টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা
টমেটো একটি শীত প্রধান সবজী। এই সবজীটির যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন ই অপকারিতাও
রয়েছে। টমেটোতে রয়েছে ভরপুর পুষ্টি। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ফলেট এবং
পটাসিয়াম রয়েছে। যা আমাদের শরির ও ত্বক এর জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান যা
আমাদের শরীর এবং ত্বকের জন্য একটি কার্যকরী উপাদান।
টমেটো একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি এবং টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা ও
রয়েছে। টমেটো একটি শীতকালীন সবজি হওয়ার কারণে এটি শীতকালে বেশি দেখা যায়।
তবে প্রযুক্তির কল্যাণে আজকাল সারা বছরই এই সবজিটির পাওয়া যায়। এবং এই টমেটোর
উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক।
সূচিপত্রঃ টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা
টমেটোর উপকারিতা
একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি। টমেটো শীতকালীন সবজি হলো এখন সারা বছরেই
এটি পাওয়া যায়। কাঁচা কিংবা পাকা দুই অবস্থায় টমেটো খাওয়া যায়। খাবারের
স্বাদ বাড়াতে টমেটোর জুড়ি মেলা ভার। অনেকে আবার সালাদে ও টমেটো খেয়ে
থাকেন। টমেটো শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ায় না। এটি দিয়ে তৈরি হয় নানান ধরনের সস
বা কেচাপ।
-
টমেটো পুষ্টিতে ভরপুর। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি,
ভিটামিন কে, ফলেট এবং পটাশিয়াম। টমেটো থেকে আরো পাওয়া যায় থায়ামিন,
নায়াসিন, ভিটামিন বি৬, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, কপার। এছাড়া এই একটা টমেটোর
মধ্যে থাকে দুই গ্রামের মতো ফাইবার। অনেকটা পানীয় রয়েছে
টমেটোর মধ্যে।
-
চর্ম রোগের জন্য টমেটো অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। আমাদের ত্বকে যদি কোনো
সমস্যা হয়ে থাকে তবে প্রক্রিয়াজাত করে টমেটো ব্যবহার করা যেতে পারে।
চর্ম রোগ নিরাময়ে টমেটোর রস অত্যন্ত কার্যকরী।
-
মুখের সৌন্দর্য ধরে রাখতে এবং বয়সের ছাপ দূর করতে টমেটো বেশ কার্যকর একটি
উপাদান। এর রস মুখের ত্বক মসৃণ ও কোমল করে। বয়স বাড়তে থাকলে মানুষের
মুখে যে বয়সের ছাপ পড়ে তা টমেটোর রস দেওয়ার ফলে সে ছাপ লুকাতে সাহায্য
করে।
-
এটি খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটিবার
দুইটি টমেটো খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনে। এবং শরীরে ইতিবাচক ভূমিকা
রাখতে সাহায্য করে।
-
রক্তস্বল্পতা দূরীকরণের সাহায্য করে টমেটো। যারা রক্তসল্পতায় ভুগছেন,
তাদের জন্য টমেটো বেশি উপকারী। প্রতিদিন এক বা দুইবার টমেটো খেলে
রক্তস্বল্পতার সমস্যা অনেকটাই দূর হতে পারে।
-
সর্দি-কাশি প্রতিরোধেও টমেটো বেশ কার্যকর। সর্দি কাশি হলে একবার
দুটো টুকরো টমেটো খেলে আরাম পেতে পারেন।
টমেটো সস ও কেচাপ যেকোনো খাবারের সঙ্গে বিশেষ করে মুখরোচক ভাজাভুজি
বা নাস্তার সঙ্গে খেলে মজা লাগে। আজকাল নানান নতুন কায়দায় গরুর মাংস
,মুরগির মাংস রান্নায় টমেটো সস মেশানো হয় তাতে স্বাদে ভিন্নতা আছে এবং খেতেও
সুস্বাদু হয়। টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা জন্য এটি আমাদের সাবধানে ব্যবহার
করা উচিত।
আরো পড়ুনঃ বিজয় দিবসের গুরুত্ব - বিজয় দিবসের স্লোগান
টমেটো বেশি খেলে যেসব মারাত্মক রোগ হতে পারে
টমেটো সালাদ হিসেবে সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয়ে থাকে। টাকা লাল টমেটো দেখতে যেমন
সুন্দর খেতেও তেমনই সুস্বাদু। টমেটো কাঁচা কিংবা পাকা দুইভাবেই খাওয়া যায়।
খাবারের স্বাদ বাড়াতে টমেটোর জুড়ি মেলা ভার তবে তবে একটু বেশি খেলে শরীরে
বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পরিমিত টমেটোর না খেলে
শরীরের নানান রোগের ঝুঁকি বাড়ে। টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও সবজিতে চার রকমের ক্যারোটিন ভিটামিন এ
আছে।
এই ক্যারোটিনয়েড বা ভিটামিন এ ত্বক ও চোখে সুস্থতা এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ায়। তার জন্য অবশ্যই পরিমিত টমেটো খেতে হবে। বেশি তবে টক হওয়ার
