বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ

আমরা বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ জানব। আমরা গণিতের অনেক কিছু দেখতে পায় বা অনেক কিছু ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এসবের উৎপত্তি কোথায় বা কিভাবে তা জানি না । এমনকি অনেকর সংজ্ঞাও জানি না । তবে এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ সর্ম্পকে জানা যাবে। সভ্যতার শুরু লগ্ন থেকে সংখ্যার প্রয়োজন অনুধাবন করা হয়েছিল। কেননা তখন মানুষ তার প্রয়োজন বুঝতে পারে কিন্তু সংখ্যা না আসায় অসুবিধার সৃষ্টি হত। কেবল মাত্র তখন দুই এক এব ব্যবহার ছিল এবং বিভিন্ন বস্তুর চিহ্নের মাধ্যেমে সংখ্যার প্রয়োজন মেটাত। তারপর আস্তে আস্তে  সভ্যতার উন্নয়নে মানুষের প্রয়োজনে এই সংখ্যার সৃষ্টি। বর্তমানে এই সংখ্যা বিভিন্ন ধরনের সংখ্যায় ভাগ করা হয়েছে। তাই আমরা আজ বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ জানব। 

সূচীপত্র:বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ

সংখ্যার প্রকারভেদ

 সংখ্যাকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা:
  • বাস্তব সংখ্যা 
  • অবাস্তব সংখ্যা
বাস্তব সংখ্যাকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
  • মূলদ সংখ্যা
  • অমূলদ সংখ্যা 
মূলদ সংখ্যাকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
  • পূর্ণসংখ্যা
  • ভগ্নাংশ সংখ্যা
পূর্ণসংখ্যাকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা:
  • ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা বা স্বাভাবিক সংখ্যা
  • ঋণাত্মক  পূর্ণসংখ্যা 
  • শূন্য 
ভগ্নাংশ সংখ্যা আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয় । যথা :
  • সাধারণ ভগ্নাংশ সংখ্যা
  • দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যা 
সাধারণ ভগ্নাংশ সংখ্যাকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয় । যথা :
  • প্রকৃত ভগ্নাংশ সংখ্যা
  • অপ্রকৃত ভগ্নাংশ সংখ্যা
দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যাকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয় । যথা :
  • সসৗম ভগ্নাংশ সংখ্যা
  • অসৗম ভগ্নাংশ সংখ্যা
  • আবৃত্ত ভগ্নাংশ সংখ্যা
ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা বা স্বাভাবিক সংখ্যাকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয় । যথা:
  • এক (01)
  • মৌলিক সংখ্যা 
  • যৌগিক সংখ্যা  

বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ

বাস্তব সংখ্যা কাকে বলে?
বাস্তব সংখ্যা: আমাদের প্রতিনিয়ত ব্যবহার্য সংখ্যা যেমন দশমিক সংখ্যা,পূর্ণ সংখ্যা,মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা, ধণাত্মক ও ঋণাত্মক সংখ্যা ইত্যাদি সকলই বাস্তব সংখ্যার অর্ন্তভুক্ত। এক কথায় আমরা বলকে পারি, শূন্যসহ সকল ধণাত্মক ও ঋণাত্মক সংখ্যাকে একসাথে বাস্তব সংখ্যা বলে। উদাহরণ: 0, ±1, ±2,±3,....

অবাস্তব সংখ্যা কাকে বলে?
অবাস্তব সংখ্যা: ঋণাত্মক সংখ্যার বর্গমূলকে অবাস্তব সংখ্যা বলা হয় । কেননা ঋণাত্মক ও ধণাত্মক সংখ্যার বর্গমূল রাশি সব সময় ধণাত্মক রাশি। তাই বলা যায় ঋণাত্মক সংখ্যার বর্গমূল কখন বাস্তব সংখ্যা হতে পারে না । অবাস্তব সংখ্যার একককে “ i” দ্বারা প্রকাশ করা হয় । উদাহরণ: i1

মূলদ সংখ্যা কাকে বলে?
মূলদ সংখ্যা: যে সকল সংখ্যাকে a/b (a ও b পূর্ণ  সংখ্যা এবং b ≠ 0) আকারে প্রকাশ করা যায় তাকে মূলদ সংখ্যা বলে। অর্থাৎ বলা যায় সকল ভগ্নাংশ এবং পূর্ণসংখ্যা মূলদ সংখ্যা । উদাহরণ: 2/1=2, 9/2=4.5

অমূলদ সংখ্যা কাকে বলে? 

