ডায়াবেটিস এর ইতিহাস - ডায়াবেটিস এর ইংরেজী কি

  

প্রত্যেকটি মানুষই চায় নিজেকে সুস্থ এবং স্বাভাবিক। রোগ কারোরই কাম্য নয়। কিন্তু রোগ কি বলে কয়ে আসে। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের শরীরে নানা ধরনের রোগ-জীবাণু বসবাস শুরু করে। যা আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমরা বুঝতে পারি। আজ আমরা ডায়াবেটিস এর ইতিহাস ও ডায়াবেটিস এর ইংরেজী কি তা জানব। 

প্রত্যেকটি রোগেরই কোন না কোন ইতিহাস রয়েছে। কোন রোগে হঠাৎ করে হতে পারে না। প্রত্যেকটি রোগের পেছনে রয়েছে কোনো না কোনো ইতিহাস আজ আমরা ডায়াবেটিস এর ইতিহাস সম্পর্কে জানব। ডায়াবেটিসের ইতিহাস সম্পর্কে জড়ানো অত্যন্ত জরুরী। যাতে এর মাধমে আমরা উপকৃত হতে পারি। ডায়াবেটিস এর ইতিহাস সম্পর্কে জানাও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ যা একটি তথ্য বহুল পাঠ্য।  পরিবারের কোন সদস্য যদি ডায়াবেটিস থেকে থাকে তবে অবশ্যই ডায়াবেটিস এর ইতিহাস সম্পর্কে জেনে রাখবেন। 

সূচিপত্রঃ ডায়াবেটিস এর ইতিহাস - ডায়াবেটিস এর ইংরেজী কি

ডায়াবেটিস মেলাইটাস কী ?

ডায়াবেটিস বাংলায় বহুমূত্র রোগ । ডায়াবেটিসে পুরো নাম ডায়াবেটিস মেলাইটাস সংক্ষেপে ডায়াবেটিস নামে পরিচিত। ডায়াবেটিস হল একটি দীর্ঘমেয়াদি ও গুরুতর যার অবস্থান রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা দীর্ঘ সময় ধরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে, কারণ হচ্ছে শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে বাক্য ইনসুলিন উৎপাদন করতে না পাড়া অথবা উৎপাদিত ইনসুলিন কার্যকর ভাবে ব্যবহার করতে না পারা। উপসর্গ হলো ঘনঘন প্রসাব (পলিইউরিয়া), অত্যাধিক তৃষ্ণা , এবং অত্যাধিক ক্ষুধা লাগা।

এই রোগের চিকিৎসা না করলে অনেক জটিলতা সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিক জটিলতার মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস কিটোএসিডোসিস, হাইপারআসমেলার, হাইপারগ্লাইসিমিক স্টেট অথবা মৃত্যু। গুরুতর দীর্ঘমেয়াদী যদি আপনার মধ্যে রয়েছে হৃদযন্ত্র ও রক্তবাহী রোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি, ডায়াবেটিস জনিত পায়ের ক্ষত , ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি , ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি , ও চিন্তাশক্তি লোপ।

বহুমূত্র রোগ হয় অগ্নাশয় ঠিকমত ইনসুলিন উৎপাদন করতে না পারার কারণে অথবা উৎপাদিত ইনসুলিনের প্রকৃত দেহের পোস্টগুলো যৌথভাবে সাড়া প্রদান না করা। বহুমূত্র রোগের তিনটি প্রধান কারণ রয়েছে। যা ডায়াবেটিস এর ইতিহাস এর মধ্যে পরে।

টাইপ-১ ডায়াবেটিসঃ

টাইপ ১ ডায়াবেটিস হয় অগ্নাশয় বিটা কোষ বিনষ্ট হওয়ার ফলে যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন উৎপাদিত না হওয়া। ইনসুলিন নির্ভরশীল ডায়াবেটিস মেলিটাস অথবা জুভেনাইল ডায়াবেটিস নামে পরিচিত ছিল। বিটা কোষ নষ্ট হওয়ার কারণে অটোইমিউন বিক্রিয়া হয়। অটোইমিউনএর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। ধ্বংসের হার বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এটি যে কোন ব্যক্তির যেকোনো বয়সে হতে পারে। তবে শিশু ও তরুণদের মধ্যে এর হার সবচেয়ে বেশি।১০ থেকে১৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ইহার শিখরে পৌঁছেছে।

