প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন - বেকিং সোডা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার

 দাঁত আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কথায় আছে, দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝতে হয়। দাঁতের যত্ন নেওয়া আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। আমাদের সবসময় প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন নেওয়া উচিত। কারণ প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন নিলে আমাদের দাঁতের জন্য তা উপকারী। 

আমাদের সৌন্দর্যবর্ধন এবং বৃদ্ধি দুটোই করেন। ত্বকের দাঁতের যত্ন নেওয়া ও একান্তই প্রয়োজন। আমাদের দাঁতের যত্নে প্রকৃতিক ভাবে সেসব উপায় বা উপাদান ব্যবহার করা উচিত যা আমাদের দাঁতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী। তাই আমাদের প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন সম্পর্কে জানতে হবে। যা আমরা পোষ্টের মাধ্যমে খুব ভালভাবেই বুঝতে পারব। 

সূচিপত্রঃ প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন - বেকিং সোডা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার 

প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন

দাঁতের যত্নে সেইসব উপাদান অধিক কার্যকর যার মধ্যে রয়েছে প্রকৃতিক উপাদান। প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন নেওয়ার জন্য প্রকৃতিক কিছু জনপ্রিয় উপাদান যা আমাদের সকলেরই জানা সেগুলো মধ্যে লবঙ্গ, পুদিনা, আদা, পিপুল, গোলমরিচ, দারুচিনি, নিম, লবণ ইত্যাদি। বলা হয় দাঁত ও মাড়ির যত্ন সবচেয়ে ভালো উপাদান হচ্ছে লবঙ্গ। এতে রয়েছে ইউজিনল নামক উপাদান, যা মুখের দুর্গন্ধ দূর করে, নিঃশ্বাসে সতেজতা আনে।

দাঁতে প্লাক দূর করার উপায়

মাড়ির ভেতরে খাদ্যকণা জমে থেকে যে আবরণ তৈরি করে তার নাম ডেন্টাল প্লাক বা মাড়ির রোগ। ডেন্টাল প্লাক ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে পাথরের মত হয়ে যায়। তখন নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন মাড়ি ফুলে যাওয়া, মাড়ির প্রদাহ, মারি লাল হয়ে যাওয়া, সামান্য আঘাতে রক্ত পড়া ইত্যাদি। ডেন্টাল প্লাক বা মাড়ির রোগ কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম ভাগটিকে বলা হয় জিনজিভাইটিজ। এ অবস্থায় মাড়িতে প্রদাহ হয় এবং সামান্য আঘাতেই মাড়ি থেকে রক্ত পড়ে, কখনো কখনো দাঁত ব্রাশ এর সময় বা শক্ত আপেল বা পেয়ারা জাতীয় ফল খেলেও মাড়ি থেকে রক্ত বের হয়। দ্বিতীয়বার টি হল পেরিওডন্টাইটিস। এ অবস্থায় মাড়ি থেকে রক্ত সঙ্গে পুঁজ বের হয়। দাত নড়ে যায় শেষ পর্যন্ত আপনি আপনার দাঁত হারাতেও পারেন।

আরো পড়ুনঃ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কত তারিখে পালিত হয়

প্রতিরোধ ও প্রতিকারঃ বেশিরভাগ দন্তচিকিৎসক মনে করেন, ভালো মানের টুথপেস্ট দিয়ে নিয়মিত দুইবার দাঁত পরিষ্কার করে এ রোগ থেকে নিরাপদে থাকা সম্ভব। দাঁতের ফাঁকে যেন খাদ্যকণা জমে থাকতে না পারে। অবশ্যই রাতে খাবার পরে এবং সকালে নাস্তা খাওয়ার পরে ভালোভাবে ব্রাশ করতে হবে। এক্ষেত্রে ক্যালসিয়াম ও ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ টুথপেস্ট ব্যবহার করাই উত্তম। বৃষ্টি সচেতনতার জন্য ডেন্টাল ফ্লস বা মাউথওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও বছরে অন্তত দুইবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

টুথপেস্টে ক্লোরাইডের অতিরিক্ত উপস্থিতি ও দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। তাই বাজার থেকে টুথপেস্ট কেনার সময় ব্যালেন্স ক্লোরাইড আছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন বয়সের মানুষের দাঁতের সুরক্ষায় টুথপেস্ট ফ্লোরাইডের মাত্রা আলাদা। ০ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য প্রয়োজন ৫০০ থেকে ৬০০ পিপিএম ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ টুথপেস্ট এবং বড়দের জন্য প্রয়োজন ১০০০ পিপিএম ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ টুথপেস্ট। এছাড়াও টুথপেস্ট টি ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ কিনা এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে।