অমূলদ সংখ্য: যে সকল সংখ্যাকে a/b (a ও b পূর্ণ  সংখ্যা এবং b ≠ 0) আকারে প্রকাশ করা যায় না, তাকে অমূলদ সংখ্যা বলে। অর্থাৎ পূর্ণবর্গ  নয় এমন স্বাভাবিক সংখ্যা  সংখ্যার বর্গ মূল একটি অমূলদ সংখ্যা। উদাহরণ: √2,  √3 ইত্যাদি।

পূর্ণ সংখ্যা কাকে বলে?

পূর্ণসংখ্যা: যে সকল সংখ্যার ভগ্নাংশ থাকে না অথবা যে সকল সংখ্যাকে প্রকাশ করার জন্য দশমিক এর প্রয়োজন হয় না তাকে পূর্ণ সংখ্যা বলে। উদাহরণ: 1,-2,10 ইত্যাদি। 

ভগ্নাংশ সংখ্যা কাকে বলে?

ভগ্নাংশ সংখ্যা : দুটি পূর্ণ সংখ্যার অনুপাত করলে যে সংখ্যা বা রাশি পাওয়া যায় তাকে ভগ্নাংশ সংখ্যা হবে। যদি p ও q দুইটি পূর্ণসংখ্যা হয় তাহলে p/q একটি ভগ্নাংশ সংখ্যা। উদাহরণ: 4/5,1/2 ইত্যাদি।

ধণাত্মক পূর্ণসংখ্যা বা স্বাভাবিক সংখ্যা কাকে বলে?

ধণাত্মক পূর্ণসংখ্যা: শূন্য অপেক্ষা বড় সকল সংখ্যাকে ধণাত্মক পূর্ণসংখ্যা বলা হয় । উদাহরণ: 1,2,4,5 ইত্যাদি।

ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা: প্রত্যেক ধণাত্মক পূর্ণ সংখ্যার বিপরীতে একটি ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা পাওয়া যায়। তাই বলা যায়, ধণাত্মক পূর্ণসংখ্যার বিপরীত মান গুলোকে ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা বলে। উদাহরণ: -1,-2,-4  ইত্যাদি।

শূন্য কাকে বলে?

শূন্য (0): যে সংখ্যা ধণাত্মক বা ঋণাত্মক না সেই সংখ্যাকে শূন্য বলা হয় । এটি একটি অংঙ্ক যা এটি কোনো সংখ্যার পিছনে বসে সংখ্যার মান বৃদ্ধি করে। 

সাধারণ ভগ্নাংশ সংখ্যা কাকে বলে?

সাধারণ ভগ্নাংশ সংখ্যা: কোনো সংখ্যার অনুপাতে বিভক্ত অবস্থায় নিদিষ্ট ভাগে ভাগ হওয়াকে হর দ্বারা এবং নিদিষ্ট অংশ হতে গৃৃহিত অংশকে লব দ্বারা চিহ্নিত করে গাণিতিক ভাবে প্রকাশ করলে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তা  সাধারণ ভগ্নাংশ সংখ্যা বলে। উদাহরণ: 3/6=1/2 ইত্যাদি। 

দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যা কাকে বলে?

দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যা: মূলদ ও অমূলদ সংখ্যাকে দশমিক (.) চিহ্নের সাহায্যে প্রকাশ করা হয় বা যে ভগ্নাংশকে দশমিকের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়  তাকে দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যা বলে। উদাহরণ: 3.50, 2.45 ইত্যাদি।

প্রকৃত ভগ্নাংশ সংখ্যা কাকে বলে?

প্রকৃত ভগ্নাংশ সংখ্যা: যে ভগ্নংশের সংখ্যা লব হরের অপেক্ষায় ছোট সেই ভগ্নাংশকে প্রকৃত ভগ্নাংশক সংখ্যা বলে। উদাহরণ: 4/5, 2/3 ইত্যাদি। 

অপ্রকৃত ভগ্নাংশ সংখ্যা কাকে বলে?