টাইপ-২ ডায়াবেটিসঃ

টাইপ টু ডায়াবেটিস শুরু হয় ইনসুলিন রোধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে , যেখানে রোগ ইনসুলিনের প্রতি যথাযথ সাড়া প্রদানের ব্যর্থ হয়। রোগের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ইনসুলিনের ঘাটতিও তৈরি হয়। ই এটি পূর্বে ইনসুলিন নির্ভরশীল ডায়াবেটিস মেলিটাস নামে পরিচিত ছিল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো হলো শরীরে অত্যধিক ওজন ও কায়িক শ্রমের অভাব।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসঃ

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলো তৃতীয় প্রধান ধরন। এটি হয় যখন একজন গর্ভবতী মহিলার ইতিপূর্বে কোন ডায়াবেটিস ইতিহাস ছিল না। কিন্তু গর্ভধারণ করার পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। 
টাইপ ১: ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ইনসুলিনের ব্যবহার অবশ্যক। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ এর মাধ্যম হিসেবে রয়েছে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস , নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম , ওজন নিয়ন্ত্রণে তামাকের ব্যবহার এড়িয়ে চলা।

টাইপ ২: ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ইনসুলিন সহ ইনসুলিন ছাড়া মুখের সেবনীয় ওষুধ ব্যবহৃত হয়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ , পা ও চোখের যত্ন নেওয়া এই রোগে খুবই জরুরী। কিন্তু কিছু মুখে সেবনীয় ঔষধ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। যা হাইপোগ্লাইসেমিয়া নামে পরিচিত। যে সকল ব্যক্তি টাইপ.২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত তাদের ওজন কমানোর শল্যচিকিৎসা খুব উপকারে আসে। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সাধারণত বাচ্চা প্রসবের পর ভালো হয়ে যায়।

২০১৯ এর হিসাব অনুযায়ী , সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৬ কোটি ৩০ লাখ (৮.৮% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ), যার মধ্যে ৯০% টাইপ ২ ডায়াবেটিস.২০২১ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৩ কোটি ৭০ লাখ । নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে এই রোগের হারে এক। ভবিষ্যতের এই রোগের প্রাদুর্ভাব আরো বৃদ্ধি পাবে। ডায়াবেটিস মানুষের অকালমৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়.২০১৯ সালে ডায়াবেটিস রোগীর মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৪২ লাখ মানুষের ,২০২১ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৬৭ লাখে। এটি বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সপ্তম প্রধান কারণ। ২০১৭ সালে বৈশ্বিক ডায়াবেটিস সম্পর্কিত স্বাস্থ্য খরচ ছিল প্রায় ৭২৭ বিলিয়ন মিলিয়ন ডলার , যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৭ সালে ডায়াবেটিসের খরচ ছিল প্রায় ৩২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসা খরচ অন্যদের তুলনায় প্রায় ২.৩ গুন বেশি।

প্রতিবছর ১৪ ই নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বিশ্বজুড়ে দ্রুততার সাথে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ১৯৯১ সালে ইনসুলিন সহ আবিষ্কারক ফ্রেডরিক বেন্টিং-এর জন্মদিনে দিনটিকে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ৬১/২২৫ নম্বর প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে এটিকের জাতিসংঘের অফিসিয়াল দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং ২০০৭ সাল থেকে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস এর সর্বজনীন প্রতীক হিসেবে মাঝখানে ফাক বিশিষ্ট বৃত্ত ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

বৃত্তের মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডায়াবেটিস বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের ঐক্য বোঝায়।আকাশ ও জাতিসংঘের পতাকার রঙের সাথে মিল রেখে বৃত্তের রং নীল রাখা হয়েছে, এর তাৎপর্য হলো নীল আকাশের নিচে সমগ্র মানব জাতির বসবাস ও জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বের সমগ্র দেশ ঐক্যবদ্ধ থেকে একসঙ্গে এর বিরুদ্ধে লড়াই করা। আর এই সকল জিনিস আমরা জানতে পারি ডায়াবেটিস এর ইতিহাস এর মাধ্যামে।