কয়েকটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে সেই সম্পর্কে আমরা জেনে নেইঃ
- টমেটোতে রয়েছে ম্যারিকো ও সাইট্রিক অ্যাসিড আছে। যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত এসিড প্রবাহ সৃষ্টি করে। এ কারণে গ্যাস্টিকের সমস্যা বেড়ে যায়।
-
তারা পেটের পীড়ায় ভোগে তাদের অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দূরে থাকা
উচিত।
-
টমেটোতে হিস্টামিন নামক এক ধরনের উপাদান আছে। যা থেকে ত্বকে অ্যালার্জি
সৃষ্টি হয়। টমেটো অতিরিক্ত খেলে মুখ, জিব্বা ও মুখের ফোলা ভাব,
হাঁচি, গলায় জ্বালা ইত্যাদি মারাত্মক লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
-
অতিরিক্ত টমেটো খেলে কিডনিতে পাথর হতে পারে। কারণ টমেটোতে আছে ক্যালসিয়াম ও
অক্সালেট। যা সহজে শরীর থেকে বের হয়না এবং এগুলো শরীরে জমা হতে শুরু করলে
কিডনিতে পাথর জমে।
-
বেশি মাত্রায় টমেটো খেলে গেটে বাত ব্যথা দেখা দিতে পারে। কারণ এতে সোলানিন
নামক বিশেষ অ্যালকালয়েড থাকে। যৌগ কষে ক্যালসিয়াম তৈরির জন্য দায়ী।
এই যৌগের পরিমাণ বেড়ে গেলে তাপদাহ তৈরি হয়।
-
টমেটোতে সালমোনেলা নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে এবং এটি
ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী।
আরো পড়ুনঃ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কত তারিখে পালিত হয়
টমেটো থেকে তৈরি বিভিন্ন ধরনের সস
টমেটো সস এমন এক ধরনের খাবার যা যেকোনো ভাজাভুজি খাবার বা ফাস্টফুডকে আরো
বেশি লোভনীয় ও সুস্বাদু করে তোলে। আজকাল বিভিন্ন রকম মাংস রান্নায় সসের
ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাজারে আমরা যেসব সস কিনে থাকি তার বেশিরভাগই ভেজাল
যুক্ত। তাই আমরা সহজেই ঘরে তৈরি করতে পারি। টমেটো দিয়ে তৈরি ছয় ধরনের সস
সম্পর্কে আজ আমরা কথা বলবোঃ
- টমেটো সস
- হট টমেটো সস
- পিজ্জা সস
- টমেটো ও তেঁতুলের সস
- টমেটো কেচাপ
- স্পাইসি টমেটো সস
টমেটো কখন পাওয়া যায়
শীতকালের স্বাভাবিক সময়ে এসব জাতের গাছে ফল ধরে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে বীজ
বুনে অক্টোবর-নভেম্বরে এসব জাতের টমেটোর চারা রোপণ করা হয়। অধিকাংশের জাতই
শীতকালে ফলে। এসব জাতের মধ্যে থেকে মানিক, রতন, বারি টমেটো-৩, বারি
টমেটো-৬, বারি টমেটো-৭, বারি টমেটো-৯, বাহার, মহুয়া ইত্যাদি জাতকে বেছে নেওয়া
যেতে পারে।
টমেটো নামের উৎপত্তি
টমেটো শব্দটি এসেছে স্প্যানিশ শব্দ tomate থেকে, যা ঘুরেফিরে নাহুয়াটল শব্দ
tomat থেকে এসেছে, যার অর্থ ফুলে জাওয়া ফল। এছাড়াও 'পুষ্ট পানি' বা
মোটা জিনিস স্থানীয় মেক্সিকান টমালিটো হলো tomate। অ্যাজটেকরা যখন বড়
হয়, মিষ্টি এবং লাল হওয়ার জন্য ফলটি চাষ করা শুরু করে। তখন তারা নতুন
জাতিকে xitomatl নামে ডাকত। বৈজ্ঞানিক প্রজাতির নাম 'lycopersicum' গ্রিক
ভাষা থেকে উদ্ভূত যার অর্থ 'নেকড়ে জাম'।
শেষ কথাঃ টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা
টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক। আমাদের ত্বকের জন্য এবং শরীরের জন্য টমেটোর
উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আজকের আমাদের
এই প্রতিবেদন। টমেটো একটি উদ্ভিদের রসালো ফল। তাই এই টমেটোর উপকারিতা ও
অপকারিতা ও অনেক। টমেটো একটি শীতকালীন সবজি এটি বেশিরভাগ সময় শীতকালে দেখা
যায়। তাছাড়াও বর্তমান সময়ে এই সবজিটি সারা বছরই পাওয়া যায়। এবং প্রায়
সকলেই টমেটো খেতে পছন্দ করে তা হোক রান্না কিংবা কাঁচা। টমেটোতে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল। তাই টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা
ও বেশি। টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা এর জন্য আমাদের এর খাওয়া সম্পর্কে
সচেতন থাকতে হবে। কারণ যেহেতু টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে তাই
আপনাদের টমেটো খাওয়ার সময় অবশ্যই টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন
থাকতে হবে।
অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url