অপ্রকৃত ভগ্নাংশ সংখ্যা : যে ভগ্নংশের সংখ্যা লব হরের অপেক্ষায় বড় সেই ভগ্নাংশকে প্রকৃত ভগ্নাংশক সংখ্যা বলে। উদাহরণ: 5/4, 3/2 ইত্যাদি। 

সমীম ভগ্নাংশ সংখ্যা কাকে বলে?

সমীম ভগ্নাংশ সংখ্যা: যে সকল ভগ্নাংশের মান দশমিক এর সাহায্যে প্রকাশ করা হয় এবং দশমিকের ডান দিকের সংখ্যা সমীম সংখ্যা থাকে তাকে সমীম ভগ্নাংশ সংখ্যা বলে। উদাহরণ:  9/2=8.5 এটি একটি সমীম ভগ্নাংশ সংখ্যা ।কারণ দশমিকের মান সমীম। 

অসমীম ভগ্নাংশ সংখ্যা কাকে বলে?

অসমীম ভগ্নাংশ সংখ্যা: যে সকল ভগ্নাংশের মান দশমিক এর সাহায্যে প্রকাশ করা হয় এবং দশমিকের ডান দিকের সংখ্যা অসমীম সংখ্যা থাকে তাকে অসমীম ভগ্নাংশ সংখ্যা বলে। উদাহরণ:  20/7=2.857142857142857 এটি একটি অসমীম ভগ্নাংশ সংখ্যা ।কারণ দশমিকের মান অসমীম। 

আবৃত্ত ভগ্নাংশ সংখ্যা কাকে বলে?

আবৃত্ত ভগ্নাংশ সংখ্যা : যে সকল ভগ্নাংশের মান দশমিক এর সাহায্যে প্রকাশ করা হয় এবং দশমিকের ডান দিকের সংখ্যা বার বার পুনরাবৃত্তি হয় সেই সংখ্যাকে  আবৃত্ত ভগ্নাংশ সংখ্যা বলে। উদাহরণ:  10/3=3.333 এটি একটি আবৃত্ত  ভগ্নাংশ সংখ্যা ।কারণ দশমিকের মান  একই সংখ্যা বার বার পুনরাবৃত্তি হতেই থাকছে।

মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে?

মৌলিক সংখ্যা : যে সকল স্বাভাবিক সংখ্যার দুটি (এক এবং ঔ নিজ সংখ্যা) মাত্র উৎপাদক থাকে বা যে সংখ্যাকে অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা  ভাগ করণে ভাগফল নিঃশেষে বিভাজ্য হয় না  তাকে মৌলিক সংখ্যা বলে। উদাহরণ: 3 এটি একটি মৌলিক সংখ্যা কারণ এর উৎপাদক 1 এবং 3।আর অন্য যে কোনো সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ থাকবে।

 যৌগিক সংখ্যা কাকে বলে?

যৌগিক সংখ্যা: যে  সকল স্বাভাবিক সংখ্যার ১ এবং ঐ সংখ্যা ব্যাতীত আরো উৎপাদক থাকে তাকে যৌগিক সংখ্যা বলে। উদাহরণ: 12  এটি একটি যোগিক সংখ্যা কারণ এই উৎপাদক 1,3,4,6,12। 

উপরক্ত আমার বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ জানলাম । এই বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন মেটাবে।

বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ এর শেষ কথা 

আমরা এই পোস্টটির মাধেমে বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ জানলাম এবং উদাহরণসহ বুঝলাম । আমরা অনেকই গণিত নিয়ে পড়াশোনা করি বা অনেক ম্যাথ সমাধান করেই ক্লাস পরিবর্তন করেছি। আমাদের কাছে অনেক সংজ্ঞায় অজানা রয়েছিল। আজ তা আমরা বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ এই পোসটির মাধেমে তা জানলাম । আমাদের বিভিন্ন চাকরীর পরিক্ষায় গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করবে । ইনশাআল্লাহ্। বিভিন্ন সংখ্যার সংজ্ঞা ও উদাহরণ এই পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লাগলে ছোট বড় সবার মাঝে শেয়ার করবেন। তাহলে সবাই উপকৃত হবে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url