দাঁতের হলদেটে ভাব দূর করার উপায়

 আমাদের ব্যক্তিত্বের জন্য তক, চুলের পাশাপাশি দাঁতের যত্ন জরুরী। কেউ হাসলে মুক্ত ঝরে আবার কারো মুখ দেখতে হাসতে হয় দাঁত হলুদ হওয়ার কারণে। দাঁত হলুদ হলে আমরা কথা বলতে বিব্রত বোধ করি। এর জন্য নানা কারণে ও রয়েছে, কিন্তু ঘরে এমন কিছু জিনিস আছে যেগুলো ব্যবহার করে আমরা দাঁতের রং ভালো করে আবার সুন্দর করে তুলতে পারি।

আরো পড়ুনঃ বিশ্ব শিশু দিবস কবে-বিশ্ব শিশু দিবস ২০২২

দাঁতের সমস্যা নিয়ে আমরা অনেক কিছুই করি। আবার লোভনীয় খাবার হাতছাড়া করতে পারিনা। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, খাদ্য তালিকার মিনারেল, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি- এর অভাবেও নানা সমস্যা হতে পারে। সুস্থ থাকতে দাঁতের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরী।

দাঁত নষ্ট কেন হয়

  1. ভালো করে ব্রাশ না করার ফলে এ সমস্যা হতে পারে, অনেকে আবার রোজ ব্রাশ ও করেন না।
  2. কফি, রেড ওয়াইন, চা বেশি পান করলে দাঁত হলুদ হয়ে যেতে পারে।
  3. কিছু বিশেষ রকমের ওষুধ খেলেও দাঁতের ছোপ বা হলদেটে ভাব আসতে পারে।
  4. অনেক সময় আঘাতজনিত কারণে দাঁত ভেঙে যায়। এই ভাঙ্গা  জায়গার জমতে পারে খাবার। তখন দাঁত হলদেটে দেখায়।
  5. কারো কারো আবার মুখ ভীষণ আদ্র হয়ে যায় মুখ শুকিয়ে থাকে। তাদের এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  6. খৈনি, গুটকা, পান, জর্দা থেকেও দাঁত হলদে হতে পারে। এছাড়াও সিগারেট, বিড়ি খেলে ও দাঁতের দাগ হতে পারে।

 বিভিন্ন উপায়ে প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন

ঘরে বসে বিভিন্নভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন নেওয়া যায়। জেনে নেই হাতের কাছে থাকা কিছু জিনিস দিয়ে প্রাকৃতিক ভাবে দাঁতের যত্ন নেওয়ার উপায়।

বেকিং সোডা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার

  1. বেকিং সোডা এবং লেবুর রস দাঁত সাদা করার জন্য খুব উপকারী।
  2. এটি ব্যবহার করে আমরা আমাদের হলুদ দাঁত উজ্জ্বল করতে পারি সহজেই।
  3. একটি প্লেটে ২ চা চামচ বেকিং সোডা এবং সামান্য লেবুর রস রাখুন।
  4. এই মিশ্রণটি আপনার দাঁতে ভালো করে ঘষুন এবং তারপরে একটি টুথব্রাশ দিয়ে আপনার দাঁত পরিস্কার করুন।
  5. দাঁত ব্রাশ করার আগে কয়েকদিন এই প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করলে দাঁত হলদে ভাব থেকে মুক্তি পাবে।

নারকেলের তেল দিয়ে দাঁত পরিষ্কার

  1. মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য নারকেল তেল মেখে রাখুন। আপনি খুব জরুরী ফল পাবেন।
  2. এর জন্য মুখে পরিমাণমতো নারকেল তেল নিয়ে মুখের মধ্যে রাখুন।
  3. 15 মিনিট হয়ে গেলে তেলটি মুখ থেকে ফেলে দিন। তারপর মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে নিন।

আপেলের বীজ ও ভিনেগার দিয়ে দাঁত পরিষ্কার

  1. আপেলের বীজে  নানান স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এই ফলের বীজ আপনার দাঁত সাদা করতে সক্ষম।
  2. সামান্য কয়েকটি আপনার সঙ্গে মিশিয়ে নিন ভিনেগার।
  3. এরপর সামান্য জলে মিশিয়ে দাতে মেজে নিন
  4. ১০ সেকেন্ড ব্রাশ করুন। এতেই দাঁতের হলুদ ভাব কেটে যাবে।

সরিষার তেল দিয়ে দাঁত পরিষ্কার

  1. সরিষার তেল অন্যুন দাঁতের হলদে ভাব দূর করতে খুবই কার্যকরী।
  2. এর জন্য ৩ চা চামচ সরিষার তেল ১ চা-চামচ লবণ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
  3. এই পেস্টটি আপনার দাঁতের আলতোভাবে মাসাজ করুন।
  4. এতে করে দাঁতের হলদে ভাব দূর হবে।

শেষ কথাঃ প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন - বেকিং সোডা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার 

দাঁতের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরী। আর তা যদি হয় প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন তাহলে তো আরো ভালো। প্রকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন নিলে আমাদের দাঁত আরো সুস্থ এবং উজ্জ্বল থাকে। তাছাড়াও প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের যত্ন নিলে আমাদের দাঁত বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক কেমিক্যাল যুক্ত প্রডাক্ট থেকে বেঁচে যায়। এবং সুস্থ সবল থাকে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url