উপসর্গ সমূহ

বহুমূত্র রোগের প্রধান লক্ষণগুলো হলোঃ
  1. অবাঞ্ছিত ওজন কমে যাওয়া।
  2. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
  3. অত্যাধিক তৃষ্ণা পাওয়া।
  4. ক্ষুধা বৃদ্ধি।
টাইপ ১ ডায়াবেটিসে রোগের লক্ষণ খুব দ্রুত প্রকাশ পায়, তবে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে অনেকদিন ধরে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। এমনকি কখনো কখনো কোন লক্ষন না ও প্রকাশ পেতে পারে। উপযুক্ত উপসর্গগুলো বহুমূত্র রোগের হাইপারগ্লাইসেমিয়ার ও শর্করামেহ এর সাথে সম্পর্কিত। গ্লুকোজ একটি ক্ষুদ্র , অভিস্রবণিক ভাবে সক্রিয় পদার্থ। যখন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে যায় তখন রিনাল টিউবিউল বা বৃক্কিও নালিকা সর্বোচ্চ যতটুকুই গ্লুকোজ পূর্ণঃশোষণ করতে পারে বৃক্কের গ্লোমেরুলাসে তার চেয়ে বেশি গ্লুকোজ পরিশ্রুত হয়। এর মাধ্যমে প্রসাবের মধ্যে দিয়ে গ্লুকোজ বের হয়ে যায়। এর ফলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়। রক্তে গ্লুকোজের অধিক্যর ফলে রক্তের গ্লুকোজ কোষের ভেতর থেকে পানি বের করে নিয়ে আসে ফলে অন্তঃকোষীয় পানি শূন্যতা তৈরি হয়।

ওজন হ্রাসের দিক দিয়ে টাইপ ২ ও টাইপ ১ ডায়াবেটিস এর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। অনিয়ন্ত্রিত টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ওজন কমা খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার। অন্যদিকে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীর  স্থূলতা সমস্যা রয়েছে। এরকম বিষয় সত্বেও, অশনাক্তকৃত টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীর দ্রুত ওজন হ্রাস পেতে থাকে। কারণ ইনসুলেটর ব্যবহৃত হতে না পারার দেহে সঞ্চিত শক্তির উৎস নিঃসৃত হতে থাকে।

আরো কিছু উপসর্গ রয়েছে যেগুলো ডায়াবেটিস শুরুর নির্দেশ করে কিন্তু এই রোগের সাথে নির্দিষ্ট না। যেমন চোখে ঝাপসা দেখা, মাথাব্যথা , ক্ষত নিরাময় সময় লাগা, ক্লান্তি , চুলকানি ইত্যাদি।

জরুরি অবস্থা

ডায়াবেটিস রোগী, ডায়াবেটিস কিটোএসিডোসিস নামক একটি বিপাকীয় জটিলতা আক্রান্ত হয়। লক্ষণ গুলো হলোঃ
  • বমি ভাব
  • বমি ও পেট ব্যথা
  • নিঃশ্বাসে অ্যাসিটোনের গন্ধ
গভীর নিঃশ্বাস যা কুসমল নিঃশ্বাস নামে পরিচিত। এবং গুরুতর অবস্থায় চেতনার মাত্রাও কমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রয়োজন। এটি বিরল কিন্তু এর থেকে আরও বিপদজনক অবস্থা হলো হাইপারঅসমেলার হাইপারগ্লাইসেমিক স্ট্রেট বা অতিআসাবিক
রক্তাতিশকরা অবস্থা (HHS), মূলত পানিশূন্যতার কারণে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের হয়ে থাকে।

জটিলতাসমূহ

সকল ধরনের বহুমূত্র রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা হতে পারে। জটিলতাগুলো সাধারণত অনেক বৎসর 10 থেকে 20 বছর পরে হয়। তবে যাদের রোগ শনাক্তের বিলম্ব হয় তারা শুরুতেই জটিলতার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসতে পারে।

প্রধান দীর্ঘমেয়াদী জটিলতাগুলো রক্ত বাহির ক্ষতির সাথে সম্পর্কিত। ডায়াবেটিসের ফলে রক্ত সংবহনতন্ত্রের রোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ হয়ে যায়। ৭৫% ডায়াবেটিস রোগী করোনারি ধমনীর রোগে মৃত্যুবরণ করেন। অন্যান্য বৃহৎ রক্তনালী সম্বন্ধীয় রোগের মধ্যে রয়েছে স্ট্রোক, ও প্রান্তীয় ধমনীর রোগ। এই জটিলতাসমূহ তীব্র কোভিট-১৯ এর ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়।

ক্ষুদ্র রক্তনালী সমূহের ক্ষতির কারণে ডায়াবেটিসের যে প্রার্থমিক জটিলতাসমূহ দেখা দেয় তা হলো চোখ, বৃক্ক, স্নায়ুর ক্ষতি। চোখের রেটিনার রক্তবাহ ক্ষতিগ্রস্থ হলে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি নামক একটি রোগ হয়, যার ফলে দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমনকি অন্ধত্ব হতে পারে। বহুমূত্র রোগের ফলে গ্লুকোমা ছানি ও চোখের অন্যান্য রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বহুমূত্র রোগের আক্রান্ত রোগীদের বছরে একবার চোখের ডাক্তার দেখানো উচিত। বৃক্কের ক্ষতি হলে ডায়াবেটিস নেফ্রোপ্যাথি নামক রোগ হয়, এটি ডায়াবেটিসের সবচেয়ে বেশি হওয়া জটিলতা। উপসর্গগুলো হলো অববেদন বা অসাড়তা, আবেদন বা ঝিনঝিনি ব্যথা ও ব্যাথার অনুভূতিই পরিবর্তন যার ফলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। পায়ে ক্ষত বা ঘা হতে পারে যার চিকিৎসা অনেক কঠিন এবং কখনো কখনো পা কেটে ফেলার প্রয়োজন হতে পারে।

