বাজ পাখি কি খায় - বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায়
বাজপাখি গেল মাঝারি আকৃতির এক প্রকার শিকারি পাখি। এই পাখিকে ক্ষিপ্রতার প্রতীক হিসেবে মানা হয়ে থাকে। বাজপাখি মূলত তীক্ষ্ণ দৃষ্টির জন্য বিখ্যাত। মেয়ে বাজপাখি পুরুষ বাজপাখির চেয়ে আকৃতিতে বড় হয়। বাজপাখি কে পো বাজ পাখি কি খায় - বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায় ষ মানিয়ে দিলেই এরা আপনার শিকারে আওতায় থাকবে।
বাজপাখি সাধারণত নিজের থেকে ছোট জীবজন্তু যেমন মাছ, কাঠবিড়ালী, খরগোশ, ইঁদুর
এমনকি তারা গরুর গোস্ত খেয়ে জীবন ধারণ করেন। এছাড়াও নিজের থেকে ছোট আকৃতির
পাখি যেমন পায়রা, ঘুঘু ইত্যাদি পাখি ও এদের খাদ্য তালিকায় থাকে। বাজ পাখির
সবচেয়ে বড় আবাসস্থল হলো মধ্য আমেরিকা। এছাড়াও এশিয়াতেও এদের দেখা মেলে।
বাংলাদেশ পাখিটি এখন কি কাল তাদের দেখা মেলে।
সূচিপত্রঃ বাজ পাখি কি খায় - বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায়
- বাজপাখি
- বাজ পাখির দাম কত
- পরিবেশের জন্য উপকারী পাখি সমূহ
- বাংলাদেশের কোন পাখি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়
- প্রতীক ও সংকেত সমূহ
- শেষ কথাঃ বাজ পাখি কি খায় - বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায়
বাজপাখি
ধারালো ঠোঁট আর তীক্ষ্ণ নখের অধিকারী বাজপাখি। ঠোট অন্য পাখিদের
মতো খোলা প্রান্তর থেকে শস্যদানা খুঁটে খুঁটে খাওয়ার জন্য নয়। ছোট ছোট
প্রাণীর শরীর থেকে মাংসপিণ্ড ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবার জন্য বিশেষভাবে তৈরি এদের ঠোঁট।
কাঙ্খিত স্বীকার এর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পায়ের নখ দিয়ে ছুরির মতো ঠোঁট দিয়ে
শিকারের শরীরের মাংস টেনে টেনে খেতে এরা খুবই পটু। এর ইংরেজি নাম
Red-headed Falcon এবং বৈজ্ঞানিক নাম Falco chicquera.
শিকারি পাখি গবেষক মোহাম্মদ ফয়সাল এর বিষয়ে বলেছেন, ইংরেজিতে ফ্যালকন নামের এই
পাখিটি কে বাংলায় বাঁচবা শাহিদ নামে বেশি পরিচিত। বাংলাদেশের বিভিন্ন
প্রান্তে এটি বাজপাখি হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও তুরমতি বাজ নামেও
পরিচিত। তবে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব এই পাখিটিকে লালঘাড় শাহিন নামে নামকরণ
করেছর। এরা দুর্লভ প্রজাতির পাখি। সারাদেশেই কমসংখ্যক এদের খুঁজে পাওয়া
যায়।
পাখিদের ওপর গবেষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০০৬ সাল থেকে আমি এই পাখিটির ওপর
গবেষণা করছি। এদের প্রজনন-বৃত্তান্ত, রাতের আচার-আচরন, খাদ্য সংগ্রহের কৌশল
সহ তাদের বিভিন্ন সমস্যা প্রভৃতি আমার গবেষণার বিষয়। ইতোপূর্বে এ পাখিটিকে
নিয়ে অল্পস্বল্প গবেষণা করেছিলেন কিছু পাখি বিশেষজ্ঞ। তবে ভারতীয়
উপমহাদেশে ব্যাপকভাবে পাখি নিয়ে গবেষণা করেছেন ভারতের পাখি বিশেষজ্ঞ
রিসাত নওরোজি। তার গবেষণায় এ পাখির অনেক তথ্য অজানা রয়ে গেছে।
এছাড়া আফ্রিকায় এই পাখিটির একটি উপপ্রজাতি নিয়ে একজন পাখি বিশেষজ্ঞ
গবেষণা করেছিলেন। তার গবেষণার থেকেও তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই
তাদের তুলনায় এ পাখি সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য বের করতে পেরেছি যা আমরা আগে কেউ
পারেনি। এখনো আমার গবেষণা চলছে।
এ পাখি বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, ফ্যালকন আমাদের দেশে আবাসিক নয়। তবে এরা বনের পাখি ও
নয়। এই পাখির দৈর্ঘ্য ৩৪ সেন্টিমিটার। খুলনা বিভাগ ছাড়া আমাদের দেশে
এসব বিভাগে এই পাখির বিচরণ রেকর্ড রয়েছে। বেশিরভাগ শিকারি পাখিদের একটা
উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এই পাখিটা একটুও বড় হয় পুরুষ পাখির
থেকে। ডিসেম্বর থেকে জুন এদের প্রজনন মৌসুম।
আরো পড়ুনঃ টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা
পাখিগুলো নিজেরা বাসা তৈরী করে না। কাক জাতীয় পাখিদের বাসা বা অন্যান্য পাখিদের
পরিত্যক্ত বাসা দখল করে এখানে ওরা ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ফোটায়। এ পাখির বিচরণ
সম্পর্কে মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ফ্যালকন মূল বিচরণ এশিয়া অঞ্চলে। আমাদের দেশে
প্রায় ১০ টি প্রজাতির ফ্যালকন বার্ড পাখির বিচরণ রয়েছে। কিছু পরিযায় এবং
কিছু আমাদের দেশে স্থায়ী আবাসিক পাখি। এরা লোকালয়, পতিত জমি, গ্রামের ধান
ক্ষেত সহ খোলা প্রান্তরে ঘুরে বেড়ায়। শিকারি পাখি বড় বড় গাছ, বড় বড়
স্থাপনা বা বৈদ্যুতিক খুঁটির ওপর বসে চারি দিকে খেয়াল করে।
গাছের ও ডালে কিংবা বিদ্যুতের তারে বসে শিকার খুঁজতে থাকে ফ্যালকন বা বাজপাখি।
সাধারণত আকাশের মধ্যে শিকার ধরে থাকে এরা। এরা মূলত চুরুই এর মত ছোট পাখি ধরে ধরে
খেয়ে থাকে। এছাড়াও বাদুর, চামচিকা, ইঁদুর প্রভৃতি প্রাণী এদের খাদ্য
তালিকায় রয়েছে। এদের কর্মচঞ্চলতা খুব বেশি থাকে ভোর এবং সন্ধ্যার ঠিক পূর্বে
থাকে বলে জানান এই গবেষক।
বাজ পাখির দাম কত
সৌদি আরবে এক নিলাম রেকর্ডে মূল্য বিক্রি হয়েছে একটি বাজপাখি। বিরল প্রজাতির এই
বাজ পাখির দাম উঠেছে ৯৩,৩৪৭ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৯
লাখ টাকা। যা যেকোনো সৌদি নিলামের কোন পাখির জন্য ওঠা সর্বোচ্চ মূল্য হিসেবে
রেকর্ড মূল্য। কানাডীয় প্রতিষ্ঠান জিম ওয়েলস ফ্যালকন প্রজনন কৃত এই
পাখি নিলাম শুরু হয় প্রায়ই ৫৬ টাক টাকা থেকে। ৭৯ লাখ টাকায় শেষ
পর্যন্ত বিক্রি হয় বিরল প্রজাতির বাজপাখিটি।
পরিবেশের জন্য উপকারী পাখি সমূহ
পৃথিবীর সকল জীব একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। খাদ্য শৃংখল এর মাধ্যমে একে
অন্যের ওপর নির্ভরশীলতার অপর নাম বাস্তুতন্ত্র। মানুষ যেমন আলো বাতাস পানি
ছাড়া বাঁচে না তেমন পশুপাখি তথা জীবজগত আলো-বাতাস পানি ছাড়া বাঁচতে পারে না।
তরুরাজি বৃক্ষলতার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এই পারস্পরিক নির্ভরশীলতা পৃথিবী
কে করেছে সুন্দর শোভন।
আরো পড়ুনঃ একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা ২০২২-২০২৩
পাখি আমাদের নানাভাবে পরিবেশের জন্য উপকারী। পাখি গাছের পাতা খেয়ে থাকে এবং
পোকামাকড় খেয়ে থাকে। আবার পোকামাকড় খেয়ে গাছের পাতা কেউ রক্ষা করে
পাখি। গাছের পাতায় গাছ খাদ্য তৈরি করে থাকে। এভাবে পাখি বন ও পরিবেশ কে
রক্ষা করার কাজে নিয়োজিত।
বাংলাদেশে কোন পাখি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়
