বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে - কততম বিজয় দিবস ২০২২

 

প্রত্যেকটি দেশেরই তার নিজস্ব ইতিহাস রয়েছে। বাংলাদেশের ও নিজস্ব অনেক ইতিহাস রয়েছে। তার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ও গর্বিত ইতিহাস হলো 'মুক্তিযুদ্ধ'। মুক্তিযুদ্ধ শব্দটি প্রত্যেক বাঙালির কাছেই একটি গর্বের বিষয়। মুক্তিযুদ্ধ কথাটি শুনলেই আমাদের মনে করিয়ে দেয় প্রায় ৩০ লাখ শহীদদের কথা।

মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পাকিস্তানের বর্বর শাসকগোষ্ঠী দের কাছ থেকে পেয়েছিলাম মুক্তি, স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর প্রায় নয় মাস যুদ্ধের পর এই মহান মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়। এবং আমরা পাই স্বাধীন  একটি দেশ। যে দেশের নাগরিক বাঙালি। সে দেশের নাগরিক সকলেই জানে বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে কেননা এটি আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয় আর বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে সে সম্পর্কে প্রত্যেক বাংলাদেশীরই জানা উচিত। 

সূচিপত্রঃ বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে - কততম বিজয় দিবস ২০২২

বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে

১৬ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস। প্রতিবছর ১৬ ই ডিসেম্বর সম্মানের সাথে এবং আনন্দের সাথে এ দিনটি উদযাপন করা হয়। এ দিনটি যেন বাঙালির একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর এই দিনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পন করেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর এই দিনটি ছিল রোজ বৃহস্পতিবার। এই দিনে পাকিস্তানি সেনা প্রধান নিয়াজী প্রায় ৯১,৬৩৪ হাজার সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এর তিনটি বাঙালি জাতির কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণ

১৯৭১ সালে প্রায় ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানি বাহিনী এই দিনে যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল।সেদিন ঢাকার কেন্দ্রস্থলে 'রেসকোর্স ময়দানে' পাকিস্তানের পক্ষে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন 'জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী'। তিনি যৌথ বাহিনীর প্রধান 'জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা' কাছে আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে মুক্তি বাহিনীরউপ সর্বাধিনায়ক ও ডেপুটি চিফ-অফ-স্টাফ গ্রুপ ক্যাপ্টেন আব্দুল করিম খন্দকার উপস্থিত ছিলেন। তবে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানী উপস্থিত ছিলেন না। 

বাংলাদেশের স্বীকৃতি

পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে ৯ মাসব্যাপী স্বাধীনতা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে এবং বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত প্রায় সকল দেশ স্বাধীনতার মাসে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে কমনওয়েলথ অফ নেশনস এর সদস্যপদ গ্রহণ করেন। এই কারণে ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি পাকিস্তান কমনওয়েলথের সদস্য পদ ত্যাগ করে। পরে অবশ্য, ১৯৭৫ সালে পাকিস্তান পুনরায় সদস্য পদ গ্রহণ করে। পাকিস্তান ১৯৭৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।

বিজয় দিবস উদযাপন

১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের বিজয় দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, চলচ্চিত্র, কবিতা, নিবন্ধ, গণমাধ্যম ইত্যাদি বিভিন্ন ভাবে এই বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা হয়। এই দিন উপলক্ষে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ এর আয়োজন করে থাকে।
এছাড়াও দেশের প্রতিটি উপজেলায় বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ আলোচনা অনুষ্ঠান মতবিনিময় সভা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দেশের প্রধান সড়কগুলো জাতীয় পতাকা দিয়ে সাজানো হয়। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করা হয়।

কততম বিজয় দিবস ২০২২

বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে সে সম্পর্কে আমাদের সকলেরই ধারণা রয়েছে। ছোট থেকে বড় প্রায় সকলেই এই সম্পর্কে জানেন। কেননা এই দিবসটি মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে আমাদের ঐতিহ্য এবং গৌরবের ইতিহাস। তাইতো ছোট থেকে আমাদের শেখানো হয় বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে। এবছর ১৬ ই ডিসেম্বর ২০২২ - ৫২ তম বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপিত হবে। 

৫০ তম বিজয় দিবস

২০২০ সালে পালিত হয়ে গেছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। 9 মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে জন্ম হয়েছিল স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের। আর ২০২০ সালে পালিত হয়েছে সেই বিজয় এর ৫০ তম বিজয় বার্ষিকী উদযাপন করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উদযাপিত সুবর্ণজয়ন্তী বিজয় দিবস সারাদেশে নানা রকম অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে।

সেদিন সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাধারণ মানুষ। এর আগে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ১৫ ই ডিসেম্বর ঢাকায় এসে পৌঁছান।
এরপর মধ্যরাত থেকে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় আতশবাজি ফোটানো এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় শহরের গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহে আলোকসজ্জা করা হয় । বিজয় সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন এর অন্যতম অনুষ্ঠান বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ হয় শেরেবাংলা নগরে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
কুচকাওয়াজে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী, পুলিশ- রেব-বিজিবি, আনসা্র, ভিডিপি সহ বিভিন্ন বাহিনী অংশ নেয়। আকাশ থেকে পতাকা উড়িয়ে অবতরণ করেন ছাত্রী সেনাদল। সেনাবাহিনী সঙ্গীত কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া, মেক্সিকো এবং ভুটানের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজন করা হয়েছিল দুই দিনব্যাপী "মহাবিজয়ে মহানায়ক" শীর্ষক অনুষ্ঠান যার শুরু হয় ১৬ ডিসেম্বরেএর দিন।

বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালের ২২ শে জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে এই দিনটিকে বাংলাদেশের জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন এবং এ দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।

শেষ কথাঃ বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে - কততম বিজয় দিবস ২০২২

বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে সম্পর্কে আমরা সকলেই কম বেশি জানি কারণ বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে সে সম্পর্কে আমাদের ছোটবেলা থেকেই ধারণা দেওয়া হয়ে থাকে। এই দিনটিআমাদের সকলের জন্যই গর্বের একটি দিন আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি।

আশা করছি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা স্পষ্ট ধারণা নিতে পারবেন বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে  ও কততম বিজয় দিবস ২০২২ সে সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন। বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে সে সম্পর্কে এই পোষ্টের মধ্যে যথাসাধ্য দেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এই পোস্টটি পড়লেই আপনারা জানতে পারবেন এবং বুঝতে পারবেন বাংলাদেশ বিজয় দিবস কবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url