেখা দিতে পারে। আর বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। মানব দেহে পানির অভাব দেখা দিলেই প্রসাবে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। তাই বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।

মহিলাদের প্রসাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয়

প্রসাবে জ্বালাপোড়া এই রোগ টা বেশির ভাগ সময় মেয়েদেরই হয়ে থাকে। পুরুষদেরও হয়, তবে মেয়েদের এই সমস্যা টা বেশি দেখা দেয়। মেয়েদের এই সমস্যা টা বেশি হওয়ার কারণ ও রয়েছে। এই রোগের প্রধান কারণ হলো পানি কম পান করা। এছাড়া ও নারী,পুরুষ ভেদে কারণ গুলো আলাদা রকমের হয়ে থাকে। মেয়েদের প্রতি মাসে ঋতুস্রাব হওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরণের ন্যাপকিন বা কাপড় ব্যবহার করে থাকে। এগুলো ব্যবহারের ফলে অনেক সময় জীবানুর কারণে ইনফেকশন হয়ে যায় আর তখনই প্রসাবে জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যায়।

আবার মেয়েদের পায়ুপথ এবং মুত্রনালি কাছাকাছি হওয়ার জন্য পায়ুপথের মাধ্যমে মুত্রনালি দিয়ে জীবানু প্রবেশের ফলে এই সস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। এজন্য মেয়েদের উচিত ঋতুস্রাবের সময় ব্যবহৃত ন্যাপকিন যেনো ভালো মানের হয়, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সবচেয়ে ভালো হবে কাপড় ব্যবহার করা। ব্যবহারের পর ব্যবহৃত কাপড় পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে রোদে শুখিয়ে রেখে দিতে হবে। যাতে কোনো রকম জীবাণূ স্পর্শ না করে। এই বিষয়ে খুবই খেয়াল রাখতে হবে। 

তারপরও যদি প্রসাবে জ্বালাপোড়া অনুভব করেন, তাহলে প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা করতে হবে। প্রসাব করার পরে গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। নেকরা দিয়ে সন সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। ঠান্ডা জাতীয় খাবার খেতে হবে। ডাবের পানি, লেবুর পানি, শরবত, আখের রস এই ধরনের পানীয় জাতীয় খাবার খেতে হবে। তারপরও যদি কাজ না হয় তাহলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। চিকিৎসক যেভাবে চলার পরামর্শ দেয় সেইভাবে চলতে হবে।চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

প্রসাবে ইনফেকশন হলে কি ঔষধ খেতে হবে

মানব দেহে অনেক ধরণের রোগের সমারহ। কোনো মানুষই সম্পুর্ণ ভাবে সুস্থ নেই। কোনো না কোনো অসুস্থতা মানুষের শরীরে বাসা বেধে থাকে। প্রসাবে ইনফেকশন এই সমস্যা টা বেশিরভাগ মানুষের হয়ে থাকে।প্রসাবে জ্বালাপোড়া এই সমস্যা টা অনেক কষ্টদায়ক।প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে, সেগুলো মেনে চলতে হবে।তাহলে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। প্রসাবে জ্বালাপোড়া হলে অনেক সমস্যা হয়। পেট ব্যথা হয়,ঘন,ঘন প্রসাবের চাপ দেয় কিন্তু প্রসাব হয় না।
অনেক জ্বালাপোড়া হয়। অনেক সময় রক্ত বের হয়। তখন আর প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা বা প্রাথমিক চিকিৎ্সার ওপর নির্ভর করে বসে থাকা যাবে না। এরকম সিরিয়াস অবস্থা হয়ে গেলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে এবং ভালোভাবে চিকিৎ্সা করাতে হবে। সমস্যা যখন বেশি আকার ধারণ করে, তখন ডাক্তার এর কাছে গেলে, ডাক্তার ভালোভাবে দেখে ঔষধ দিবে। প্রসাবে জ্বলাপোড়া হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খেতে হবে। প্রসাবে ইনফেকশন হলে একজন ডাক্তার সাধারনত যেসব এন্টিবায়োটিক দিয়ে থাকে-সেফট্রিয়াক্সোন, সেফালেক্সিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, নাইট্রোফুরানটাইন।

এইসব এন্টিবায়োটিক ঔষধ নিজে নিজেই কোনো ফার্মেসী থেকে কিনে খাওয়া যাবে না।ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এগুলো ঔষধ খাওয়া যাবে না। ডাক্তার কতদিনের জন্য এন্টিবায়োটিক লিখবেন বা কতদিন পর্যন্ত রোগী কে এন্টিবায়োটিক খেতে হবে। তা পুরোটাই নির্ভর করে রোগীর ওপর। রোগী যদি মহিলা হয় এবং সেই মহিলা যদি গর্ভবতী হয়।তাহলে কি ধরনের ঔষধ দিতে হবে তা একমাত্র ডাক্তারই জানে। এই জন্যই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনো কোনো ঔষধই খাওয়া উচিত নয়।

প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে শেষ কথা

প্রসাবে জ্বালাপোড়া থেকে অনেক সময় মারাত্বক রোগের সৃষ্টি হয়।অনেক সময় প্রসাবের জ্বালাপোড়া ভালো হতেই চায় না। ফলে দীর্ঘদিন প্রসাবে জ্বালাপোড়া থাকার ফলে ঘা দেখা দেয়। সেই ঘা থেকে মারাত্বক রোগের সৃষ্টি হয়। এমনকি ক্যান্সারের মতো মরণব্যধিও হতে পারে।তাই সব সময় খেয়াল রাখতে হবে।যাতে এই ধরণের রোগ না হয়।সব সময় পরিষ্কার থাকতে হবে। বাথরুমে পরিষ্কার পানি ব্যবহার করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url