বাংলাদেশের পাখির তালিকায় মোট ৭৪৪ পিপাখি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ সমস্ত পাখির
মধ্যে গত দুই শতকে বাংলাদেশের ছিল কিন্তু এখন তা নেই। এবং বর্তমানে আছে এমন পাখি
ও অন্তর্ভুক। এমন পাখির সংখ্যা মোট ৬৫০ টি। এ ৬৫০ পাখির মধ্যে
তিরিশটি বাংলাদেশের বর্তমানে বিলুপ্ত অতীতে যেগুলো বাংলাদেশের ছিল। তিরিশটি পাখির
মধ্যে ২৯ টি অন্য দেশে পাওয়া গেল একটি গোলাপি শির হাঁস সম্ভবত সারা পৃথিবীতে
বিলুপ্ত।
অবশিষ্ট ৬২০ টি প্রজাতির পাখি সম্প্রতিকালে এদেশে দেখা গেছে এবং এরা
বাংলাদেশ থাকে বা আসে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই ৬২০ টি প্রজাতির মধ্যে
১৪৩ টি প্রজাতির পাখি বাংলাদেশ অনিয়মিত আখ্যায়িত হয়েছে। কারণ কালেভদ্রে
এতে দেখা যায় পাখি ৪৭৭ প্রজাতির পাখি বাংলাদেশের নিয়মিত দেখা
যায়। এই ৪৭৭ প্রজাতির মধ্যে ৩০১ টি বাংলাদেশের আবাসিক পাখি যেগুলো
কিভাবে এদেশে বসবাস করে। বাকি ১৭৬ টি বাংলাদেশের পরিযায়ী পাখি যেগুলো
ক্ষণকালের জন্য নিয়মিত ভাবে এদেশে বসবাস করে থাকে।
প্রতীক ও সংকেত সমূহ
প্রাচুর্য নির্দেশন করার জন্য নিম্নলিখিত চারটি শব্দ ব্যবহার করা হয়ে
থাকেঃ
-
অনিয়মিতঃ যে পাখি সারাদেশে ১০ বছরের ২ বার দেখা যায়নি।
-
বিরলঃ সঠিক মৌসুমে, সঠিক আবাসে বারবার না গেলে যে পাখি দেখা সম্ভব
হয় না।
-
দুর্লভঃ সঠিক মৌসুমে, সুপারহিট আবাসে দক্ষ পর্যবেক্ষকের এক
সফরে জেপাখি একবার দেখা সম্ভব।
-
সুলভঃ সঠিক মৌসুমে, সঠিক আবাসে জেপাখি প্রতিদিনই দেখা যায়।
গতিবিধি নির্দেশ করার জন্য নিম্নলিখিত তিনটি শব্দ ব্যবহার করা হয়ে থাকেঃ
-
আবাসিকঃ সারাবছর এ দেশে থাকে। যেসব আবাসিক পাখি বর্তমানে বাংলাদেশের
বিলুপ্ত তাদেরকে প্রাক্তন আবাসিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
-
পরিযায়ীঃ বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ে খন্ড কালের জন্য নিয়মিত অবস্থান
করেন।
- পান্থ পরিযায়ীঃ একাদশ থেকে আরেক আবাসে গমনের সময় সমসাময়িক ভাবে অবস্থান করে।
শেষ কথাঃ বাজ পাখি কি খায় - বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায়
বাজ পাখি কি খায় ও বাজ পাখি কোথজায় যায় সেই সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারনা
খুব কম । তাই আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা জানবো বাজ পাখি কি খায় , বাজ
পাখি কোথায় পাওয়া যায়। বাজপাখি এবং বিভিন্ন ধরনের পাখি সম্পর্কে আমাদের
অনেকেরই অনেক ধরনের কৌতুহল রয়েছে। তাই আমাদের জানা উচিত বাজ পাখি কি খায় তা
আমরা অবশ্যই জানব। বাজ পাখি কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে ও
জানবো। বাজপাখি পৃথিবীর বেশিসংখ্যক উন্নত ও সভ্য দেশের জাতীয় পাখি হিসেবে
খ্যাত। সেসকল দেশগুলো যেমনঃ যুক্তরাষ্ট্র,
জার্মানি,আয়ারল্যানড, স্কটল্যান্ড, হাঙ্গেরি সহ আরো অনেক
দেশ। বাজ পাখি কি খায় তা ও জানতে পারব।
বাজ পাখি কি খায় তাই নিয়ে আমাদের এই আয়োজন। তা ছারাও বাজ পাখি কোথায়
পাওয়া যায় সাই সম্পর্কে ও আমরা আলোচনা করবো এই পোস্টের মাধ্যমে। বাজ
পাখি কি খায় ,বাজ পাখি কি খায় জানি।
অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url