বংশগতি প্রবণতা

জিনগত বিষয় দ্বারা টাইপ ১ ডায়াবেটিস ব্যাপকভাবে প্রভাবিত, কিন্তু এটি বংশগতির সরল মেরুদন্ডে সূত্র অনুসরণ করে না। অভিন্ন জমজ এর ক্ষেত্রে এই রোগে একজন আক্রান্ত হলে অপরজনের হওয়ার সম্ভাবনা ৩০%-৫০%, অন্যদিকে ভিন্ন জমজের ক্ষেত্রে এই হার ৬%-১০%। যুক্তরাষ্ট্রের, কোন ব্যক্তির প্রথম স্তরের আত্মীয়-স্বজনের টাইপ ১ ডায়াবেটিস থাকলে তার নিজের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ১:২০, সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি ১:৩০০। মা যদি টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে সন্তানের টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। পিতা-মাতা আক্রান্ত হলে এর ঝুঁকি বেড়ে যায় ১০%। যা আমরা ডায়াবেটিসের ইতিহাস এর মাধ্যমে জানতে পারি।

প্রতিরোধ

টাইপ ১ ডায়াবেটিসের প্রতিরোধের কোন উপায় জানা নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় খাদ্যের অপ্রতুলতা মাধ্যমে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা নাটকীয় ভাবে কমে গিয়েছিল। খুব সম্প্রতি সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্লুকোজ সহনশীলতার সমস্যায় ভুক্তে থাকা ব্যক্তিদের ওপর পরিচালিত ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে স্বাভাবিক দৈহিক ওজন, শারীরিক সক্রিয়তা অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখার মাধ্যমে প্রায়শই প্রতিরোধ করা সম্ভব আক্রান্ত হওয়ার সময়কাল পিছনেও সম্ভব। বেশি পরিমাণ শারীরিক সক্রিয়তা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ২৮% কমিয়ে দেয়। 

খাদ্যভ্যাস এর কিছু কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে বহুমূত্র রোগ প্রতিরোধ করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে পূর্ণাঙ্গ খাদ্যভ্যাস আঁশযুক্ত এবং ভালো চর্বিযুক্ত ও বহু অসম্পৃক্ত চর্বি বা বাদাম, সবজি ও মাছ পাওয়া। চিনিযুক্ত পানীয়, লোহিত মাংস ও অন্যান্য সম্পৃক্ত চর্বি যুক্ত খাদ্য খাওয়া পরিমাণ কমিয়ে দাও। বহুমূত্র রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। ধূমপান ও বহুমূত্র রোগের জটিলতা ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ধূমপান পরিত্যাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হতে পারে। কিছু ঔষধি যেমন, মেটফর্মিন, ও ওরলিস্ট্যাট ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে পারে তবে এগুলো জীবনশৈলী পরিবর্তনের চেয়ে কম কার্যকর এবং এই পদ্ধতি কেবল তাদের জন্য সংরক্ষিত রাখা উচিত যারা তাদের জীবন শৈলী পরিবর্তন করতে সক্ষম নন অথবা জীবনশৈলী পরিবর্তন করলেও গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না।

স্থূলতা কমাতে ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি করলে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক হয়ে যায়, ওজন কমার আগে গ্লুকোজ কমতে শুরু করে। যাতে শল্যচিকিৎসায় সরাসরি বিপাকীয় প্রভাব আছে বলে নির্দেশ করে। এই প্রভাবটি সম্ভবত অন্ত্রীয় হরমোনের মাধ্যমিক হয়। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী ওজন কমার ফলে হয়।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস  ও প্রধান প্রধান সংপরিবর্তনযোগ্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো পৃথিবীর সব অঞ্চলে প্রায় একই। প্রতিনিয়ত এটা স্পষ্ট হচ্ছে যে, বহুমূত্র রোগের অন্তর্নিহিত নিরুপ গুলো সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি প্রতিফলন নগরায়ন জনগণের বয়স বৃদ্ধি ও সার্বিক অর্থনীতি পরিবেশ।

ডায়াবেটিসএর ইংরেজী কি?

ডায়াবেটিস এর ইংরেজি ডায়াবেটিস মেলাইটাস (Diabetes Mellitus) যা সংক্ষেপে ডায়াবেটিস  নামে পরিচিত এবং বাংলায় একে বহুমূত্র রোগ বলে।

চিকিৎসা

বহুমূত্র রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থার উদ্দেশ্য হচ্ছে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে না কমিয়ে বরং স্বাভাবিক এর কাছাকাছি রাখার চেষ্টা করা। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন , কায়িক শ্রম , ওজন কমানো , ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। রোগ সম্পর্কে জানাও চিকিৎসা প্রক্রিয়া সক্রিয় অংশগ্রহণ খুব জরুরী। কারণ যে সকল ব্যক্তির রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেরেছে তাদের ক্ষেত্রে জটিলতার পরিমাণ ও তীব্রতার মাত্রা উভয়ই কম।

আমেরিকান কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস-এর মতে চিকিৎসার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে  HbA 1c ৭-৮% অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা যেগুলো বহুমূত্র রোগের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সেগুলোর দিকে নজর দেওয়া উচিত। এগুলো হলো ধূমপান , উচ্চ রক্তচাপ , বিপাকীয় সিনড্রোম , অতিস্থূলতা , নিয়মিত কায়িক শ্রমের অভাব। যাদের পায়ে ঘা হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদের জন্য বিশেষ জুতা ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। যদি এর কার্যকারিতা প্রমাণ দ্ব্যর্থবোধক। বহুমূত্র রোগের আক্রান্ত সাধারণ জনগণের জন্য চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ম নীতি প্রায় একই রকম। তবে কিছু বিশেষ জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা প্রয়োজন। যারা তীব্র মানসিক রোগে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কতটা কার্যকর তা নিয়ে গবেষণা লব্ধ তথ্যর ঘাটতি রয়েছে।

প্রারম্ভিক ভাবে টাইপ ১ ও টাইপ ২ উভয় ধরনের বহুমূত্র রোগের চিকিৎসার লক্ষ্য হচ্ছে অভিস্রবণিক উপসর্গগুলো উপশম করা। এবং অতঃপর দীর্ঘমেয়াদী মাইক্রোভাস্কুলার ও জটিলতাসমূহ ঝুঁকি কমানো।

নতুন শনাক্ত ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে প্রায় ৫০% রোগীর খাদ্যাভ্যাস ও জীবনশৈলীর পরিবর্তনের মাধ্যমে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, ২০-৩০% ক্ষেত্রে মুখে ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হবে এবং বাকি ২০-৩০% রোগী ইনসুলিন প্রয়োজন। রোগের কারণ যেটাই হোক না কেন কোন রোগের চিকিৎসা কিভাবে শুরু হবে তা নির্ভর করে কতটুকু বিটা- কোষ সচল রয়েছে তার উপরে। রক্তরসে ইনসুলিন এর ঘনত্ব পরিমাণ করে সহজে এটি নিরূপণ করা যায় না কারণ ব্যক্তিভেদে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা ভিন্ন হওয়ায় একজনের শরীরের যে ঘনমাত্রা পর্যাপ্ত অন্যের শরীরে জন্য অপর্যাপ্ত হতে পারে। আদর্শ চিকিৎসা ব্যবস্থার ফলে একজন বহুমূত্র রোগী উপসর্গ থেকে মুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা প্রতিরোধ করতে পারে। যা আমরা ডায়াবেটিস এর ইতিহাস এর মাধ্যমে জানতে পারি।

শেষকথাঃডায়াবেটিস এর ইতিহাস - ডায়াবেটিস এর ইংরেজী কি

ডায়াবেটিস আমাদের জীবনে একটি বড় ধরণের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা শুধু ব্যক্তি জীবনে নয় রাষ্ট্রীয়ভাবেও ছড়িয়ে পড়েছে। ডায়াবেটিসের সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের একত্রিত হয়ে এর প্রতিকার করতে হবে এবং সকল নিয়ম মানতে হবে। এবং ডায়াবেটিস এর ইতিহাস সম্পর্কে জেনে এর প্রথম ও বর্তমান যুগে ডায়াবেটিসের ভয়াবহ ধ্বংসলীলা সম্পর্কে জানতে পারি। ডায়াবেটিস এর ইতিহাস জানাও আমাদের জন্য জরুরী ।

ডায়াবেটিস এর ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের সকলেরই কিছু জানা উচিত। ডায়াবেটিস এর ইতিহাস যার মাধ্যমে আমরা ডায়াবেটিস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি তাহলে বলা যায়। ডায়াবেটিস এর ইতিহাস জানা আমাদের জন্য কিছুটা হলেও জরুরী।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url